হাওর বার্তা ডেস্কঃ শেষ হতে চলেছে পৌষ মাস। প্রতি বছরই এ সময় হাওরের জমি শুকিয়ে যায়। জমি চাষাবাদের জন্য দিতে হয় সেচ। কিন্তু এবার সেচতো দূরে থাক জমিতে হাল দেয়ার অবস্থাও নেই। এখনও অধিকাংশ হাওরজুড়েই পানি রয়ে গেছে। বীজতলা করার মতো জায়গাও নেই। গেল বছর বানের পানিতে তলিয়ে গেছে হাওরের ধান। সে ক্ষতিই এখনও পুষিয়ে উঠতে পারেনি কৃষকরা। এ অবস্থায় কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই, নবীগঞ্জ, বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলার হাওরগুলোতে এখনও পানি জমে রয়েছে। ফলে অধিকাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদতো করতেই পারছেন না এমনকি চাষও দিতে পারছেন না কৃষকরা। জেলার নদীগুলোতেও পানি প্রবাহ বেশি। তাছাড়া খোয়াই নদীর তলদেশ পলি পড়ে উঁচু হয়ে গেছে। ফলে হাওরের জমিগুলোর পানি নামতে পারছে না।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৭০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়। এর মাঝে সদরে ৯৯৪০, মাধবপুরে ১১০১৮, চুনারুঘাটে ৮৩৭০, বাহুবলে ৭৬০০, নবীগঞ্জে ১৭৮৮০, লাখাইয়ে ১১৫৫৯, বানিয়াচংয়ে ৩৭১৭৩ এবং আজমিরীগঞ্জে ১৫৫৩০ হেক্টর জমি রয়েছে। আর আবাদ হয়েছে মাত্র ৪৪ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। বন্যায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৫৩ হেক্টর জমি। কিন্তু বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও অনেক বেশি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, এ বছর হাওরের পানি একটু ধীরে যাচ্ছে। গত অক্টোবরে অতিবৃষ্টি হওয়ার কারণে পানির উচ্চতা একটু বেশি। মূলত হাওরের পানি নামে কালনী ও খোয়াই নদী দিয়ে। এ দুটি নদী যেখানে মেঘনায় মিশেছে, সেখানে মেঘনার মোহনায় পলি জমে পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। ফলে পানি স্বাভাবিক গতিতে নামতে পারছে না।
এছাড়া হাওরে এলজিইডি কিছু রাস্তা নির্মাণ করেছে। এগুলোকে ডুবন্ত রাস্তা বলে। এগুলো করতে গিয়ে কোথাও কোথাও স্থানীয়দের অনুরোধে কিছু জায়গা উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু উঁচু করার পর সেখানে যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কালভার্ট রাখার কথা তা রাখা হয়নি। এসব কারণেও হাওরের পানি নামছে না বলে জানান তিনি।