ঢাকা ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বাদাম বিক্রি করে বোনকে অফিসার বানাতে চাই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭
  • ৪০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে বয়সে স্কুলে থাকার কথা। সেই বয়সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি  পেরিয়েই সংসারের হাল ধরেছে ১২ বছরের কিশোর আবদুল্লাহ।

মাথায় উসকো-খুসকো চুল, ছিপছিপে পাতলা গড়ন। পরনে ময়লা কাপড়, পায়ে ছেঁড়া চটি স্যান্ডেল। বাবার যা আয় তাতে সংসার চলে না। তাই মা-বাবা আর ১১ বছর বয়সী ছোট বোনকে নিয়ে চিন্তা থেকেই রোজগারে নেমেছে কিশোর আবদুল্লাহ।

১২ বছর বয়সেই আবদুল্লাহ জেনে গেছে জীবন খুব কঠিন। এখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। এ কারণে কিশোর বয়সেই কাঁধে দায়িত্বের বোঝা। এ দায়িত্ব নিয়েই আবদুল্লাহ ছুটছে সংগ্রামমুখর জীবনে। ছোট বোনের লেখাপড়া আর বাবা-মায়ের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে তাকে ছুটতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের শতবর্ষের পুরনো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এর পাদদেশেই বাদাম বিক্রি করে আব্দুল্লাহ। সে  ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাজার এলাকার দিনমজুর জাকির হোসেনের ছেলে। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে তার ব্রিজের নিচে। সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে বাদাম বিক্রি করে সংসার চালায় সে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে অর্থের অভাবে পড়াশোনা করতে না পারেনি আব্দুল্লাহ। অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নিজেই নেমেছে রাস্তায়। সংসারে জোগান দিতে শিশু অবস্থায় সে হাতে তুলে নেয় কঠিন কাজ। সেই থেকে চলছে আবদুল্লাহর জীবন সংগ্রাম। প্রতিদিন ৪৫০-৫০০ টাকা করে উপার্জন হয় তার।

আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। লেখাপড়া করতে ইচ্ছে করে কিনা- প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ বলে, “ইচ্ছেতো করেই। আমার ইচ্ছে করে লেখাপড়া করে অফিসার হবো। তাতো এখন আর হবে না। টাকা-পয়সা কোথায় পাবো ? আমার ছোট বোন জেসমিন খাতুন পাকশীর গার্লস স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ে। জুতা, প্রাইভেট, খাতাপত্র, স্কুলের পোশাক লাগে। এসব কোথা থেকে আসবে। ”

আবদুল্লাহর ভাষ্য, যেখানে আমাদের ঠিকমতো খাবারই জোটে না সেখানে পড়ালেখার খরচ পাবো কই। আমার ছোট বোনটারও খুব ইচ্ছে লেখাপড়া করার। সে একদিন অফিসার হবে’- কথাটি বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে হাঁক দেয়- ওই বাদাম আছে, বাদাম বাদাম…।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

বাদাম বিক্রি করে বোনকে অফিসার বানাতে চাই

আপডেট টাইম : ০৫:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে বয়সে স্কুলে থাকার কথা। সেই বয়সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি  পেরিয়েই সংসারের হাল ধরেছে ১২ বছরের কিশোর আবদুল্লাহ।

মাথায় উসকো-খুসকো চুল, ছিপছিপে পাতলা গড়ন। পরনে ময়লা কাপড়, পায়ে ছেঁড়া চটি স্যান্ডেল। বাবার যা আয় তাতে সংসার চলে না। তাই মা-বাবা আর ১১ বছর বয়সী ছোট বোনকে নিয়ে চিন্তা থেকেই রোজগারে নেমেছে কিশোর আবদুল্লাহ।

১২ বছর বয়সেই আবদুল্লাহ জেনে গেছে জীবন খুব কঠিন। এখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। এ কারণে কিশোর বয়সেই কাঁধে দায়িত্বের বোঝা। এ দায়িত্ব নিয়েই আবদুল্লাহ ছুটছে সংগ্রামমুখর জীবনে। ছোট বোনের লেখাপড়া আর বাবা-মায়ের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে তাকে ছুটতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের শতবর্ষের পুরনো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এর পাদদেশেই বাদাম বিক্রি করে আব্দুল্লাহ। সে  ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাজার এলাকার দিনমজুর জাকির হোসেনের ছেলে। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে তার ব্রিজের নিচে। সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে বাদাম বিক্রি করে সংসার চালায় সে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে অর্থের অভাবে পড়াশোনা করতে না পারেনি আব্দুল্লাহ। অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নিজেই নেমেছে রাস্তায়। সংসারে জোগান দিতে শিশু অবস্থায় সে হাতে তুলে নেয় কঠিন কাজ। সেই থেকে চলছে আবদুল্লাহর জীবন সংগ্রাম। প্রতিদিন ৪৫০-৫০০ টাকা করে উপার্জন হয় তার।

আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। লেখাপড়া করতে ইচ্ছে করে কিনা- প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ বলে, “ইচ্ছেতো করেই। আমার ইচ্ছে করে লেখাপড়া করে অফিসার হবো। তাতো এখন আর হবে না। টাকা-পয়সা কোথায় পাবো ? আমার ছোট বোন জেসমিন খাতুন পাকশীর গার্লস স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ে। জুতা, প্রাইভেট, খাতাপত্র, স্কুলের পোশাক লাগে। এসব কোথা থেকে আসবে। ”

আবদুল্লাহর ভাষ্য, যেখানে আমাদের ঠিকমতো খাবারই জোটে না সেখানে পড়ালেখার খরচ পাবো কই। আমার ছোট বোনটারও খুব ইচ্ছে লেখাপড়া করার। সে একদিন অফিসার হবে’- কথাটি বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে হাঁক দেয়- ওই বাদাম আছে, বাদাম বাদাম…।