ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে বাঁধ নির্মাণে কাজে গাফিলতি অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত বছরের এপ্রিলে আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চলে ব্যাপক ফসলহানি ঘটলে অভিযোগ ওঠে, ফসলরক্ষা বাঁধগুলো নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ফলে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রথা বাদ দিয়ে নতুন নীতিমালা করা হয়েছে। এখন থেকে বাঁধগুলো নির্মাণ ও মেরামত করবে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিগুলো (পিআইসি)। পিআইসিগুলো গঠিত হবে হাওরের কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে, তাদের পাশাপাশি বাঁধ নির্মাণের কাজে সরাসরি অংশ নেবে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন।

কিন্তু এক বছরের ফসল বিপর্যয়ের ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নিয়ে ঠিকাদারি প্রথা বাদ দেওয়ার ফলে একই রকমের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটতে পারে। কারণ, এই নতুন ব্যবস্থাটি এখনো কার্যকর হয়নি। ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করার বাধ্যবাধকতা আছে, কিন্তু জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পেরোতে চলল, তবু কাজ শুরু হয়নি। শুধু তা-ই নয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিগুলোও গঠন করা হয়নি। কমিটি গঠন করতে হয় প্রকল্পগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পর, কিন্তু প্রকল্পগুলোও চূড়ান্ত হয়নি।

প্রতিটি ধাপে এই বিলম্বের একটা কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এ বছর হাওর থেকে পানি নামছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। হাওরের অনেক জায়গায় এখনো পানি রয়ে গেছে। ফলে বাঁধ নির্মাণের স্থানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। কিন্তু এ কথা পুরোপুরি সত্য নয় হাওরের অনেক জায়গা থেকে পানি সরে গেছে এবং সেসব জায়গায় বাঁধ নির্মাণের কাজ আরও আগেই শুরু করা যেত। প্রশ্ন হচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কেন শুকনো জায়গাগুলোতে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পে অনুমোদন দেয়নি। কাজ শুরু করার নির্ধারিত তারিখের তিন সপ্তাহ পরও কেন কাজ শুরু করা হয়নি?

Image result for হাওরের বাধের ছবি

মনে রাখতে হবে, বাঁধ নির্মাণের কাজ দেরিতে শুরু করা হলে শেষ করতেও দেরি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তড়িঘড়ি করে বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে কাজের মান খারাপ হতে পারে, বাঁধগুলো দুর্বল হতে পারে, সামান্য পানির তোড়েই জায়গায় জায়গায় ভেঙে গিয়ে হাওরে পানি ঢুকে ফসল নষ্ট করতে পারে। তা ছাড়া নতুন ব্যবস্থায়ও যে অনিয়ম-দুর্নীতির আশঙ্কা নেই, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

পানি নামছে না বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। পানি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য নষ্ট জলকপাটগুলো মেরামত করা দরকার। কিছু কিছু জায়গায় নালা কেটে দিয়েও পানি নেমে যাওয়ার পথ করে দেওয়া যায়। বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি গ্রহণযোগ্য নয়। গত বছরের ফসলহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি অবশ্যই ঠেকানো দরকার।

সূত্র: প্রথম আলো

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরে বাঁধ নির্মাণে কাজে গাফিলতি অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে

আপডেট টাইম : ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত বছরের এপ্রিলে আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চলে ব্যাপক ফসলহানি ঘটলে অভিযোগ ওঠে, ফসলরক্ষা বাঁধগুলো নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ফলে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রথা বাদ দিয়ে নতুন নীতিমালা করা হয়েছে। এখন থেকে বাঁধগুলো নির্মাণ ও মেরামত করবে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিগুলো (পিআইসি)। পিআইসিগুলো গঠিত হবে হাওরের কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে, তাদের পাশাপাশি বাঁধ নির্মাণের কাজে সরাসরি অংশ নেবে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন।

কিন্তু এক বছরের ফসল বিপর্যয়ের ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নিয়ে ঠিকাদারি প্রথা বাদ দেওয়ার ফলে একই রকমের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটতে পারে। কারণ, এই নতুন ব্যবস্থাটি এখনো কার্যকর হয়নি। ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করার বাধ্যবাধকতা আছে, কিন্তু জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পেরোতে চলল, তবু কাজ শুরু হয়নি। শুধু তা-ই নয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিগুলোও গঠন করা হয়নি। কমিটি গঠন করতে হয় প্রকল্পগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পর, কিন্তু প্রকল্পগুলোও চূড়ান্ত হয়নি।

প্রতিটি ধাপে এই বিলম্বের একটা কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এ বছর হাওর থেকে পানি নামছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। হাওরের অনেক জায়গায় এখনো পানি রয়ে গেছে। ফলে বাঁধ নির্মাণের স্থানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। কিন্তু এ কথা পুরোপুরি সত্য নয় হাওরের অনেক জায়গা থেকে পানি সরে গেছে এবং সেসব জায়গায় বাঁধ নির্মাণের কাজ আরও আগেই শুরু করা যেত। প্রশ্ন হচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কেন শুকনো জায়গাগুলোতে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পে অনুমোদন দেয়নি। কাজ শুরু করার নির্ধারিত তারিখের তিন সপ্তাহ পরও কেন কাজ শুরু করা হয়নি?

Image result for হাওরের বাধের ছবি

মনে রাখতে হবে, বাঁধ নির্মাণের কাজ দেরিতে শুরু করা হলে শেষ করতেও দেরি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তড়িঘড়ি করে বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে কাজের মান খারাপ হতে পারে, বাঁধগুলো দুর্বল হতে পারে, সামান্য পানির তোড়েই জায়গায় জায়গায় ভেঙে গিয়ে হাওরে পানি ঢুকে ফসল নষ্ট করতে পারে। তা ছাড়া নতুন ব্যবস্থায়ও যে অনিয়ম-দুর্নীতির আশঙ্কা নেই, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

পানি নামছে না বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। পানি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য নষ্ট জলকপাটগুলো মেরামত করা দরকার। কিছু কিছু জায়গায় নালা কেটে দিয়েও পানি নেমে যাওয়ার পথ করে দেওয়া যায়। বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি গ্রহণযোগ্য নয়। গত বছরের ফসলহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি অবশ্যই ঠেকানো দরকার।

সূত্র: প্রথম আলো