ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট : লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮
  • ৩০০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে খুলনা সিটিতে ভোট হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থাকলেও মূলত লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র ও প্রবীণ নেতা তালুকদার আব্দুল খালেক। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দুজনই স্থানীয় রাজনীতিতে জনপ্রিয় নেতা।

ব্যক্তিগত ইমেজ ও যোগ্যতায় কেউ কারো চেয়ে কম নয়। তবে, এবারের নির্বাচনটা উভয় দলের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্মানের। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও পুরো দেশের চোখ এখন খুলনার দিকেই। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ উভয় দলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বিএনপি বরাবরই দাবি করে আসছে, স্থানীয় প্রশাসন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি করছে।

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশই বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী এনে খুলনায় অস্থিতিশীল করার অভিযোগ করা হয়েছে। দুই দলের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে খুলনার এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। এই মুহূর্তে দেশের মানুষেরও চোখ খুলনার দিকে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মুখে আজকের খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা কেএম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মেয়র পদে ৫ প্রার্থী : খুলনা সিটি নির্বাচন এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে এবার ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের সবাই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এর বাইরে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। এছাড়া ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোটের হিসাব-নিকাশ : ২০১৩ সালের সর্বশেষ খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুজ্জামানের কাছে ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। এবার বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন করে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মনোনীত করেছে। প্রার্থী হিসেবে জনপ্রিয়তায় তালুকদার আব্দুল খালেক ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু দুজনই যোগ্য ও জনপ্রিয়। দলীয় ভোটও প্রায় কাছাকাছি। তবে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য প্রচারণার প্রধান ইস্যু ছিল একটি করে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনি প্রচারণায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতি, বিএনপির ‘সন্ত্রাস’সহ বিভিন্ন নেতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘দুঃশাসন’, খুন-গুম, নেতাকর্মী ও জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছেন ভোটারদের কাছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী প্রায় সমান জনপ্রিয় হলেও জোটগতভাবে এগিয়ে আছেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী। খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট রয়েছে লক্ষাধিক করে। এর বাইরে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জামায়াতের ভোট।

দলটির নিবন্ধন না থাকলেও ২০ দলের শরিক হিসেবে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সমর্থন দিয়েছে। জামায়াতের খুলনা মহানগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহ আলম দাবি করেন, সিটিতে তাদের ৭০ থেকে ৭৫ হাজার ভোটার রয়েছে। এই ভোট জোটের প্রার্থী মঞ্জুর বাক্সেই পড়বে। তবে, স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এতো ভোট না থাকলেও ৫০ হাজারের নিচে নেই। এই ভোট বিএনপির প্রার্থীর পক্ষেই পড়বে। রাজনৈতিকভাবে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সরকারের শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টি। কিন্তু, মেয়র পদে দলটির প্রার্থী শফিকুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম ও বিহারি সম্প্রদায়েরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটও রয়েছে খুলনায়।

এসব ভোটের সিংহভাগই ধানের শীষের বাক্সে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে জোটগতভাবে বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে, রাজনৈতিক দলের বাইরে খুলনা সিটিতে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে। এ সংখ্যাও ৫০ হাজারের কম নয়। এই ভোটের বেশিরভাগই খালেকের বাক্সেই পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এর বাইরে পাটকলের শ্রমিক ও আঞ্চলিক ভোটও রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। অন্য জেলা থেকে যারা খুলনায় স্থায়ী বসবাস করেন তাদের মধ্যে বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, নোয়াখালী উল্লেখযোগ্য।

