হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানী ঢাকায় টানা বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে এবার বাড়ির নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক করতে মত দিয়েছেন পরিবেশবিদ ও পানিসম্পদ প্রকৌশলীরা। যাতে বৃষ্টির কারণে সড়কে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ অনেকাংশেই, প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
সেইসাথে সংরক্ষণ করে রাখা বৃষ্টির পানি দিয়েই ঢাকায় পানির চাহিদার অন্তত ১৫ শতাংশ মেটানো যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এজন্য রাজউকের ২০০৮ সালের ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন করে ‘ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিবর্তন, সংরক্ষণ, অপসারণ) বিধিমালা-২০১৬’ নামে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সংস্থার পরিকল্পনা সদস্যসচিব জিয়াউল হাসান।
তিনি বলেছেন, সংশোধিত বিধিমালায় বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও ভূগর্ভস্থ পানি রিচার্জ করার জন্য বিধান রাখা হয়েছে। বিধিতে বলা হয়েছে, নির্মীয়মান ইমারতের ছাদে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং তা ব্যবহারের জন্য এই ব্যবস্থা ইমারত কনস্ট্রাকশনের অংশ হিসেবে গণ্য হবে। ভবন নির্মাণের জন্য যখন আমরা অনুমোদন দেব, তখন আবশ্যিকভাবে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং ব্যবহারে উদ্দেশে রিচার্জ সামগ্রী থাকবে এমন শর্ত থাকতে হবে।
ভবনের গ্রাউন্ডে যে এলাকা থাকবে তার পরিমাণ ৫০০ বর্গমিটার বা তার বেশি হলে এ বিধানের বাধ্যবাধকতা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, গেজেট আকারে বিধিমালা প্রকাশের পর ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে।
পানি সংকট মেটাতে প্রতিবেশি ভারতসহ বিশ্বের অনেকও দেশে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে প্রধানত নির্ভর করে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর। ফলে প্রতি বছরই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কয়েক মিটার করে নিচে নেমে যাচ্ছো।
তবে বাংলাদেশের অনেক গ্রামাঞ্চলেও যুগ যুগ ধরে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পর ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বড় শহরে এর খুব বেশি চল নেই।
কিন্তু সম্প্রতি জলবায়ুর পরিবর্তন, পানির চাহিদা বৃদ্ধি, সুপেয় পানির উৎস্য হ্রাস এবং টানা বৃষ্টিতে রাজধানীতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ব্যাপক জনদুর্ভোগ বৃষ্টির পানি নিয়ে নতুন করে ভাবনার প্রেক্ষাপট তৈরি করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর প্রতিটি ভবনের ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে রাজউক।