ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রেড ইউনিয়ন ও বোনাস রেখে শ্রম বিধিমালা চূড়ান্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৪০৯ বার

এই প্রথম শ্রমিকদের জন্য উৎসব ভাতা ও শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সংরক্ষণের আইন করে ‘শ্রম বিধিমালা’ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আগামীকাল বুধবার বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করা হবে। এ গেজেট প্রকাশের পর থেকে শ্রম আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন হবে।

শ্রম আইনের বিধিমালায় মূল বেতনের সমপরিমাণ উৎসব ভাতা পাবেন শ্রমিকরা। তারা শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেন। বিশেষ করে শ্রমিকদের কল্যাণে একটি তহবিল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। সরকার, মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ তদারকিতে এটি পরিচালিত হবে। এই তহবিল দুঃস্থ শ্রমিকদের বিপদ-আপদের পাশাপাশি বিপদগ্রস্ত মালিকদেরও সহযোগিতা করবে।

এছাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ’ বিধিমালায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ, প্রতিষ্ঠানের ভবনের নিরাপত্তা বিধানসহ শ্রমিক ও মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে।

শ্রম আইনের বিধিমালার গেজেট প্রকাশের বিষয়টি মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। সচিবালয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এর এক বৈঠকে তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত শ্রম আইনের বিধিমালার ভেটিং শেষ হয়েছে। আজকে আমরা এটি গেজেটের জন্য পাঠিয়েছি। আশা করি, কাল (বুধবার) গেজেট প্রকাশ হবে।’

সূত্র জানায়, এতদিন শ্রম আইন থাকলেও আইনটির বিধিমালা ছিল না। যার কারণে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ ছিল না। রানা প্লাজার দূর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্স) স্থগিত করা হলে বিধিমালা প্রণয়নের বিষয়টি সামনে চলে আসে। জিএসপি পাওয়ার জন্যই ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধিত), ২০১৩’ পাস হয়। জিএসপির শর্ত হিসেবে বাংলাদেশে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের জন্য বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার।

২০১৩ সালের আগস্টে শ্রম ও কর্মসংস্থাপন মন্ত্রণালয় সংশোধিত শ্রম আইনের বিধিমালা প্রণয়নে দুটি কমিটি গঠন করে। মূল কমিটিতে প্রধান করা হয় শ্রমসচিব মিকাইল শিপারকে। অন্যদিকে উপ-সচিব মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের একটি উপকমিটি।

কমিটি দীর্ঘদিন পর বিধিমালার খসড়া তৈরি করে। একপর্যায়ে বিধিমালার প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হলে তা নিয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। পরে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর তাদের সম্মতিতে বিধিমালা চূড়ান্ত করে কমিটি।

মূল শ্রম আইনটি ২০০৬ সালে প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৯, ২০১০ এবং সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিন দফা সংশোধন করা হয়। আইনটি দফায় দফায় সংশোধন করা হলেও এতদিন শ্রম আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। আগামীকাল বুধবার গেজেট আকারে প্রকাশের মধ্যদিয়ে শ্রম আইনের বিধিমালা আলোর মুখ দেখবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্রেড ইউনিয়ন ও বোনাস রেখে শ্রম বিধিমালা চূড়ান্ত

আপডেট টাইম : ১১:২৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এই প্রথম শ্রমিকদের জন্য উৎসব ভাতা ও শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সংরক্ষণের আইন করে ‘শ্রম বিধিমালা’ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আগামীকাল বুধবার বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করা হবে। এ গেজেট প্রকাশের পর থেকে শ্রম আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন হবে।

শ্রম আইনের বিধিমালায় মূল বেতনের সমপরিমাণ উৎসব ভাতা পাবেন শ্রমিকরা। তারা শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেন। বিশেষ করে শ্রমিকদের কল্যাণে একটি তহবিল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। সরকার, মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ তদারকিতে এটি পরিচালিত হবে। এই তহবিল দুঃস্থ শ্রমিকদের বিপদ-আপদের পাশাপাশি বিপদগ্রস্ত মালিকদেরও সহযোগিতা করবে।

এছাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ’ বিধিমালায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কাজের পরিবেশ, প্রতিষ্ঠানের ভবনের নিরাপত্তা বিধানসহ শ্রমিক ও মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে।

শ্রম আইনের বিধিমালার গেজেট প্রকাশের বিষয়টি মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। সচিবালয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এর এক বৈঠকে তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত শ্রম আইনের বিধিমালার ভেটিং শেষ হয়েছে। আজকে আমরা এটি গেজেটের জন্য পাঠিয়েছি। আশা করি, কাল (বুধবার) গেজেট প্রকাশ হবে।’

সূত্র জানায়, এতদিন শ্রম আইন থাকলেও আইনটির বিধিমালা ছিল না। যার কারণে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ ছিল না। রানা প্লাজার দূর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্স) স্থগিত করা হলে বিধিমালা প্রণয়নের বিষয়টি সামনে চলে আসে। জিএসপি পাওয়ার জন্যই ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধিত), ২০১৩’ পাস হয়। জিএসপির শর্ত হিসেবে বাংলাদেশে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের জন্য বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার।

২০১৩ সালের আগস্টে শ্রম ও কর্মসংস্থাপন মন্ত্রণালয় সংশোধিত শ্রম আইনের বিধিমালা প্রণয়নে দুটি কমিটি গঠন করে। মূল কমিটিতে প্রধান করা হয় শ্রমসচিব মিকাইল শিপারকে। অন্যদিকে উপ-সচিব মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের একটি উপকমিটি।

কমিটি দীর্ঘদিন পর বিধিমালার খসড়া তৈরি করে। একপর্যায়ে বিধিমালার প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হলে তা নিয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। পরে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর তাদের সম্মতিতে বিধিমালা চূড়ান্ত করে কমিটি।

মূল শ্রম আইনটি ২০০৬ সালে প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৯, ২০১০ এবং সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিন দফা সংশোধন করা হয়। আইনটি দফায় দফায় সংশোধন করা হলেও এতদিন শ্রম আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। আগামীকাল বুধবার গেজেট আকারে প্রকাশের মধ্যদিয়ে শ্রম আইনের বিধিমালা আলোর মুখ দেখবে।