আঞ্চলিক ভোটারদের বড় অংশই নৌকা মার্কাতেই সিল মারবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, খুলনা সিটিতে মোট ভোটারের মধ্যে প্রায় ৫৩ হাজার নতুন ভোটার এবং প্রায় ১ লাখ বস্তিবাসীর ভোট রয়েছে। জয়-পরাজয়ে এই দুই শ্রেণির ভোট বড় নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে। নতুন ভোটার ও বস্তিবাসীর ভোট যে বেশি টানতে পারবেন সেদিকেই বিজয়ের পাল্লা ভারি হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ : তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে খুলনার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা-হামলার অভিযোগ করে আসছিলেন। সেখানকার কয়েকজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারও দাবি করেছিলেন। সর্বশেষ গত রোববারও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাসহ কমিশনারদের সাথে বৈঠক করে অভিযোগ করেছেন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করছে। পরোয়ানা না থাকলেও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এতে এজেন্টরা ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। খুলনা সিটি কর্পোরেশনে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে পুলিশ সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। ভোটের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে গতকাল পৃথক পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ২০ দলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন সরকার কেসিসিতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করছে।

পুলিশের নেতৃত্বে রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকে খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বহিরাগতদের এনে শহরের হোটেল, রেস্ট হাউজ ও আবাসিক কোয়াটারসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাগ ভাগ করে রেখেছে। এমনকী পুলিশের নামেও বিভিন্ন হোটেল বুকিং দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন এসব বহিরাগত বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঢুকে নিজেরা নিজেরা সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। এরপর ভয়ে ভোটাররা কেন্দ্র ত্যাগ করলে তারা ব্যালট কেটে বাক্সে ঢোকাবে। এভাবে নানা ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চালিয়ে সরকার জনতার বিজয় ছিনিয়ে নিতে চায়। এ অপতৎপরতা রুখে দিতে তিনি জনগণকে সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

এসময় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে শহরে বিপুল অঙ্কের কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, জনতা চায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সে পরিবেশই সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভোট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ জনতার রায়ে বিশ্বাস করে। এ নির্বাচনে জনতার রায়ের প্রতিফলন ঘটবে। সাবেক এ মেয়র বলেন, মঞ্জু ভোট বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করতে চান। জনতা এ ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। আজকের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, বিএনপি বিভিন্ন জায়গা থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার জড়ো করে ভোটের দিন নাশকতার পরিকল্পনা করছে।

২৮৯-র মধ্যে ২৩৪ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ : খুলনা সিটি কর্পোরেশনে (কেসিসি) ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ৪ হাজার ৯৭২ জন। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। এর মধ্যে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এ দুটি কেন্দ্রের ১০টি বুথের দুই হাজার ৯৭৮ ভোটার ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কেসিসি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী জানিয়েছেন, এ সিটির ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

বাকি ৫৫টিকে তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ২৪ জন পুলিশ ও আনসার। সাধারণ কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে থাকবে ২২ জন করে। এর বাইরে পুলিশের ১১টি স্ট্রাইকিং দল (প্রতিটিতে ১০ জন করে), ৭০টি ভ্রাম্যমাণ দল (প্রতিটি ৭ জন করে), ১৬ প্লাটুন বিজিবি, র?্যাবের ৩২টি ভ্রাম্যমাণ দল, ৩১ জন নির্বাহী হাকিম এবং ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন।

সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে তিনি আশাবাদী। এর বাইরে সেখানে বিজিবিও মোতায়েন রয়েছে। সূত্র মতে, জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে খুলনা সিটিতে জয় আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ নিয়ে যাতে কোনোভাবেই বিতর্ক তৈরি না হয়, সেটি খেয়াল রেখেই নানা কৌশলে এগিয়েছে দলটি। অন্যদিকে বিএনপির জন্যও খুলনার নির্বাচনে জেতাটা জরুরি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। নানাভাবে নেতাকর্মীদের হয়রানি থাকলেও নির্বাচনি মাঠ ছাড়তে চায় না দলটি। শেষ মুহূর্তে বিজয়ের হাসি কে হাসেন এই অপেক্ষায় দেশবাসী। তবে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে খুলনা সিটিতে সুষ্ঠু, অবাধ ভোটগ্রহণে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে এটিও দেখার বিষয়। সবমিলে আজ দেশবাসীর চোখ খুলনার দিকেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট : লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষে

