হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবন্ধার জেলার সাত উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কাঁদা মাটিতে বুনতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে ইরি-বোরো চারা রোপনে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা।
সম্প্রতি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সার ও বীজ চারা নিয়ে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন। বিরামহীন গতিতে চলছে বোরো রোপনের কাজ। তবে দেখা দিয়েছে শ্রমিক ও চারা সংকট।
চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো ধান রোপনে বীজ-চারা সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে বর্গাচাষীদের মধ্যে বীজ-চারার সঙ্কট থাকায় তারা বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে গুণগত মান যাচাই-বাছাই করে চারা ক্রয় করতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ঘন কুয়াশা থাকার কারণে জমি রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে একাধিক কৃষক জানান।
গতকাল বিকেলে সাদুল্যাপুর উপজেলার মীরপুর বাজারে বীজ-চারা ক্রয় করতে আসা বর্গাচাষী জহুরুল ইসলাম ও শাহারুল ইসলাম বলেন, সময়মতো বোরো বীজ বপনের জন্য আমাদের নিজস্ব জায়গা-জমি না থাকায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও হাটে চারা ক্রয় করতে এসেছি।
গোবিন্দগঞ্জের আদর্শ কৃষক জামাতালী ও মুনছুর আলী জানান, নিজস্ব জমিতে প্রতি বছরে ধান রোপনের জন্য চাহিদার চেয়েও বেশি পরিমাণে বীজ বপণ করে আসছি। যা রোপন শেষে অতিরিক্ত বীজ-চারা বিক্রি করে লাভবান হওয়া যেত। এসব চারা ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্য দিয়ে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ইরি-বোরো চাষাবাদের ধুম পড়েছে।
সরেজমিনে সুন্দরগঞ্জ এলাকার কৃষক নজির উদ্দিন ও খাদেম আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূল ও সার-কীটনাশকের মূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবার আশানুরুপ ফলন নেওয়া সম্ভব হবে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সাঈদ মো. ফজলে এলাহী জানান, কৃষকদেরকে সারি করে চারা লাগানো এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষেতে কঞ্চি পুতে দেয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে ওই সমস্ত কঞ্চিতে পাখি বসে জমির ক্ষতিকর পোকা নিধন করতে পারে। সেই সঙ্গে পরিচর্যা করে কম মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করে অধিক ফলনের কলা-কৌশলও কৃষকদের শেখানো হচ্ছে।