কমছে না বেকারত্ব, চাকরিতে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ

বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমছে না বেকারত্ব। তবে চাকরিতে নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বাড়ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক তথ্য বলছে, ২০১৩ সালে দেশে যত মানুষ বেকার ছিল, তিন বছর পরও তার কোনো উন্নতি হয়নি। যদিও এই সময়ের মধ্যে নতুন চাকরি হয়েছে ১৪ লাখ মানুষের। আর সম পরিমাণ মানুষ শ্রমশক্তি হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।

রবিবার পরিসংখ্যান অধিদপ্তর মিলনায়তনে ‘ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ’ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়। এ সময় জানানো হয়, আলোচ্য সময়ের তিন বছরে দেশে নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে ১৪ লাখ।

নতুন জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট ৬ কোটি ২১ লাখ শ্রমশক্তির মধ্যে ২৬ লাখ লোক বেকার। বাকি ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের হাতে কাজ আছে। ২০১০ ও ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপেও বেকারত্বের হার একই ছিল।

শ্রম জরিপের তুলনায় বর্তমান সময়ে শ্রমশক্তি ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত একবছরব্যাপী একলাখ ২৩ হাজার খানা থেকে বিবিএস তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর আগে ২০১৩ সালের জপিপে ৩৬ হাজার খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আমীর হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিও ফ্যান প্রমুখ।

প্রথম বারের মতো এবারের জরিপে বিশ্বব্যাংকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে পরিসংখ্যান অধিদপ্তর।

চাকরিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে

বেকারত্বের হারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না হলেও পড়াশোনার মত চাকরিতেও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে বেরিয়ে এসেছে জরিপে। ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এই তিন বছরে শতকরা হিসাবে এটি ২.১ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের হিসাবে ২০১৩ সালে চাকরিতে নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ছিলো ৩৩.৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ৩৫.৬ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আলোচ্য সময়ে অবৈতনিক গৃহকর্মীর হার কমেছে ১৮.৯ শতাংশ। ২০১৩ সালে এক কোটি ছয় লাখ ছিল অবৈতনিক কর্মী। সেটা ২০১৬ সালে কমে দাঁড়ায় ৮৪ লাখে।

বিশেষজ্ঞের প্রতিক্রিয়া

জরিপ নিয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বারকাত এ খুদা ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘২০১৩ এর জরিপের সাথে ২০১৬ এর জরিপের সাথে তুলনা করে দেখেছি উল্লেখ যোগ্য কোন চমক নেই। নারী শ্রমশক্তি ৩৫% যে বেড়েছে বলা হচ্ছে তাতে পুরুষের অংশগ্রহণের অর্ধেকেরও কম এবং এটা গ্রামাঞলে বেড়েছে, শহরে কমে গেছে। কিন্তু এটার কোন সুর্নিদিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। এটার কারণ জানতে হবে। শহরে কেন নারীদের শ্রমশক্তি কমে যাচ্ছে। এছাড়া যারা শিক্ষিত নারী তাদের মধ্যে কর্মক্ষমতা কেন কম। সেটা নিয়েও অনুসন্ধান করতে হবে।’

অধ্যাপক খুদা আরও বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যেোরা জরিপ করে অনেক বড় বড় তথ্যও জোগাড় করে। কিন্তু এই তথ্যগুলো আনতে হবে।’ প্রতিষ্ঠানটির জরিপে কোনো ত্রুটি আছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জরিপ ঠিক আছে। তবে আরো কোয়ালিটি বাড়াতে হবে। যেমন ২০১০ সালের জরিপে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ বেড়েছিল। পরে ২০১৩ তা কমে যায়। আবার নতুন জরিপে তা বেড়ে গেছে। এগুলো কি তথ্য অনুসন্ধানের কোন ভুল কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না ‘

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর