ঢাকা ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গাদের অমানবিক আচরণ শিবিরদের থাকা অবস্থা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৭:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৭
  • ২২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হলে জীবন বাঁচাতে এ পর্যন্ত সাড়ে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন শিবিরে তারা আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও শিবিরে থাকা এসব রোহিঙ্গারা এখন অমানবিক আচরণ করছে। তাদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসা, পাচার এমনকি মানব পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, শিবিরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে রোহিঙ্গারা। এমতাবস্থায় যে কোনো মুহূর্তে হানাহানি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে শিবিরগুলোতে।

সেনা অভিযানে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে বা জিরোলাইনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর ঢল প্রতিদিনই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। আর সেই তৎপরতায় সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমার অংশে একটি ‘সেফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গারা এদেশে আসে। এর পর ১৯৯১ সালে আসে ব্যাপক হারে। এরপর নানা সময়ে দফায় দফায় আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। বর্তমানে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। দেশে বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। এসব রোহিঙ্গাদের দেয়া হচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। তাদের জন্য কক্সবাজারে চলছে মেগা প্রকল্প কার্যক্রম। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, বস্ত্রসহ নানা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উদ্বাস্তু শিবির। তাদের জন্য থাকবে নিজস্ব হাসপাতাল। কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের বুথে সামর্থ্যহীন শরণার্থীরা বিনামূল্যে ফোন করতে পারবেন।

এত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা দিন দিন আত্মঘাতী হয়ে উঠছে। শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গারা একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ আর অশ্লীল বাক্যে আশপাশের পরিবেশ নোংরা হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় অনিরাপদ বসতি হয়ে উঠেছে শিশুদের জন্য। তা ছাড়া যে কোনো মুহূর্তে হানাহানি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৫০ দিনে অন্তত ৩০ জনের কাছে পাওয়া গেছে ইয়াবা। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা প্রবেশ করায় কক্সবাজারে অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে অসাধু কিছু রোহিঙ্গা। আর এতে হাত রয়েছে স্থানীয় অপরাধীদেরও।

দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না করতেই উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে ইতিমধ্যে তারা ২১ দফা বাস্তবায়ন সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার প্রকাশ করেছে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা এলাকাসমুহে এসব ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে গেছে। ক্যাম্পের ভেতরে বাইরে প্রধান সড়কের পাশে এবং দর্শনীয় স্থানে লাগানো হয়েছে এ ব্যানার।

‘আমাদের ২১ দফা মানতে হবে’ রোহিঙ্গা অধিকার প্রতিষ্ঠা কমিটি, প্রতিষ্ঠা ২৫ আগস্ট ২০১৭, আবেদনে সকল রোহিঙ্গা জনগণ-শিরোনামে ২টি ছবি ও লোগো সংবলিত প্রচারিত ব্যানারে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় ২১ দফা উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়ায় টেকনাফ-উখিয়ার সাবেক এমপি ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, এসব ভালো লক্ষণ নয়। এই রোহিঙ্গাদের পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে। মহলটি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে তালেবান রাষ্ট্র বানাতে তৎপর। রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়ে তাদের দাবি বাস্তবায়নে বড় বড় ডিজিটাল ব্যানার প্রচার করবে তা দুঃখজনক। শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের এসব কার্যক্রম ভালো চোখে দেখছে না রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে এ বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ পড়ার কারণে দেশের সামাজিক অর্থনৈতিকসহ নানা ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিমত কমিটির।

রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা প্রতিদিন নানা অপরাধ সংঘটিত করছে। আমাদের দেশের পরিবেশ ধ্বংস করে দিচ্ছে। যেহেতু তাদের জন্য এ দেশে বৈধ কোনো কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়নি তাই তারা স্বাভাবিকভাবে অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। দেশের স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে আমরা প্রস্তুত।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন খান জানান, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছি। ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছি। জনবল কম হওয়ায় কাজে একটু বেগ পেতে হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কক্সবাজারের এসপি ড. একে এম ইকবাল হোসেন জানান, কক্সবাজারে চুরি, ডাকাতি সাগরে দস্যুতাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার ওপর যদি আরো রোহিঙ্গা আসে তাহলে আইনশৃঙ্খলার আরো অবনতি ঘটবে। তবে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে।
কক্সবাজারের ডিসি মো. আলী হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সব সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। তাই আমরা মনে করি মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্কই থাকবে। তার পরও দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে অবশ্যই আমরা সতর্ক থাকব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অমানবিক আচরণ শিবিরদের থাকা অবস্থা

