ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

সালমান শাহ খুন হয়েছিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি। তিনি খুন হয়েছিলেন’। ফেসবুক ভিডিওতে এ দাবি করেছেন রুবি নামে এক নারী। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সব জানেন উল্লেখ করে বলেন, মামলাটি আবার সচল হওয়ায় তিনি হুমকিতে রয়েছেন। গতকাল ফেসবুকের ওই ভিডিও বার্তায় রুবি বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার (সালমান শাহের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ এ নারীর ভিডিও বক্তব্য ফেসবুকে আসার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়।
মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমা করে নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আলোড়ন তুলেছিলেন নায়ক সালমান শাহ। এসব সিনেমার বেশিরভাগই ছিল আলোচিত এবং ব্যবসা সফল। তিনি এমনই এক তারকা যিনি মৃত্যুর ২১ বছর পরও রয়েছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীকে টেলিফোন করে বলা হলো তার ছেলের বাসায় যেতে। টেলিফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে সালমান শাহর বাসায় রওনা হন। সালমানের ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান নীলা চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তার এই মৃত্যু ‘আত্মহত্যা নাকি হত্যা’ তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে ভক্তদের মাঝে। এবার রুবি নামে এক নারী নিজ মুখে স্বীকার করলেন সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। তিনি একটি ভিডিও গতকাল ইউটিউবে প্রকাশের পর তা ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্ট-সালমান শাহর আত্মহত্যা না মার্ডার। ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। আমার হাজব্যান্ড করাইছে এটা আমার ভাইরে দিয়ে, এটা সামিরার (সালমানের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ প্রকাশিত ভিডিওতে রুবির দাবি, তিনি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যার কাছে প্রমাণ আছে। রুবির পুরো নাম রাবেয়া সুলতানা রুবি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে চাইনিজ স্বামী ও দুই সন্তানসহ বসবাস করছেন। জানা গেছে, সালমান শাহ্‌? ওই নারীকে আন্টি ডাকতেন। রুবির বিউটি পার্লার ছিল। সালমান ও সামিরার সঙ্গে তার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমান মারা যাওয়া পর অনেকের মতো রুবিকেও পুলিশ সন্দেহ করে। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর থেকে রুবি বিদেশে আছেন। এর আগে অনেকবার দাবি করেন, সালমানের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না তিনি। তবে ভিডিওতে তিনি আতঙ্কের কথা বলছেন। রুবি জানান, জীবন হারানোর আশঙ্কায় আছেন তিনি। তার দাবি, সালমান শাহকে যে হত্যা করা হয় তার প্রমাণ তার কাছে আছে। তাই তাকেও মেরে ফেলা হতে পারে। কেন খুন করা হতে পারে রুবিকে? তার ভাষ্যে, কারণ আবার (সালমানের মৃত্যুরহস্য) কেস ওপেন হইছে।
প্রসঙ্গত: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় এই অভিনেতার ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের ফ্ল্যাট থেকে সালমান শাহর (শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন) লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন আত্মহত?্যা হিসেবে দেখে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করলেও তাতে আপত্তি জানায় সালমান শাহর পরিবার। সালমানের বাবা কমরুদ্দীন আহমেদ হত্যার অভিযোগ তোলেন। কমরউদ্দিনের মৃত্যুর পর সালমানের মা নীলা চৌধুরী ওই মামলা চালাচ্ছেন। পুত্রবধূ সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ যে ১১ জনকে ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আদালতে আবেদন করেন নীলা, তারই একজন রুবি। ঘটনার পর দীর্ঘ সময়ে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যা বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হলেও সালমানের পরিবারের পক্ষ থেকে বারবারই নারাজি আবেদন করে পুন:তদন্ত চাওয়া হয়। তার প্রেক্ষিতে গত বছর তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেয় আদালত।
এদিকে রুবির ওই ভিডিও বার্তার পর পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) আবুল কালাম আজাদ বলেন, রুবি ছিলেন সালমান শাহ’র বিউটিশিয়ান। তিনি এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। রুবির সঙ্গে আমরাও যোগাযোগের চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি দেশে নেই। এ কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি যে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তা বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। আলোচিত এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আবুল কালাম আজাদ বলেন, সালমান শাহ হত্যা মামলাটি কয়েক পর্যায়ে তদন্ত হয়েছে। বর্তমানে এটি পিবিআই তদন্ত করছে। অনেক আলামতও নষ্ট হয়েছে। যে কারণে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ  বেগ পেতে হচ্ছে।
পিবিআই কর্মকর্তা আজাদ বলেন, তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে তারা যে ‘ডকেট’ পেয়েছেন  সেখানে প্রয়োজনীয় অনেক আলামত পাননি তারা। সালমান শাহ’র মরদেহের কোনো ছবি না পাওয়ার কথাও বলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করলেও ডকেটে মাত্র চারজনের সাক্ষীর কাগজপত্র আমরা পেয়েছি। আরো সাক্ষীর সাক্ষ্য থাকার কথা ছিল। একটি অপমৃত্যুর মামলা এতদিন ধরে তদন্ত করার নজির নেই। অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

