ঢাকা ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি বিজ্ঞান কলেজে সুচিন্তার জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনার আয়োজন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ মে ২০১৮
  • ৩১৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারের আয়োজন করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক নজরুল কবীর।

উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জঙ্গি এবং জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তাদের ধারণা প্রথমে জানতে চান। পরে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সাংবাদিক নজরুল কবীর বলেন, ‘নাইন ইলেভেন’ এবং ‘লাদেন’ এই নাম বা শব্দের সঙ্গে পরিচিত হবার পরই আসলে আমরা জঙ্গি ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আজকে জঙ্গি শব্দটি একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই জঙ্গিবাদের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত।

suchinta-seminar-body1

তিনি বলেন, বুঝতে হবে জঙ্গিবাদের বিস্তারে কারা লাভবান হচ্ছে। যেসব দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি অস্ত্র ব্যবসা, তারাই দুনিয়াব্যাপী জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ তরুণ। এই তরুণদের যদি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে আগামীতে নেপথ্যের মূল বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীব্যাপী তরুণদের সংখ্যা বেশি। শুধু তাই নয়, নারী তরুণদের সংখ্যা আরও বেশি। তাই নারীদেরও টার্গেট করে জঙ্গিবাদে যুক্ত করা হচ্ছে। কারণ মানুষ যত বেশি, ব্যবসাও তত বেশি। ধর্মের ভুল ও মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে যদি ‘মটিভেটেড’ করা না যায় তাহলে ব্যবসা প্রসার কী করে ঘটবে?

আন্তর্জাতিকভাবে, যারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে জঙ্গিবাদ উস্কে দিতে। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই।

suchinta-seminar-body1

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ও এই কার্যক্রমের সমন্বয়ক কানতারা খান বলেন, জঙ্গিবাদকে তোমাদেরই রুখতে হবে। কাউকে হত্যা করে কেউ কখনও বেহেশতে যেতে পারে না। মানুষকে হত্যা করা মহাপাপ। বেহেশত পুণ্যের জায়গা। হত্যাকারীদের মত পাপীদের সেখানে জায়গা নেই। আজকে যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলতা করছে এরা কেউই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না।

কারণ ইসলামে নরহত্যা, গুপ্তহত্যা, অপহরণ প্রভৃতি চরমপন্থা অবলম্বনকে নিষিদ্ধ করে হত্যাকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এ কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য এরা ধর্মের নাম ব্যবহার করছে ও অপব্যবহার করছে।

তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজানে যে নিরীহ, নিরাপরাধ মানুষদের হত্যা করা হয়েছে তাদের অনেকেই মেট্রোরেলের কাজে দেশে এসেছিলেন। কি ছিল তাদের অপরাধ? তারাতো ভিনদেশি। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। যারা তাদেরকে হত্যা করেছে, তারা যে বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না, দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়, অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায় তা স্পষ্ট বোঝা যায়।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ‘আজ সারাবেলার সম্পাদক জব্বার হোসেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি বিজ্ঞান কলেজে সুচিন্তার জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনার আয়োজন

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারের আয়োজন করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক নজরুল কবীর।

উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জঙ্গি এবং জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তাদের ধারণা প্রথমে জানতে চান। পরে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সাংবাদিক নজরুল কবীর বলেন, ‘নাইন ইলেভেন’ এবং ‘লাদেন’ এই নাম বা শব্দের সঙ্গে পরিচিত হবার পরই আসলে আমরা জঙ্গি ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আজকে জঙ্গি শব্দটি একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই জঙ্গিবাদের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত।

suchinta-seminar-body1

তিনি বলেন, বুঝতে হবে জঙ্গিবাদের বিস্তারে কারা লাভবান হচ্ছে। যেসব দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি অস্ত্র ব্যবসা, তারাই দুনিয়াব্যাপী জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ তরুণ। এই তরুণদের যদি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে আগামীতে নেপথ্যের মূল বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীব্যাপী তরুণদের সংখ্যা বেশি। শুধু তাই নয়, নারী তরুণদের সংখ্যা আরও বেশি। তাই নারীদেরও টার্গেট করে জঙ্গিবাদে যুক্ত করা হচ্ছে। কারণ মানুষ যত বেশি, ব্যবসাও তত বেশি। ধর্মের ভুল ও মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে যদি ‘মটিভেটেড’ করা না যায় তাহলে ব্যবসা প্রসার কী করে ঘটবে?

আন্তর্জাতিকভাবে, যারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে জঙ্গিবাদ উস্কে দিতে। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই।

suchinta-seminar-body1

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ও এই কার্যক্রমের সমন্বয়ক কানতারা খান বলেন, জঙ্গিবাদকে তোমাদেরই রুখতে হবে। কাউকে হত্যা করে কেউ কখনও বেহেশতে যেতে পারে না। মানুষকে হত্যা করা মহাপাপ। বেহেশত পুণ্যের জায়গা। হত্যাকারীদের মত পাপীদের সেখানে জায়গা নেই। আজকে যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলতা করছে এরা কেউই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না।

কারণ ইসলামে নরহত্যা, গুপ্তহত্যা, অপহরণ প্রভৃতি চরমপন্থা অবলম্বনকে নিষিদ্ধ করে হত্যাকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এ কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য এরা ধর্মের নাম ব্যবহার করছে ও অপব্যবহার করছে।

তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজানে যে নিরীহ, নিরাপরাধ মানুষদের হত্যা করা হয়েছে তাদের অনেকেই মেট্রোরেলের কাজে দেশে এসেছিলেন। কি ছিল তাদের অপরাধ? তারাতো ভিনদেশি। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। যারা তাদেরকে হত্যা করেছে, তারা যে বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না, দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়, অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায় তা স্পষ্ট বোঝা যায়।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ‘আজ সারাবেলার সম্পাদক জব্বার হোসেন।