আপডেট টাইম : ১০:৫২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে খুলনা সিটিতে ভোট হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থাকলেও মূলত লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র ও প্রবীণ নেতা তালুকদার আব্দুল খালেক। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দুজনই স্থানীয় রাজনীতিতে জনপ্রিয় নেতা।

ব্যক্তিগত ইমেজ ও যোগ্যতায় কেউ কারো চেয়ে কম নয়। তবে, এবারের নির্বাচনটা উভয় দলের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্মানের। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও পুরো দেশের চোখ এখন খুলনার দিকেই। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ উভয় দলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বিএনপি বরাবরই দাবি করে আসছে, স্থানীয় প্রশাসন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি করছে।

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশই বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী এনে খুলনায় অস্থিতিশীল করার অভিযোগ করা হয়েছে। দুই দলের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে খুলনার এই নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। এই মুহূর্তে দেশের মানুষেরও চোখ খুলনার দিকে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মুখে আজকের খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা কেএম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মেয়র পদে ৫ প্রার্থী : খুলনা সিটি নির্বাচন এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে এবার ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের সবাই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এর বাইরে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। এছাড়া ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোটের হিসাব-নিকাশ : ২০১৩ সালের সর্বশেষ খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুজ্জামানের কাছে ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। এবার বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন করে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মনোনীত করেছে। প্রার্থী হিসেবে জনপ্রিয়তায় তালুকদার আব্দুল খালেক ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু দুজনই যোগ্য ও জনপ্রিয়। দলীয় ভোটও প্রায় কাছাকাছি। তবে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য প্রচারণার প্রধান ইস্যু ছিল একটি করে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনি প্রচারণায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতি, বিএনপির ‘সন্ত্রাস’সহ বিভিন্ন নেতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘দুঃশাসন’, খুন-গুম, নেতাকর্মী ও জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছেন ভোটারদের কাছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী প্রায় সমান জনপ্রিয় হলেও জোটগতভাবে এগিয়ে আছেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী। খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট রয়েছে লক্ষাধিক করে। এর বাইরে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জামায়াতের ভোট।

দলটির নিবন্ধন না থাকলেও ২০ দলের শরিক হিসেবে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সমর্থন দিয়েছে। জামায়াতের খুলনা মহানগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহ আলম দাবি করেন, সিটিতে তাদের ৭০ থেকে ৭৫ হাজার ভোটার রয়েছে। এই ভোট জোটের প্রার্থী মঞ্জুর বাক্সেই পড়বে। তবে, স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এতো ভোট না থাকলেও ৫০ হাজারের নিচে নেই। এই ভোট বিএনপির প্রার্থীর পক্ষেই পড়বে। রাজনৈতিকভাবে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সরকারের শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টি। কিন্তু, মেয়র পদে দলটির প্রার্থী শফিকুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম ও বিহারি সম্প্রদায়েরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটও রয়েছে খুলনায়।

এসব ভোটের সিংহভাগই ধানের শীষের বাক্সে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে জোটগতভাবে বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে, রাজনৈতিক দলের বাইরে খুলনা সিটিতে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে। এ সংখ্যাও ৫০ হাজারের কম নয়। এই ভোটের বেশিরভাগই খালেকের বাক্সেই পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এর বাইরে পাটকলের শ্রমিক ও আঞ্চলিক ভোটও রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। অন্য জেলা থেকে যারা খুলনায় স্থায়ী বসবাস করেন তাদের মধ্যে বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, নোয়াখালী উল্লেখযোগ্য।

