ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তার আঙুল দিয়ে ৩৮টি বড় পোকা বের হলো

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ মে ২০১৮
  • ৩৫১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালো নেই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবাইশা গ্রামের ১২ বছরের আলোচিত কিশোরী মুক্তামনি। ব্যথার যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কান্না করছে সে। এলাকায় কেউ কান্না করলে সবাই বুঝতে পারে হয়তো হাতের যন্ত্রণা বেড়েছে মুক্তার। আগের চেয়ে তার হাতটি এখন আরও ফুলে গেছে।

১০ দিন আগে হাতের নিচের অংশ নিয়ে জমাট বাঁধা রক্ত বের হওয়া শুরু করে মুক্তার। সেই অংশটি ড্রেসিং করার সময় আঙুল দিয়ে ৩৮টি বড় পোকা বের হয়ে আসে তার। এসব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তার পরিবারটি। চলতি বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর আর তাকে নিয়ে আসা হয়নি ঢাকায়। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন ও ডাক্তার শারমিন সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুক্তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

মুক্তার হাতের অবস্থা খারাপ দেখে ১৫ দিন আগে ডা. সামন্ত লাল সেনের ফোনে কল করেন ইব্রাহিম। এ সময় তিনি মুক্তার দুটি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে ডাক্তার শারমিন সুমির ইমোতে দুটি ছবি পাঠান ইব্রাহিম হোসেন। ছবি দেখে হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানান ডাক্তাররা। তবে পুনরায় ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলেননি তারা।

মঙ্গলবার জাগো নিউজের এই প্রতিবেদককে এভাবেই বলছিলেন দেশের আলোচিত বিরল রোগী মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে যে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছে সেটি খোলা যায়। রিলিজ দেয়ার সময় আমাকে বলে দেয়া হয়েছিল মাঝে মধ্যে যেন সেটি খুলে পরিষ্কার করে দেই। যখনই খুলে দেই কিছুক্ষণ পর দেখি হাতটি ফুলে গিয়ে মোটা হয়ে যায়। ওটা না খুলে দিলে হাতটি পচে যাবে।

তিনি আরও বলেন, দুই দফায় অপারেশনে হাতটি থেকে যা কিছু অপসারণ করা হয়েছে তা ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। এখন আরও গন্ধ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত রক্ত পড়ছে। পোকা বের হওয়ার পর এলাকার ছেলে-মেয়েরা তার কাছে আর ভয়ে যেতে চায় না।

jagonews24

ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সম্ভবত মুক্তার এ হাত আর ভালো হবে না। সাংবাদিকরা বিষয়টা প্রচার করার পর ডাক্তাররা অনেক গুরুত্ব দিয়েছে মুক্তাকে। তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন মুক্তার জন্য। তাদের যে আন্তরিকতার কমতি ছিল না, তা আমি নিজে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীও মুক্তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছে। মুক্তা ভালো হলে নিয়ে যেতাম প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে। কিন্তু সে তো আর ভালো হবে না, সেটা তার হাত দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যান্ডেজ খুলে দেখলাম তার পুরো হাতটি পচে গেছে। গন্ধ বের হচ্ছে। বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। কান্না করতে করতে মুক্তার বাবা বলেন, আমরা তার (মুক্তার) আশা ছেড়ে দিয়েছি ভাই।

এর আগে বিকেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মুক্তার। সে জানায়, অ্যাঙ্কেল হাতটা খুব ব্যথা করে। গন্ধ করে। থাকতে পারি না। হাতটা বুঝি আর ঠিক হবে না অ্যাঙ্কেল। দোয়া করবেন আমার জন্য বলেই ফোনটা তার বাবাকে দিয়ে দেয় মুক্তা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তার আঙুল দিয়ে ৩৮টি বড় পোকা বের হলো

আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালো নেই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবাইশা গ্রামের ১২ বছরের আলোচিত কিশোরী মুক্তামনি। ব্যথার যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কান্না করছে সে। এলাকায় কেউ কান্না করলে সবাই বুঝতে পারে হয়তো হাতের যন্ত্রণা বেড়েছে মুক্তার। আগের চেয়ে তার হাতটি এখন আরও ফুলে গেছে।

১০ দিন আগে হাতের নিচের অংশ নিয়ে জমাট বাঁধা রক্ত বের হওয়া শুরু করে মুক্তার। সেই অংশটি ড্রেসিং করার সময় আঙুল দিয়ে ৩৮টি বড় পোকা বের হয়ে আসে তার। এসব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তার পরিবারটি। চলতি বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর আর তাকে নিয়ে আসা হয়নি ঢাকায়। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন ও ডাক্তার শারমিন সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুক্তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

মুক্তার হাতের অবস্থা খারাপ দেখে ১৫ দিন আগে ডা. সামন্ত লাল সেনের ফোনে কল করেন ইব্রাহিম। এ সময় তিনি মুক্তার দুটি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে ডাক্তার শারমিন সুমির ইমোতে দুটি ছবি পাঠান ইব্রাহিম হোসেন। ছবি দেখে হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানান ডাক্তাররা। তবে পুনরায় ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলেননি তারা।

মঙ্গলবার জাগো নিউজের এই প্রতিবেদককে এভাবেই বলছিলেন দেশের আলোচিত বিরল রোগী মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে যে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছে সেটি খোলা যায়। রিলিজ দেয়ার সময় আমাকে বলে দেয়া হয়েছিল মাঝে মধ্যে যেন সেটি খুলে পরিষ্কার করে দেই। যখনই খুলে দেই কিছুক্ষণ পর দেখি হাতটি ফুলে গিয়ে মোটা হয়ে যায়। ওটা না খুলে দিলে হাতটি পচে যাবে।

তিনি আরও বলেন, দুই দফায় অপারেশনে হাতটি থেকে যা কিছু অপসারণ করা হয়েছে তা ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। এখন আরও গন্ধ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত রক্ত পড়ছে। পোকা বের হওয়ার পর এলাকার ছেলে-মেয়েরা তার কাছে আর ভয়ে যেতে চায় না।

jagonews24

ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সম্ভবত মুক্তার এ হাত আর ভালো হবে না। সাংবাদিকরা বিষয়টা প্রচার করার পর ডাক্তাররা অনেক গুরুত্ব দিয়েছে মুক্তাকে। তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন মুক্তার জন্য। তাদের যে আন্তরিকতার কমতি ছিল না, তা আমি নিজে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীও মুক্তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছে। মুক্তা ভালো হলে নিয়ে যেতাম প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে। কিন্তু সে তো আর ভালো হবে না, সেটা তার হাত দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যান্ডেজ খুলে দেখলাম তার পুরো হাতটি পচে গেছে। গন্ধ বের হচ্ছে। বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। কান্না করতে করতে মুক্তার বাবা বলেন, আমরা তার (মুক্তার) আশা ছেড়ে দিয়েছি ভাই।

এর আগে বিকেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মুক্তার। সে জানায়, অ্যাঙ্কেল হাতটা খুব ব্যথা করে। গন্ধ করে। থাকতে পারি না। হাতটা বুঝি আর ঠিক হবে না অ্যাঙ্কেল। দোয়া করবেন আমার জন্য বলেই ফোনটা তার বাবাকে দিয়ে দেয় মুক্তা।