অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন প্রতিদিন ৫বার কেন নামাজ আদায় করতে হবে। এতে কাজেরও ক্ষতি হয়ে থাকে ইত্যাদি। আল্লাহর আনুগত্য দিনে একবার করলেই তো হয়। ডা. জাকির নায়েক তার এক লেকচারে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বক্তব্যটি তুলে ধরা হলো।
সালাত হল সৎকাজের জন্য একধরনের প্রশিক্ষণ বা প্রোগ্রামিং। আর প্রশিক্ষণের মূল জিনিশটিই হল কোন একটি কাজ বার বার করা বা পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে তা আয়ত্ত করা। তাই আমদেরও সালাত আদায় করতে হয় দৈনিক কমপক্ষে পাঁচবার। উদাহারণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য অর্থাৎ সুস্বাস্থ্যের জন্য দৈনিক কমপক্ষে তিন বেলা খাবার খেতে হয় আমাদের। একইভাবে আত্তাকে সুস্থ রাখার জন্য দৈনিক পাঁচবার নামাজ পড়া দরকার আমাদের। এছাড়াও সমাজে যেহেতু পাপের ছড়াছড়ি তাই নামাজের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে নিয়মিত প্রশিক্ষণ না নিলে সিরাত-উল-মুস্তাকিম অর্থাৎ সৎপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পরার সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের। তাই দৈনিক কমপক্ষে পাঁচবার নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ বা বাধ্যতামূলক।
ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকলে আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, একটা লোক নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে পারে না। একটা লোক যদি সকাল ৯’টায় অফিসে এসে সন্ধ্যা ৬’টা পর্যন্ত টানা কাজ করতে থাকে, তবে তার কর্ম উৎপাদনশীলতা বাড়ার পরিবর্তে কমে যেতে পারে। আর এ কারণেই অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সংক্ষিপ্ত বিরতির ব্যবস্থা রাখা হয়, যাতে করে নিজেদের চাঙ্গা করে নিতে পারি আমরা। একইভাবে নামাজও আমাদের চাঙ্গা করে আমাদের কর্ম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটা আমদের শরীর ও মনকে সতেজ করে তুলে। একজন মুসলমানের জন্য নামাজ হল এক প্রকারের বিনোদন।
এখন কেউ যদি বলে যে, কাজের ফাঁকে ১৫ মিনিট একটা লাঞ্চ ব্রেক নিলে সময়ের অপচয় হয়, উৎপাদনশীলতা কমে যায় তবে সেটা হবে অযৌক্তিক। একইভাবে কেউ যদি কাজের ফাঁকে নামাজটা আদায় করে নেয় নিয়মিত, তবে তার হয়ত অল্প কিছুক্ষণের জন্য কাজ বন্ধ রাখতে হতে পারে, কিন্তু নামাজ আদায় করে সে যখন চাঙ্গা মন নিয়ে আবার কাজে ফিরবে, তখন মোট উৎপাদনশীলতা বেড়ে যাবে তার। তাই একজন যৌক্তিক ও আধুনিক মানুষের এটা মেনে নেওয়া উচিত যে অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রয়োজনীয় বিরতির ব্যবস্থা রাখা দরকার যাতে করে কর্মীরা চাঙ্গা করে নিতে পারে নিজেদের, আর একজন মুসলমানের জন্য নামাজ হল নিজেকে সতেজ ও চাঙ্গা করে তোলার সর্বোত্তম মাধ্যম।