ঢাকা ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তিন মাস সময় দিল দুদক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩২:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০১৭
  • ২৬৭ বার

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে যে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করার তাগিদ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এসব কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ।

রবিবার রাজধানীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সভাকক্ষে আযোজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দুদক কমিশনার।

হাওরে বাঁধ মেরাতমে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে জনগণের সাথে কথা বলে যদি সন্তোষজনক ফলাফল না পাই তবে আমরা ওনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা স্বরূপ ওনাদের সম্পদের হিসাব নেয়া শুরু করব।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ইতিমধ্যে আমরা গিয়েছি। দুদক এ নিয়ে একটি অনুসন্ধান করছে এবং আমাদের একটি টিমও সেখানে গেছে। তদন্ত শেষের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা তাদের কে তিন মাসের মধ্যে প্রিপারেশেন নিতে বলেছি। এই সময়ে তাদের কিছু সামাজিক নিরীক্ষা করতে বলেছি। তাদের ঢাকা কেন্দ্রীক টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু আমরা বলেছি এটা জেলাকেন্দ্রীক হবে। একই সাথে কিছু দায়ী কর্মকর্তা, এদের বিরুদ্ধে আমরা আগেও কিছু দিয়েছি, এখন তাদেরকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ঠিকাদাররা যদি দায়ী থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া এবং সরকারি জনগণের টাকা যদি ঠিকাদাররা মিসইউজ করে থাকে তবে বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমরাও তথ্য ভিত্তিক কাজ করছি এবং এটা চলবে।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা তিন মাস ওনাদেরকে সময় দিয়েছি, এই তিন মাসের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ওনারা এটা করবেন। মূলত অফিসগুলোকে কীভাবে ট্রান্সপারেন্ট করা যায়। যেমন সুনামগঞ্জবাসী টেন্ডার পেল এখানে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া যায় কিনা। কারণ তাদের তো একটা লোকাল লায়াবেলিটি আছে, দায়িত্ব আছে। অন্য জায়গার লোক এখানে আসতে পারে। সবই তারা করবে, যেটা ঘটেছে এটা যেনো না হয়। পদ্ধতিগত কিছু বিষয় আছে, এগুলো ওনারা চেষ্টা করবেন এবং আমরাও কিছু কিছু আলাপ করে করব যাতে করে এটায় একটা জবাবদিহিতা থাকে।’

নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ঠিকাদারদের বিল পেমেন্ট অব্দি সেটারও মতামত দিবে স্থানীয় জনগণ। যেটাকে আমরা বলি সামজিক নিরীক্ষা। কিছু কৌশলের কথা তাদের বলেছি। গণশুনানি করে মানুষের সমস্যা সমাধানের যেনো চেষ্টা করেন। রিপোর্ট কার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামজিক দায়বদ্ধতা কৌশল আমরা এটার কথা বলেছি।’

এদিকে নিজেদের কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে স্বীকার করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর কবিরও। সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘দুদক আমাদেরকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন, কতগুলো পয়েন্টস বলেছে যেগুলো কারেকশনের কথা বলেছেন। সেগুলোতে আমরা ভবিষ্যতে সচেতন হব।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় হাওরের দুর্যোগ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান করছি, আমাদের বোর্ডের যদি কোন সম্পৃক্ততা থাকে তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে তিনজন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলে গেল। কারণ আমাদের এটা একটা ‍ডুবন্ত বাঁধ, এটা একসময় ডুববেই। সময়টা একটা ফ্যাক্টর যে কখন ডুববে। এখানেই সমস্যাটা হয়েছে। কারণ আমাদের দেশে সাধারণত যে সময়ে বৃষ্টিটা শুরু হওয়ার কথা তার থেকে আগেই শুরু হয়ে গেছে। তখনো জমির ফসল পরিপক্ক হয়নি। ফলে হাওরের ভিতরে আগেই পানি চলে আসাতে এই ড্যামেজ হয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখনি বলা যাচ্ছে না কী ধরণের অনিয়ম হয়েছে, তবে হাওরের পানি কমে গেলে তদন্ত করে দেখা যাবে আসলে কী ধরণের অনিয়ম হয়েছে। এখানে যাদেরই দোষ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তিন মাস সময় দিল দুদক

