হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছরের প্রায় ৮ মাস বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল হাকালুকি হাওর। এখনও হাওরের পানি পুরোপুরি কমেনি। এবার শীতও বিলম্বিত। তবে শীতের আনাগোনা শুরু হতেই এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে আসতে শুরু করেছে শীতের অতিথি পাখি। সুদূর সাইবেরিয়া ও হিমালয়ের পাদদেশ লাদাক থেকে এরা আসে দেশের বৃহত্তম এই অতিথি পাখির সমাগমস্থলে। অতিথি পাখির কলকাকলিতে পাল্টে যাচ্ছে ছোট বড় ২৩৮টি বিল ও ১০টি নদী নিয়ে গঠিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হাকালুকি হাওরের চেহারা। এদিকে হাওরে অতিথি পাখি আসার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে উঠেছে হাওর পাড়ের সংঘবদ্ধ অতিথি পাখি শিকারিচক্র। তারা হাওরে পেতেছে বিষটোপের ফাঁদ।
হাওর পাড়ের বাসিন্দারা জানান, ইতিমধ্যে বড় বড় দলে হাওরের চকিয়া, হাওরখাল পিংলা, জল্লা, কালাপানি, বাইয়াগজুয়া, মালাম, নাগুয়া লরিবাই, কৈয়ারকোনা ও ফুটবিলে বিভিন্ন জাত ও রঙের অতিথি পাখির দেখা পাওয়া যায়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাতাসে শীতের ছোঁয়া লাগতেই শুরু হয়ে গেছে অতিথি পাখির আনাগোনা। প্রতিদিন এর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছর ৫০-৬০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে এই হাওরে। এর মধ্যে অনেক বিলুপ্ত প্রজাতির পাখিরও দেখা মেলে।
একসময় এই হাওড় অতিথি পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম ছিল। কিন্তু গত ৩ বছর থেকে হাওড়টি অতিথি পাখির আর অভয়াশ্রম নেই বললেই চলে। মূলত পরিবেশ অধিদফতরের সিডব্লিউবিএম প্রকল্প চলাকালে হাওড়টি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত হয়। এরপর সিবিএ ইসিএ প্রকল্প চালু হলে পাখিদের অভয়াশ্রমগুলোতে মনিটরিং করা হতো। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চলতি বছর অতিথি পাখির জন্য অরক্ষিত স্থান হয়ে পড়েছে হাকালুকি হাওড়। তবে স্থানীয় প্রশাসন হাওড়ে আসা অতিথি পাখির নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতকরণে অনেকটা উদাসীন।
প্রতি বছর শীতে আসা এসব অতিথি পাখি নিধনে একদল সংঘবদ্ধ দল বিষটোপ নিয়ে প্রস্তত থাকে। এবারও চক্রটি তাদের অপতৎপরতা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌ. মো. গোলাম রাব্বী জানান, চলতি মৌসুমে অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে। শিকারি চক্রকে রোধ করাই এবার হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তারপরও হাওর উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অতিথি পাখিদের অবাদ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। এরজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।