আঞ্চলিক ভোটারদের বড় অংশই নৌকা মার্কাতেই সিল মারবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, খুলনা সিটিতে মোট ভোটারের মধ্যে প্রায় ৫৩ হাজার নতুন ভোটার এবং প্রায় ১ লাখ বস্তিবাসীর ভোট রয়েছে। জয়-পরাজয়ে এই দুই শ্রেণির ভোট বড় নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে। নতুন ভোটার ও বস্তিবাসীর ভোট যে বেশি টানতে পারবেন সেদিকেই বিজয়ের পাল্লা ভারি হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ : তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে খুলনার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা-হামলার অভিযোগ করে আসছিলেন। সেখানকার কয়েকজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারও দাবি করেছিলেন। সর্বশেষ গত রোববারও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাসহ কমিশনারদের সাথে বৈঠক করে অভিযোগ করেছেন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করছে। পরোয়ানা না থাকলেও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এতে এজেন্টরা ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। খুলনা সিটি কর্পোরেশনে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে পুলিশ সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। ভোটের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে গতকাল পৃথক পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ২০ দলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন সরকার কেসিসিতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করছে।

পুলিশের নেতৃত্বে রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকে খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বহিরাগতদের এনে শহরের হোটেল, রেস্ট হাউজ ও আবাসিক কোয়াটারসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাগ ভাগ করে রেখেছে। এমনকী পুলিশের নামেও বিভিন্ন হোটেল বুকিং দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন এসব বহিরাগত বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঢুকে নিজেরা নিজেরা সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। এরপর ভয়ে ভোটাররা কেন্দ্র ত্যাগ করলে তারা ব্যালট কেটে বাক্সে ঢোকাবে। এভাবে নানা ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চালিয়ে সরকার জনতার বিজয় ছিনিয়ে নিতে চায়। এ অপতৎপরতা রুখে দিতে তিনি জনগণকে সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

এসময় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে শহরে বিপুল অঙ্কের কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, জনতা চায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সে পরিবেশই সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভোট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ জনতার রায়ে বিশ্বাস করে। এ নির্বাচনে জনতার রায়ের প্রতিফলন ঘটবে। সাবেক এ মেয়র বলেন, মঞ্জু ভোট বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করতে চান। জনতা এ ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। আজকের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, বিএনপি বিভিন্ন জায়গা থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার জড়ো করে ভোটের দিন নাশকতার পরিকল্পনা করছে।

২৮৯-র মধ্যে ২৩৪ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ : খুলনা সিটি কর্পোরেশনে (কেসিসি) ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ৪ হাজার ৯৭২ জন। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। এর মধ্যে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এ দুটি কেন্দ্রের ১০টি বুথের দুই হাজার ৯৭৮ ভোটার ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কেসিসি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী জানিয়েছেন, এ সিটির ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

বাকি ৫৫টিকে তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ২৪ জন পুলিশ ও আনসার। সাধারণ কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে থাকবে ২২ জন করে। এর বাইরে পুলিশের ১১টি স্ট্রাইকিং দল (প্রতিটিতে ১০ জন করে), ৭০টি ভ্রাম্যমাণ দল (প্রতিটি ৭ জন করে), ১৬ প্লাটুন বিজিবি, র?্যাবের ৩২টি ভ্রাম্যমাণ দল, ৩১ জন নির্বাহী হাকিম এবং ১০ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন।

সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে তিনি আশাবাদী। এর বাইরে সেখানে বিজিবিও মোতায়েন রয়েছে। সূত্র মতে, জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে খুলনা সিটিতে জয় আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ নিয়ে যাতে কোনোভাবেই বিতর্ক তৈরি না হয়, সেটি খেয়াল রেখেই নানা কৌশলে এগিয়েছে দলটি। অন্যদিকে বিএনপির জন্যও খুলনার নির্বাচনে জেতাটা জরুরি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। নানাভাবে নেতাকর্মীদের হয়রানি থাকলেও নির্বাচনি মাঠ ছাড়তে চায় না দলটি। শেষ মুহূর্তে বিজয়ের হাসি কে হাসেন এই অপেক্ষায় দেশবাসী। তবে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে খুলনা সিটিতে সুষ্ঠু, অবাধ ভোটগ্রহণে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে এটিও দেখার বিষয়। সবমিলে আজ দেশবাসীর চোখ খুলনার দিকেই।