হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনভর ঘুরেও ধানকাটার জন্য শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যায় না। যাও বা দুই-একজন পাওয়া যায়; তাদের দাবি মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকরা। আর ধানক্ষেতে পানি জমে থাকলে তো কথাই নেই। জোঁকের ভয়ে শ্রমিকরা ধান কাটতে যেতেই চায় না।
অনেক কষ্টে রাজি করানো গেলেও এক মণ ধানের অর্ধেকই দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেলো শস্যভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সদর, মাগুড়া বিনোদ, সগুনা ও তালম ইউনিয়নে। এসব অঞ্চলে শুকনো জমিগুলোর ধান ইতিমধ্যে কাটা শেষ হলেও জলাবদ্ধ জমির ধান কাটতে হিমশিম হাচ্ছে কৃষকরা।
কথা হয়, তালম ইউনিয়নের কৃষক তায়েব মিয়া সঙ্গে। ৪৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন তিনি। যার সবটুকুই বর্তমানে জলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ধান পেকে ঝরে পড়ার উপক্রম হলেও শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারছেন না ধান। অনেক চেষ্টার পর প্রতিমণ ধানের অর্ধেক দেওয়ার শর্তে শ্রমিক পেয়েছেন। বাধ্য হয়ে তাদের শর্ত অনুযায়ী ধান কাটার চুক্তি দিয়েছেন তিনি।
তাড়াশ সদর ইউনিয়নের কৃষক বলেন, হাঁটু পানির নিচে তার জমির ধান। বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা মজুরির চুক্তিতে ধান কাটাতে হচ্ছে।
জমিতে পানি থাকায় বিঘা প্রতি ৩৪শ’ টাকা মজুরিতে শ্রমিক নিয়ে ধান কাটাতে শুরু করেন।
আনসোব আলী, আওয়াল, জহির, কানাইলাল, শংকরসহ ধানকাটার শ্রমিকদের দাবি, সারা বছর এ অঞ্চলে শ্রমিকদের মূল্য কম থাকে। ধান কাটার মৌসুম এলে কিছুটা বেশি মজুরি তারা পান। এতে তাদের প্রচুর শ্রমও দিতে হয়।
এদিকে, ধানের মূল্য কম হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছেন এসব অঞ্চলের কৃষকরা। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও প্রতিমণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা।
কৃষকরা বলেন, প্রতিবিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ ধরে তারা বোরো চাষ করেছে। যার মধ্যে শ্রমিকের মজুরিও ধরা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় শ্রমিকদের বাড়তি মজুরি ধরে উৎপাদন খরচে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার টাকা। আর প্রতিবিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ মণ করে ধান উৎপাদন হয়।