আপডেট টাইম : ১০:৫৭:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হলে জীবন বাঁচাতে এ পর্যন্ত সাড়ে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন শিবিরে তারা আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও শিবিরে থাকা এসব রোহিঙ্গারা এখন অমানবিক আচরণ করছে। তাদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসা, পাচার এমনকি মানব পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, শিবিরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে রোহিঙ্গারা। এমতাবস্থায় যে কোনো মুহূর্তে হানাহানি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে শিবিরগুলোতে।

সেনা অভিযানে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে বা জিরোলাইনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর ঢল প্রতিদিনই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। আর সেই তৎপরতায় সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমার অংশে একটি ‘সেফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গারা এদেশে আসে। এর পর ১৯৯১ সালে আসে ব্যাপক হারে। এরপর নানা সময়ে দফায় দফায় আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। বর্তমানে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। দেশে বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। এসব রোহিঙ্গাদের দেয়া হচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। তাদের জন্য কক্সবাজারে চলছে মেগা প্রকল্প কার্যক্রম। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, বস্ত্রসহ নানা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উদ্বাস্তু শিবির। তাদের জন্য থাকবে নিজস্ব হাসপাতাল। কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের বুথে সামর্থ্যহীন শরণার্থীরা বিনামূল্যে ফোন করতে পারবেন।

এত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা দিন দিন আত্মঘাতী হয়ে উঠছে। শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গারা একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ আর অশ্লীল বাক্যে আশপাশের পরিবেশ নোংরা হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় অনিরাপদ বসতি হয়ে উঠেছে শিশুদের জন্য। তা ছাড়া যে কোনো মুহূর্তে হানাহানি ও মারামারিতে লিপ্ত হয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৫০ দিনে অন্তত ৩০ জনের কাছে পাওয়া গেছে ইয়াবা। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা প্রবেশ করায় কক্সবাজারে অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। ইয়াবা ব্যবসা ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে অসাধু কিছু রোহিঙ্গা। আর এতে হাত রয়েছে স্থানীয় অপরাধীদেরও।

দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না করতেই উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে ইতিমধ্যে তারা ২১ দফা বাস্তবায়ন সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার প্রকাশ করেছে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা এলাকাসমুহে এসব ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে গেছে। ক্যাম্পের ভেতরে বাইরে প্রধান সড়কের পাশে এবং দর্শনীয় স্থানে লাগানো হয়েছে এ ব্যানার।

‘আমাদের ২১ দফা মানতে হবে’ রোহিঙ্গা অধিকার প্রতিষ্ঠা কমিটি, প্রতিষ্ঠা ২৫ আগস্ট ২০১৭, আবেদনে সকল রোহিঙ্গা জনগণ-শিরোনামে ২টি ছবি ও লোগো সংবলিত প্রচারিত ব্যানারে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় ২১ দফা উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়ায় টেকনাফ-উখিয়ার সাবেক এমপি ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, এসব ভালো লক্ষণ নয়। এই রোহিঙ্গাদের পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে। মহলটি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে তালেবান রাষ্ট্র বানাতে তৎপর। রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়ে তাদের দাবি বাস্তবায়নে বড় বড় ডিজিটাল ব্যানার প্রচার করবে তা দুঃখজনক। শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের এসব কার্যক্রম ভালো চোখে দেখছে না রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে এ বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ পড়ার কারণে দেশের সামাজিক অর্থনৈতিকসহ নানা ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিমত কমিটির।

রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা প্রতিদিন নানা অপরাধ সংঘটিত করছে। আমাদের দেশের পরিবেশ ধ্বংস করে দিচ্ছে। যেহেতু তাদের জন্য এ দেশে বৈধ কোনো কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়নি তাই তারা স্বাভাবিকভাবে অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। দেশের স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে আমরা প্রস্তুত।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন খান জানান, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছি। ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছি। জনবল কম হওয়ায় কাজে একটু বেগ পেতে হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কক্সবাজারের এসপি ড. একে এম ইকবাল হোসেন জানান, কক্সবাজারে চুরি, ডাকাতি সাগরে দস্যুতাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার ওপর যদি আরো রোহিঙ্গা আসে তাহলে আইনশৃঙ্খলার আরো অবনতি ঘটবে। তবে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে।
কক্সবাজারের ডিসি মো. আলী হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সব সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। তাই আমরা মনে করি মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্কই থাকবে। তার পরও দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে অবশ্যই আমরা সতর্ক থাকব।