ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখোমুখি: প্রধানমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:০০:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সামরিক অভিযান ও সহিংসতায়র প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। এখনও প্রতিদিন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আগমনের ফলে তাদের নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা প্রদান করতে হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘকাল তাদের বাংলাদেশে রাখা সম্ভব হবে না। লাখ লাখ অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা এবং তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ আজ ‘নজিরবিহীন সঙ্কটের’ মুখোমুখি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতায় আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সমস্যা সমাধানের সফল হবো।
দশম সংসদের ১৮তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মো: আবদুল মতিন (মৌলভীবাজার-২) এর তারকা চিহ্নিত লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদ নেতা আরো বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের লক্ষ্যে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অনুসন্ধানী দল ইতোমধ্যে কক্সবাজার সফল করে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা মিয়ানমারে মানবাধিকার চরমভাবে লংঘিত হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি আজ সকলের দাবি। নিরাপত্তা পরিষদেও বৈঠকেও সে সুপারিশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে আহবান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য আমি জাতিসংঘে ৫ দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছি। এরপর এ পর্যন্ত এই ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে ৬টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সভায় জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল মিয়ানমার নাগরিককে স্বদেশ ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও কর্মতৎপরতায় মিয়ানমারের জাতিগত নিধন বন্ধের দাবিটি আজ সার্বজনীন দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইসূতে আমরা আন্তর্জাতিক মহলের জোর সমর্থন আদায়ে সফল হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৭৩তম আইপিইউ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে জরুরি রেজুলেশন নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিপিএ সম্মেলনেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও সে দেশকে করতে হবে। নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু থেকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখোমুখি: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৮:০০:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সামরিক অভিযান ও সহিংসতায়র প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। এখনও প্রতিদিন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আগমনের ফলে তাদের নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা প্রদান করতে হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘকাল তাদের বাংলাদেশে রাখা সম্ভব হবে না। লাখ লাখ অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা এবং তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ আজ ‘নজিরবিহীন সঙ্কটের’ মুখোমুখি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতায় আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সমস্যা সমাধানের সফল হবো।
দশম সংসদের ১৮তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মো: আবদুল মতিন (মৌলভীবাজার-২) এর তারকা চিহ্নিত লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদ নেতা আরো বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের লক্ষ্যে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অনুসন্ধানী দল ইতোমধ্যে কক্সবাজার সফল করে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা মিয়ানমারে মানবাধিকার চরমভাবে লংঘিত হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি আজ সকলের দাবি। নিরাপত্তা পরিষদেও বৈঠকেও সে সুপারিশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে আহবান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য আমি জাতিসংঘে ৫ দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছি। এরপর এ পর্যন্ত এই ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে ৬টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সভায় জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল মিয়ানমার নাগরিককে স্বদেশ ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও কর্মতৎপরতায় মিয়ানমারের জাতিগত নিধন বন্ধের দাবিটি আজ সার্বজনীন দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইসূতে আমরা আন্তর্জাতিক মহলের জোর সমর্থন আদায়ে সফল হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৭৩তম আইপিইউ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে জরুরি রেজুলেশন নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিপিএ সম্মেলনেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও সে দেশকে করতে হবে। নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু থেকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে হবে।