ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলার কৃষকদের উৎপাদিত মুগডাল যাচ্ছে জাপানে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মে ২০১৮
  • ২৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোলার কৃষকদের উৎপাদিত মুগডাল যাচ্ছে জাপানে। আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)-এর অর্থায়নে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের পেইজ প্রকল্পের আওতায় মুগডালের জাত উন্নয়ন ও বাজার জাতকরণের উপর গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা জেলার পাঁচটি উপজেলায় আট হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ ও ডিলারের মাধ্যমে বাড়ি মুগ-৬ বীজ প্রদান করে আসছে। ফলে জাপানের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ইউগ্লেনার প্রতিনিধিরা সরাসরি এই আট হাজার কৃষকদের কাছ থেকে ৬০ টাকা দামে মুগডাল কিনতে শুরু করেছে। ফলে কৃষকরা বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি। ইতোমধ্যে ভোলা থেকে ৩০ মেট্রিক টন মুগডাল কিনেছে জাপানি সংস্থাটি।

এ ব্যাপারে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার আট হাজার কৃষককে সংস্থার পক্ষ থেকে বিনাখরচে প্রশিক্ষণ ও ডিলারের মাধ্যমে চাষের জন্য উন্নত জাতের বাড়ি মুগ ৬ দেয়া হয়। অনুজীব সার পদ্ধতি ব্যাবহার করে ডাল চাষ করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ মুগডাল জাপানি সংস্থাটি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিচ্ছে এতে কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া পড়েছে। এটি জাপানে অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে সালাদ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।

কৃষি বিভাগ জানায়, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাসন ও মনপুরা এ সাত উপজেলায় এবার ২৩৭৫০ হাজার হেক্টর জমিতে মুগডালের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত জাতের বাড়ি মুগ-৬ ছাড়াও নানা জাতের মুগ আবাদ করেছে কৃষকরা। প্রশিক্ষণ কারিগরি সহায়তা ও অনুকূল পরিবেশ থাকায় কৃষকরা বেশি জমিতে মুগডালের চাষ শুরু করে। এখন মাঠ জুড়ে কেবল মুগডালের সমারোহ। পাল্লা দিয়ে মাঠে মাঠে চলছে মুগডাল তোলার কাজ। এর মধ্যে কৃষাণীই বেশি।

কৃষকরা জানায়, একর প্রতি ফলন আসছে ১৪/১৫ মণ। বাজারে প্রতিমণ ডাল বিক্রি হচ্ছে ২৪/ ২৫শ’ টাকা। চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

এদিকে সরাসরি জাপানে মুগডাল অধিক দামে বিক্রি করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছে কৃষকরা। দৌলতখান উপজেলার খায়ের হাট এলাকার কৃষক দুলাল মোল্লা ও অহিদ সরদার বলেন, তারা প্রায় পাঁচ মণ মুগ ডাল জাপানি সংস্থার কাছে বিক্রি করেছেন। বিদেশিদের কাছে বিক্রি করে বেশি লাভ হয়েছে। তাই আগামীতে তারা আরও অধিক পরিমাণে মুগ চাষের কথা বলেন।

সদরের তোফাজ্জল মেম্বার ও আমির হোসেন বলেন, এসব মুগডাল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করলে তেমন লাভ হতো না। কিন্তু জাপানে বিক্রি হওয়ায় অনেকেই আগহী হয়ে উঠছে এ মুগ চাষে।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এগিয়ে আসাতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মুগডাল উৎপাদন ও উচ্চ মূল্যে বিক্রির একটা ভালো সুযোগ পাবে কৃষকরা। -বাসস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলার কৃষকদের উৎপাদিত মুগডাল যাচ্ছে জাপানে

আপডেট টাইম : ১০:০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোলার কৃষকদের উৎপাদিত মুগডাল যাচ্ছে জাপানে। আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)-এর অর্থায়নে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের পেইজ প্রকল্পের আওতায় মুগডালের জাত উন্নয়ন ও বাজার জাতকরণের উপর গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা জেলার পাঁচটি উপজেলায় আট হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ ও ডিলারের মাধ্যমে বাড়ি মুগ-৬ বীজ প্রদান করে আসছে। ফলে জাপানের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ইউগ্লেনার প্রতিনিধিরা সরাসরি এই আট হাজার কৃষকদের কাছ থেকে ৬০ টাকা দামে মুগডাল কিনতে শুরু করেছে। ফলে কৃষকরা বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি। ইতোমধ্যে ভোলা থেকে ৩০ মেট্রিক টন মুগডাল কিনেছে জাপানি সংস্থাটি।

এ ব্যাপারে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার আট হাজার কৃষককে সংস্থার পক্ষ থেকে বিনাখরচে প্রশিক্ষণ ও ডিলারের মাধ্যমে চাষের জন্য উন্নত জাতের বাড়ি মুগ ৬ দেয়া হয়। অনুজীব সার পদ্ধতি ব্যাবহার করে ডাল চাষ করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ মুগডাল জাপানি সংস্থাটি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিচ্ছে এতে কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া পড়েছে। এটি জাপানে অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে সালাদ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।

কৃষি বিভাগ জানায়, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাসন ও মনপুরা এ সাত উপজেলায় এবার ২৩৭৫০ হাজার হেক্টর জমিতে মুগডালের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত জাতের বাড়ি মুগ-৬ ছাড়াও নানা জাতের মুগ আবাদ করেছে কৃষকরা। প্রশিক্ষণ কারিগরি সহায়তা ও অনুকূল পরিবেশ থাকায় কৃষকরা বেশি জমিতে মুগডালের চাষ শুরু করে। এখন মাঠ জুড়ে কেবল মুগডালের সমারোহ। পাল্লা দিয়ে মাঠে মাঠে চলছে মুগডাল তোলার কাজ। এর মধ্যে কৃষাণীই বেশি।

কৃষকরা জানায়, একর প্রতি ফলন আসছে ১৪/১৫ মণ। বাজারে প্রতিমণ ডাল বিক্রি হচ্ছে ২৪/ ২৫শ’ টাকা। চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

এদিকে সরাসরি জাপানে মুগডাল অধিক দামে বিক্রি করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছে কৃষকরা। দৌলতখান উপজেলার খায়ের হাট এলাকার কৃষক দুলাল মোল্লা ও অহিদ সরদার বলেন, তারা প্রায় পাঁচ মণ মুগ ডাল জাপানি সংস্থার কাছে বিক্রি করেছেন। বিদেশিদের কাছে বিক্রি করে বেশি লাভ হয়েছে। তাই আগামীতে তারা আরও অধিক পরিমাণে মুগ চাষের কথা বলেন।

সদরের তোফাজ্জল মেম্বার ও আমির হোসেন বলেন, এসব মুগডাল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করলে তেমন লাভ হতো না। কিন্তু জাপানে বিক্রি হওয়ায় অনেকেই আগহী হয়ে উঠছে এ মুগ চাষে।

জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এগিয়ে আসাতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মুগডাল উৎপাদন ও উচ্চ মূল্যে বিক্রির একটা ভালো সুযোগ পাবে কৃষকরা। -বাসস