হাওর বার্তা ডেস্কঃ বন্যায় ডুবে গেছে দেশের অনেক এলাকা। ডুবে গেছে বাড়িঘর, সেই সঙ্গে নলকূপ, পানির ট্যাংকও। নদী, খাল, বিল, পুকুরের পানি সব একাকার। এ রকম অবস্থায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় সবচেয়ে মারাত্মক আকারে। কেননা, চারদিকে পানি আর পানি দেখা গেলে কী হবে, খাওয়ার মতো নিরাপদ পানি নেই কোথাও। তাহলে কী করবেন?
এমন বন্যার সময় যেখানেই থাকুন, নিজের, নিজের পরিবারের, বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকটা দেখুন। বাড়ি ছাড়ার সময় সম্ভব হলে শুকনো খাবার (চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট ইত্যাদি) সঙ্গে নিন। ফোটানো পানিও সঙ্গে নিন। যেকোনো পানিই (এমনকি দৃশ্যমান নোংরা পানি) ফুটিয়ে নিলে জীবাণুমুক্ত হয়ে যায়। ময়লা মিশে থাকলে তা পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিলে হবে। জীবাণুমুক্ত করার জন্য খাওয়ার পানি ফুটে ওঠার বা বলক ওঠার পর আরও অন্তত এক মিনিট জ্বাল দিতে হবে।
পানি ফোটানোর মতো সুব্যবস্থা না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ক্লোরিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা যায়। দুই লিটার পানি বিশুদ্ধ করতে পাঁচ ফোঁটা ব্লিচ অথবা এক গ্যালন পানি বিশুদ্ধ করতে আট ভাগের এক চামচ ব্লিচ লাগে। ব্লিচ মেশানোর পর ভালো করে পানিটুকু ঝাঁকাতে হবে। তারপর আধঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এবার যে তলানি পড়বে, তা থেকে ওপরের পরিষ্কার পানি সরিয়ে নিন। এবার এটা পান করার উপযুক্ত। ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়। সে ক্ষেত্রে ট্যাবলেটের পাতায় নির্দেশিত ব্যবহারবিধি মেনে চলুন।
এর বাইরে বৃষ্টির পানি, ঝরনার পানি পান করা মোটামুটি নিরাপদ। একটি পরিষ্কার পাত্র বা কনটেইনারে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যেতে পারে।
ডুবে যাওয়া নলকূপ থেকে পানি পান করা উচিত নয়। বন্যার পানি নেমে গেলে নলকূপটি বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও সাহায্য বিতরণের সময় যথেষ্ট পরিমাণ বোতলজাত পানি, ক্লোরিন ট্যাবলেট ও ওরস্যালাইন সংগ্রহ করা জরুরি। কেননা, বন্যার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কলেরা, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস ইত্যাদি পানিবাহিত রোগের প্রকোপ যায় বেড়ে এবং এতে মৃত্যুহারও কম নয়। বন্যাকবলিত এলাকায় নিরাপদ পানি ও খাবার সরবরাহে দেশের সবার এই মুহূর্তেই এগিয়ে আসা উচিত।