হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তর কোরিয়ার আবারো হুঁশিয়ার করেছে, যেকোনো মুহূর্তে পরমাণু যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির উপরাষ্ট্রদূত কিম ইন-রিয়ং সোমবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপের অবস্থা এখন ভয়াবহ এবং যেকোনো সময় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের নিরস্ত্রীকারণবিষয়ক কমিটিকে কিম ইন-রিয়ং বলেছেন, উত্তর কোরিয়ায়ই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যারা ১৯৭০-এর দশক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘চরম ও সরাসরি’ পরমাণু হামলার হুমকির বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, আত্মরক্ষায় পরমাণু অস্ত্র রাখার অধিকার আছে তার দেশের।
প্রতিবছর পরমাণু সরঞ্জাম ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সামরিক মহড়ার বিষয়টি তুলে ধরেন কিম ইন-রিয়ং। তিনি বলেন, এর চেয়েও বেশি ভয়ংকর হলো, ‘আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের পতন ঘটাতে গোপন অভিযান’ পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র।
দেশটির নেতা কিম জং-উন দাবি করেছেন, এ বছর উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক বাহিনীর গঠন সম্পন্ন করেছে। পরমাণু বোমার পাশাপাশি তারা হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা করেছে। এ ছাড়া আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) তৈরি করেছে, যা ছোট আকারের পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম এবং এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে হামলায় ব্যবহার করা যাবে।
কিম জং-উনের এমন দাবির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের ওপর হামলা চালালে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। একই ভাষায় ট্রাম্পের হুমকির জবাব দিয়েছেন কিম জং-উন, বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার পবিত্র ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিতেও আগ্রাসন চালালে বিশ্বের যেকোনো অংশ আমাদের নির্মম হামলার হাত থেকে রেহাই পাবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রোববার বলেছেন, উত্তর কোরিয়ায় প্রথম বোমা পড়ার আগ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, জাতিসংঘ নিরস্ত্রীকরণ কমিটিকে কিম ইন-রিয়ং পরিষ্কার করেছেন, উত্তর কোরিয়াও পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব চায়। কিন্তু এ অবস্থায় তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র হাতছাড়া করবে না।
তিনি বলেছেন, ‘যত দিন যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতামূলক নীতি ও পরমাণু হামলার হুমকি সম্পূর্ণ নির্মূল না হচ্ছে, তত দিন যেকোনো অবস্থায় আমরা আমাদের পরমাণু অস্ত্র ও আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী রকেট নিয়ে আলোচনার টেলিবে বসব না।’
কিম ইন-রিয়ংয়ের এই বক্তব্যের পর মঙ্গলবার মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন জে. জুলিভান বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সরসারি আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।’ জাপানের টোকিওতে সেদেশের কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যসূত্র : আলজাজিরা অনলাইন