আপডেট টাইম : ১২:৩২:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০১৭

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে যে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করার তাগিদ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এসব কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ।

রবিবার রাজধানীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সভাকক্ষে আযোজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দুদক কমিশনার।

হাওরে বাঁধ মেরাতমে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে জনগণের সাথে কথা বলে যদি সন্তোষজনক ফলাফল না পাই তবে আমরা ওনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা স্বরূপ ওনাদের সম্পদের হিসাব নেয়া শুরু করব।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ইতিমধ্যে আমরা গিয়েছি। দুদক এ নিয়ে একটি অনুসন্ধান করছে এবং আমাদের একটি টিমও সেখানে গেছে। তদন্ত শেষের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা তাদের কে তিন মাসের মধ্যে প্রিপারেশেন নিতে বলেছি। এই সময়ে তাদের কিছু সামাজিক নিরীক্ষা করতে বলেছি। তাদের ঢাকা কেন্দ্রীক টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু আমরা বলেছি এটা জেলাকেন্দ্রীক হবে। একই সাথে কিছু দায়ী কর্মকর্তা, এদের বিরুদ্ধে আমরা আগেও কিছু দিয়েছি, এখন তাদেরকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ঠিকাদাররা যদি দায়ী থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া এবং সরকারি জনগণের টাকা যদি ঠিকাদাররা মিসইউজ করে থাকে তবে বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমরাও তথ্য ভিত্তিক কাজ করছি এবং এটা চলবে।’

দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমরা তিন মাস ওনাদেরকে সময় দিয়েছি, এই তিন মাসের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ওনারা এটা করবেন। মূলত অফিসগুলোকে কীভাবে ট্রান্সপারেন্ট করা যায়। যেমন সুনামগঞ্জবাসী টেন্ডার পেল এখানে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া যায় কিনা। কারণ তাদের তো একটা লোকাল লায়াবেলিটি আছে, দায়িত্ব আছে। অন্য জায়গার লোক এখানে আসতে পারে। সবই তারা করবে, যেটা ঘটেছে এটা যেনো না হয়। পদ্ধতিগত কিছু বিষয় আছে, এগুলো ওনারা চেষ্টা করবেন এবং আমরাও কিছু কিছু আলাপ করে করব যাতে করে এটায় একটা জবাবদিহিতা থাকে।’

নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ঠিকাদারদের বিল পেমেন্ট অব্দি সেটারও মতামত দিবে স্থানীয় জনগণ। যেটাকে আমরা বলি সামজিক নিরীক্ষা। কিছু কৌশলের কথা তাদের বলেছি। গণশুনানি করে মানুষের সমস্যা সমাধানের যেনো চেষ্টা করেন। রিপোর্ট কার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামজিক দায়বদ্ধতা কৌশল আমরা এটার কথা বলেছি।’

এদিকে নিজেদের কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে স্বীকার করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর কবিরও। সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘দুদক আমাদেরকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন, কতগুলো পয়েন্টস বলেছে যেগুলো কারেকশনের কথা বলেছেন। সেগুলোতে আমরা ভবিষ্যতে সচেতন হব।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় হাওরের দুর্যোগ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান করছি, আমাদের বোর্ডের যদি কোন সম্পৃক্ততা থাকে তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে তিনজন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলে গেল। কারণ আমাদের এটা একটা ‍ডুবন্ত বাঁধ, এটা একসময় ডুববেই। সময়টা একটা ফ্যাক্টর যে কখন ডুববে। এখানেই সমস্যাটা হয়েছে। কারণ আমাদের দেশে সাধারণত যে সময়ে বৃষ্টিটা শুরু হওয়ার কথা তার থেকে আগেই শুরু হয়ে গেছে। তখনো জমির ফসল পরিপক্ক হয়নি। ফলে হাওরের ভিতরে আগেই পানি চলে আসাতে এই ড্যামেজ হয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখনি বলা যাচ্ছে না কী ধরণের অনিয়ম হয়েছে, তবে হাওরের পানি কমে গেলে তদন্ত করে দেখা যাবে আসলে কী ধরণের অনিয়ম হয়েছে। এখানে যাদেরই দোষ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’