সালমান শাহ খুন হয়েছিল

আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি। তিনি খুন হয়েছিলেন’। ফেসবুক ভিডিওতে এ দাবি করেছেন রুবি নামে এক নারী। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সব জানেন উল্লেখ করে বলেন, মামলাটি আবার সচল হওয়ায় তিনি হুমকিতে রয়েছেন। গতকাল ফেসবুকের ওই ভিডিও বার্তায় রুবি বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার (সালমান শাহের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ এ নারীর ভিডিও বক্তব্য ফেসবুকে আসার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়।
মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমা করে নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আলোড়ন তুলেছিলেন নায়ক সালমান শাহ। এসব সিনেমার বেশিরভাগই ছিল আলোচিত এবং ব্যবসা সফল। তিনি এমনই এক তারকা যিনি মৃত্যুর ২১ বছর পরও রয়েছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীকে টেলিফোন করে বলা হলো তার ছেলের বাসায় যেতে। টেলিফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে সালমান শাহর বাসায় রওনা হন। সালমানের ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান নীলা চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তার এই মৃত্যু ‘আত্মহত্যা নাকি হত্যা’ তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে ভক্তদের মাঝে। এবার রুবি নামে এক নারী নিজ মুখে স্বীকার করলেন সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। তিনি একটি ভিডিও গতকাল ইউটিউবে প্রকাশের পর তা ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্ট-সালমান শাহর আত্মহত্যা না মার্ডার। ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। আমার হাজব্যান্ড করাইছে এটা আমার ভাইরে দিয়ে, এটা সামিরার (সালমানের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ প্রকাশিত ভিডিওতে রুবির দাবি, তিনি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যার কাছে প্রমাণ আছে। রুবির পুরো নাম রাবেয়া সুলতানা রুবি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে চাইনিজ স্বামী ও দুই সন্তানসহ বসবাস করছেন। জানা গেছে, সালমান শাহ্‌? ওই নারীকে আন্টি ডাকতেন। রুবির বিউটি পার্লার ছিল। সালমান ও সামিরার সঙ্গে তার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমান মারা যাওয়া পর অনেকের মতো রুবিকেও পুলিশ সন্দেহ করে। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর থেকে রুবি বিদেশে আছেন। এর আগে অনেকবার দাবি করেন, সালমানের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না তিনি। তবে ভিডিওতে তিনি আতঙ্কের কথা বলছেন। রুবি জানান, জীবন হারানোর আশঙ্কায় আছেন তিনি। তার দাবি, সালমান শাহকে যে হত্যা করা হয় তার প্রমাণ তার কাছে আছে। তাই তাকেও মেরে ফেলা হতে পারে। কেন খুন করা হতে পারে রুবিকে? তার ভাষ্যে, কারণ আবার (সালমানের মৃত্যুরহস্য) কেস ওপেন হইছে।
প্রসঙ্গত: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় এই অভিনেতার ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের ফ্ল্যাট থেকে সালমান শাহর (শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন) লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন আত্মহত?্যা হিসেবে দেখে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করলেও তাতে আপত্তি জানায় সালমান শাহর পরিবার। সালমানের বাবা কমরুদ্দীন আহমেদ হত্যার অভিযোগ তোলেন। কমরউদ্দিনের মৃত্যুর পর সালমানের মা নীলা চৌধুরী ওই মামলা চালাচ্ছেন। পুত্রবধূ সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ যে ১১ জনকে ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আদালতে আবেদন করেন নীলা, তারই একজন রুবি। ঘটনার পর দীর্ঘ সময়ে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যা বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হলেও সালমানের পরিবারের পক্ষ থেকে বারবারই নারাজি আবেদন করে পুন:তদন্ত চাওয়া হয়। তার প্রেক্ষিতে গত বছর তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেয় আদালত।
এদিকে রুবির ওই ভিডিও বার্তার পর পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) আবুল কালাম আজাদ বলেন, রুবি ছিলেন সালমান শাহ’র বিউটিশিয়ান। তিনি এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। রুবির সঙ্গে আমরাও যোগাযোগের চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি দেশে নেই। এ কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি যে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তা বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। আলোচিত এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আবুল কালাম আজাদ বলেন, সালমান শাহ হত্যা মামলাটি কয়েক পর্যায়ে তদন্ত হয়েছে। বর্তমানে এটি পিবিআই তদন্ত করছে। অনেক আলামতও নষ্ট হয়েছে। যে কারণে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ  বেগ পেতে হচ্ছে।
পিবিআই কর্মকর্তা আজাদ বলেন, তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে তারা যে ‘ডকেট’ পেয়েছেন  সেখানে প্রয়োজনীয় অনেক আলামত পাননি তারা। সালমান শাহ’র মরদেহের কোনো ছবি না পাওয়ার কথাও বলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করলেও ডকেটে মাত্র চারজনের সাক্ষীর কাগজপত্র আমরা পেয়েছি। আরো সাক্ষীর সাক্ষ্য থাকার কথা ছিল। একটি অপমৃত্যুর মামলা এতদিন ধরে তদন্ত করার নজির নেই। অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেছে।