পবিত্র কোরবানি নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না জনগণ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
পরিবেশ দূষণের অজুহাত তুলে মুসলমানদের পাড়া-মহল্লায় কোরবানি দেয়ার চিরাচরিত ইসলামী ঐতিহ্য বন্ধ করে এর পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট জায়গায় পশু কোরবানি দেয়া এবং নিবন্ধিত লোকের মাধ্যমে পশু জবাইয়ের বিধি জারির জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামী সংস্কৃতি ও চেতনাবোধ মুছে ফেলার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আল্লামা শফী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে দেশে একদিকে নগ্নপনা, বেহায়াপনাসহ ক্ষতিকর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো হচ্ছে, অন্যদিকে ইসলামী সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন ও সংকোচনের অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেফাজত আমীরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা শফী বলেন, শুধু পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানির সংস্কৃতিকে সরিয়ে দেয়া নয়, যানজটের অজুহাত তুলে পশুরহাটে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে কোরবানি দাতাদের জন্য পশু ক্রয়েও সংকট তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, জনসাধারণকে পশুবর্জ্য সুনির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি সিটি করপোরেশন বর্জ্য অপসারণে বাড়তি জনবল নিয়োগ দিতে পারে।
হেফাজত আমীর বলেন, কোরবানির মাধ্যমে গভীর আত্মত্যাগের পাশাপাশি ধনী-গরিব, ফকির-মিসকিনদের মধ্যে যে গভীর সহমর্মিতা, আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হয় তাতে ইসলাম বিদ্বেষী চক্র অস্বস্তিতে ভোগেন। এ কারণে তারা নানাভাবে কোরবানির বিরুদ্ধে গভীর অপপ্রচার ও চক্রান্তে লিপ্ত।
তিনি বলেন, ইসলামী সংস্কৃতির বিশেষত্ব হচ্ছে সব আনন্দে ধনী-গরিব, ফকির-মিসকিন, আত্মীয়-স্বজনসহ সকলকে শামিল করে নেয়া। কোরবানিকে কেন্দ্র করে এ দিন দেশের সব মুসলমানের পাতিলে একই রান্না হয়। এতে ধনী-গরিব সব শিশুর মাঝে আনন্দ বয়ে যায়। এর চেয়ে সুন্দর ও সহমর্মিতাপূর্ণ সংস্কৃতি আর কি হতে পারে।
হেফাজতে ইসলামের আমীর বলেন, এসব বন্ধ না করলে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের মনে মারাত্মক ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। ঈদের দিন গরিব-মজদুরদের উচ্চ বেতনে কামলা খাটা থেকে শুরু করে কোরবানির গোসশ বিলি-বণ্টন, কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মূল্য দানসহ সবক্ষেত্রেই গরিবদের জন্য উপকারী কোরবানিকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত ও সংকোচিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে গরিবদের স্বার্থে আঘাত হানা হচ্ছে।