ঢাকা ০৫:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে ড. ইউনূস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৪৫ বার

এবার ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার তার বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা চাইলেন বাংলাদেশের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এজন্য তাকে আমন্ত্রণ জানায় মহারাষ্ট্র সরকার। সরকারের পক্ষে অর্থ, পরিকল্পনা ও বনমন্ত্রী সুধীর মানগান্তিবার (বিজেপি) পল্লী উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা চান বাংলাদেশের এই নোবেলজয়ীর কাছে।

যে অনুষ্ঠানে এই সহায়তা চাওয়া হয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপক কেশরকারও। চার ঘণ্টাব্যাপী এই বিশদ আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির প্রধানরা, শিক্ষাবিদগণ, জাতীয় পল্লী অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ঘঅইঅজউ-এর প্রতিনিধিবৃন্দ।

ইউনূস সেন্টারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী আলোচনার জন্য কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেন। মন্ত্রীর পরবর্তী বাজেট বক্তৃতার অংশ হিসেবে ও বাজেটে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে একটি কর্মকৌশল প্রতিবেদন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নগুলো তৈরি করা হয়েছিল।

তিনি বিশেষ করে সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে এবং গ্রাম ও শহরের বেকার যুব সমাজের বেকারত্ব দূর করার কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি ও তার সহকর্মীরা জানতে চান তাদের রাজ্যে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গৃহীত ঋণ কর্মসূচিগুলো কেন ভালভাবে কাজ করছে না এবং বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতায় কি করে এই কর্মসূচিগুলোকে উজ্জীবিত করা যায়।

মন্ত্রী জানতে চান, প্রফেসর ইউনূসের কর্মসূচিগুলো কিভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে এগুলোর সফলতার কারণ কি। তার রাজ্যে বাস্তবায়ন করা যায় এমন যথাযথ প্রকল্প এবং সেগুলোর সুনির্দিষ্ট ফলাফল সম্পর্কেও মন্ত্রী আগ্রহ দেখান, যাতে মহারাষ্ট্রের বাজেট প্রক্রিয়ায় এগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তার আগ্রহের বিষয় ছিল মূলত তিনটি: গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে অতি দরিদ্রদের অর্থায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা, মহারাষ্ট্রে উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং কর্মসংস্থান তৈরি করার লক্ষ্যে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর পুনরুজ্জীবন।

সামাজিক ব্যবসা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন যে, অর্থ উপার্জন একটি সুখকর জিনিস। তবে অন্যদের সুখী করা অতি-সুখকর। মন্ত্রী পরে বলেন, তিনি তার রাজ্যের ১৭ লাখ স্বাবলম্বী গ্রুপকে ‘অতি-সুখী গ্রুপ’-এ পরিণত করতে চান। সভা শেষে মন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, তিনি দসারা ও দিওয়ালির মধ্যবর্তী সময়ে (২৩ অক্টোবর থেকে ৯ই নভেম্বরের মধ্যে) তার বিশেষজ্ঞবৃন্দ ও রাজ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে বাংলাদেশে একটি স্টাডি ভিজিটে যাবেন, যাতে সেখানে অবস্থানকালে এ সম্পর্কে মৌলিক ধারণা অর্জন করতে পারেন।

বাস্তবায়ন কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতে ও আলোচনা চালিয়ে যেতে তিনি মহারাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভারতে ইউনূস সামাজিক ব্যবসার কান্ট্রি ডিরেক্টর ও ঢাকায় ইউনূস সেন্টারের সমন্বয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও করেন। মন্ত্রী সুধীর মানগান্তিবার তার মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে প্রফেসর ইউনূসকে বেশ কিছু উপহার দেন এবং প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে ড. ইউনূস

আপডেট টাইম : ১০:৫০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এবার ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার তার বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা চাইলেন বাংলাদেশের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এজন্য তাকে আমন্ত্রণ জানায় মহারাষ্ট্র সরকার। সরকারের পক্ষে অর্থ, পরিকল্পনা ও বনমন্ত্রী সুধীর মানগান্তিবার (বিজেপি) পল্লী উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা চান বাংলাদেশের এই নোবেলজয়ীর কাছে।

যে অনুষ্ঠানে এই সহায়তা চাওয়া হয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপক কেশরকারও। চার ঘণ্টাব্যাপী এই বিশদ আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির প্রধানরা, শিক্ষাবিদগণ, জাতীয় পল্লী অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ঘঅইঅজউ-এর প্রতিনিধিবৃন্দ।

ইউনূস সেন্টারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী আলোচনার জন্য কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেন। মন্ত্রীর পরবর্তী বাজেট বক্তৃতার অংশ হিসেবে ও বাজেটে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে একটি কর্মকৌশল প্রতিবেদন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নগুলো তৈরি করা হয়েছিল।

তিনি বিশেষ করে সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে এবং গ্রাম ও শহরের বেকার যুব সমাজের বেকারত্ব দূর করার কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি ও তার সহকর্মীরা জানতে চান তাদের রাজ্যে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গৃহীত ঋণ কর্মসূচিগুলো কেন ভালভাবে কাজ করছে না এবং বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতায় কি করে এই কর্মসূচিগুলোকে উজ্জীবিত করা যায়।

মন্ত্রী জানতে চান, প্রফেসর ইউনূসের কর্মসূচিগুলো কিভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে এগুলোর সফলতার কারণ কি। তার রাজ্যে বাস্তবায়ন করা যায় এমন যথাযথ প্রকল্প এবং সেগুলোর সুনির্দিষ্ট ফলাফল সম্পর্কেও মন্ত্রী আগ্রহ দেখান, যাতে মহারাষ্ট্রের বাজেট প্রক্রিয়ায় এগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তার আগ্রহের বিষয় ছিল মূলত তিনটি: গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে অতি দরিদ্রদের অর্থায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা, মহারাষ্ট্রে উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং কর্মসংস্থান তৈরি করার লক্ষ্যে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর পুনরুজ্জীবন।

সামাজিক ব্যবসা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন যে, অর্থ উপার্জন একটি সুখকর জিনিস। তবে অন্যদের সুখী করা অতি-সুখকর। মন্ত্রী পরে বলেন, তিনি তার রাজ্যের ১৭ লাখ স্বাবলম্বী গ্রুপকে ‘অতি-সুখী গ্রুপ’-এ পরিণত করতে চান। সভা শেষে মন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, তিনি দসারা ও দিওয়ালির মধ্যবর্তী সময়ে (২৩ অক্টোবর থেকে ৯ই নভেম্বরের মধ্যে) তার বিশেষজ্ঞবৃন্দ ও রাজ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে বাংলাদেশে একটি স্টাডি ভিজিটে যাবেন, যাতে সেখানে অবস্থানকালে এ সম্পর্কে মৌলিক ধারণা অর্জন করতে পারেন।

বাস্তবায়ন কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতে ও আলোচনা চালিয়ে যেতে তিনি মহারাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভারতে ইউনূস সামাজিক ব্যবসার কান্ট্রি ডিরেক্টর ও ঢাকায় ইউনূস সেন্টারের সমন্বয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও করেন। মন্ত্রী সুধীর মানগান্তিবার তার মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে প্রফেসর ইউনূসকে বেশ কিছু উপহার দেন এবং প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।