ঢাকা ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তান রাষ্ট্র তার সৃষ্টির লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩৫৩ বার

কেন পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়েছিল? এই প্রশ্ন তুলল সে দেশেরই প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালিত ছিল গতকাল শুক্রবার। সেদিনই আত্মসমীক্ষার সুরে ‘এ নিউ রোডম্যাপ’ শিরোনামে সম্পাদকীয়তে এই জিজ্ঞাসা সংবাদপত্রটির।

হতাশার সুরে ওই সম্পাদকীয়র অভিমত, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার ‘অভিনব স্বপ্ন’ থেকে বিচ্যুত হয়েছে পাকিস্তান। তারা বলেছে, এবারের ১৪ আগস্ট আমাদের ভাবতে বসা উচিত, কেন পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল, কীভাবে আমরা সেই লক্ষ্য থেকে সরে গিয়েছি।

১৯৪৭-এ পাকিস্তান গঠনের পর তার প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ বলেছিলেন, শুধু ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক অর্থেও এ দেশে হিন্দুরা হিন্দু থাকবে না, মুসলিমরা আর মুসলিম থাকবে না। ধর্ম প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার।

পাক সংবাদপত্রটি বলেছে, পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল সংখ্যালঘুদের অর্থাৎ ভারতের মুসলিমদের অধিকার রক্ষা করতে। সুতরাং এটাই প্রত্যাশিত ছিল যে, আগামী দিনে মুসলিম ছাড়া নতুন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির অধিকারও সুরক্ষিত রাখবে পাকিস্তান। কিন্তু সেই মহান স্বপ্ন থেকে কীভাবে যে আমরা বিচ্যুত হলাম, সে এক ট্র্যাজিক কাহিনি যা নতুন করে বলার দরকার হয় না।

আমাদের সংখ্যালঘুদের আমরা যে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছি, এটা শুধু ওদের উপেক্ষা করাই নয়। ওদের ওপর সঙ্ঘবদ্ধ হামলাও ঠেকাতে পারিনি, প্রয়োজনীয় আইনও তৈরি করতে পারিনি আমরা।

যদিও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলিকে আরও বড় স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত ১১ আগস্ট পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ও সিনেটে প্রস্তাব গৃহীত হওয়াকে ‘ভাল খবর’ বলেছে সংবাদপত্রটি।

এও বলেছে, হয়ত প্রস্তাবিত জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এই ভুলে যাওয়া মানুষগুলিকে পাকিস্তানি নাগরিকের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারবে, যাঁরা সমান অধিকার, সুরক্ষা চাইতে পারেন। সেইসঙ্গে স্বীকার করেছে, তবে এই মূহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে কিছুই তেমন বদলায়নি। সংখ্যালঘু হত্যা, ওদের ওপর অন্যান্য অপরাধ, হিংসার ঘটনা নিয়মিত ঘটেই চলেছে। পাকিস্তানের সবুজ পতাকার সাদা অংশটি সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু গত কয়েক দশক জুড়ে সেখানে একাধিকবার রক্তের দাগ লেগেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তান রাষ্ট্র তার সৃষ্টির লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত

আপডেট টাইম : ১১:২০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৫

কেন পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়েছিল? এই প্রশ্ন তুলল সে দেশেরই প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালিত ছিল গতকাল শুক্রবার। সেদিনই আত্মসমীক্ষার সুরে ‘এ নিউ রোডম্যাপ’ শিরোনামে সম্পাদকীয়তে এই জিজ্ঞাসা সংবাদপত্রটির।

হতাশার সুরে ওই সম্পাদকীয়র অভিমত, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার ‘অভিনব স্বপ্ন’ থেকে বিচ্যুত হয়েছে পাকিস্তান। তারা বলেছে, এবারের ১৪ আগস্ট আমাদের ভাবতে বসা উচিত, কেন পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল, কীভাবে আমরা সেই লক্ষ্য থেকে সরে গিয়েছি।

১৯৪৭-এ পাকিস্তান গঠনের পর তার প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ বলেছিলেন, শুধু ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক অর্থেও এ দেশে হিন্দুরা হিন্দু থাকবে না, মুসলিমরা আর মুসলিম থাকবে না। ধর্ম প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার।

পাক সংবাদপত্রটি বলেছে, পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল সংখ্যালঘুদের অর্থাৎ ভারতের মুসলিমদের অধিকার রক্ষা করতে। সুতরাং এটাই প্রত্যাশিত ছিল যে, আগামী দিনে মুসলিম ছাড়া নতুন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির অধিকারও সুরক্ষিত রাখবে পাকিস্তান। কিন্তু সেই মহান স্বপ্ন থেকে কীভাবে যে আমরা বিচ্যুত হলাম, সে এক ট্র্যাজিক কাহিনি যা নতুন করে বলার দরকার হয় না।

আমাদের সংখ্যালঘুদের আমরা যে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছি, এটা শুধু ওদের উপেক্ষা করাই নয়। ওদের ওপর সঙ্ঘবদ্ধ হামলাও ঠেকাতে পারিনি, প্রয়োজনীয় আইনও তৈরি করতে পারিনি আমরা।

যদিও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলিকে আরও বড় স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত ১১ আগস্ট পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ও সিনেটে প্রস্তাব গৃহীত হওয়াকে ‘ভাল খবর’ বলেছে সংবাদপত্রটি।

এও বলেছে, হয়ত প্রস্তাবিত জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এই ভুলে যাওয়া মানুষগুলিকে পাকিস্তানি নাগরিকের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পারবে, যাঁরা সমান অধিকার, সুরক্ষা চাইতে পারেন। সেইসঙ্গে স্বীকার করেছে, তবে এই মূহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে কিছুই তেমন বদলায়নি। সংখ্যালঘু হত্যা, ওদের ওপর অন্যান্য অপরাধ, হিংসার ঘটনা নিয়মিত ঘটেই চলেছে। পাকিস্তানের সবুজ পতাকার সাদা অংশটি সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু গত কয়েক দশক জুড়ে সেখানে একাধিকবার রক্তের দাগ লেগেছে।