ঢাকা ১২:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে ২ লাখ কৃষক সর্বস্বান্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৭
  • ২৮২ বার

কিশোরগঞ্জে হাওর অঞ্চলের মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৩২৬ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ৫৭ হাজার ২৭ হেক্টর জমির বোরো ধান আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে ২ লাখ ১ হাজার ৩০৫ টন চাল উৎপাদিত হতো যার আর্থিক মূল্য ৮০৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৫ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলো হচ্ছে, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, নিকলী, বাজিতপুর, ভৈরব, তাড়াইল ও হোসেনপুর। এর মধ্যে গভীর হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ইটনা উপজেলায় ২৭ হাজার ৬৬৫ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৯ হাজার ৬৩০ হেক্টর, মিঠামইন উপজেলায় ১৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ২৪ হাজার ২১২ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৩০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তিন উপজেলার বাইরে নিকলীতে ৫ হাজার ৫৭৫ হেক্টর, করিমগঞ্জে ৩ হাজার ৪০ হেক্টর, তাড়াইলে ১ হাজার ২৯০ হেক্টর, বাজিতপুরে ৩৩৯ হেক্টর, ভৈরবে ১৫৩ হেক্টর ও হোসেনপুরে ৯০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকেরা সরকারি এই হিসাব মানতে নারাজ। তাদের দাবি, সরকারি হিসেবের চেয়ে প্রকৃত ক্ষতি আরো অনেক বেশি হবে। ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল ও করিমগঞ্জ এই ছয় উপজেলাতেই ক্ষতির পরিমাণ ৮০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা জানিয়েছেন।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, এই একটি মাত্র ফসলই তাদের আয়-ব্যয়ের একমাত্র উৎস। বোরো ধানের চালেই চলে তাদের সারাবছরের খোরাকি। এই ধান বিক্রি করেই তারা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, হাট-বাজারসহ জীবনধারণের যাবতীয় খরচ মেটান। এমনকি সন্তানের বিয়েশাদিসহ উৎসব-পার্বণের সব ধরনের খরচও আসে এই বোরো ফসল থেকে। ব্যাংক ঋণ, এনজিও ঋণ আর মহাজনি ঋণের ভার থেকেও তারা মুক্ত হন এই একটি মাত্র ফসল দিয়ে। কিন্তু এবার সব শেষ! ফসল ডুবে যাওয়ার কারণে হাওরে এখন ঘোর দুর্দিন। কৃষকের নজিরবিহীন এই বিপর্যয়ে সৃষ্টি হয়েছে গোখাদ্যের সংকট। খাদ্যের অভাবে গবাদি পশুগুলোকে পানির দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। কিন্তু পঞ্চাশ হাজার টাকার গরু বিশ-পঁচিশ হাজার টাকা দরে বিক্রি করতে গিয়েও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে মাথায় হাত পড়েছে হাঁসের খামারিদেরও। মড়কের আশঙ্কায় পানির দরে তারা বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক পরিশ্রমে লালন করা হাঁসের পাল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জে ২ লাখ কৃষক সর্বস্বান্ত

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

কিশোরগঞ্জে হাওর অঞ্চলের মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৩২৬ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ৫৭ হাজার ২৭ হেক্টর জমির বোরো ধান আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে ২ লাখ ১ হাজার ৩০৫ টন চাল উৎপাদিত হতো যার আর্থিক মূল্য ৮০৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৫ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলো হচ্ছে, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, নিকলী, বাজিতপুর, ভৈরব, তাড়াইল ও হোসেনপুর। এর মধ্যে গভীর হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ইটনা উপজেলায় ২৭ হাজার ৬৬৫ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৯ হাজার ৬৩০ হেক্টর, মিঠামইন উপজেলায় ১৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর এবং অষ্টগ্রাম উপজেলায় ২৪ হাজার ২১২ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ১৩ হাজার ৩০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তিন উপজেলার বাইরে নিকলীতে ৫ হাজার ৫৭৫ হেক্টর, করিমগঞ্জে ৩ হাজার ৪০ হেক্টর, তাড়াইলে ১ হাজার ২৯০ হেক্টর, বাজিতপুরে ৩৩৯ হেক্টর, ভৈরবে ১৫৩ হেক্টর ও হোসেনপুরে ৯০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকেরা সরকারি এই হিসাব মানতে নারাজ। তাদের দাবি, সরকারি হিসেবের চেয়ে প্রকৃত ক্ষতি আরো অনেক বেশি হবে। ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল ও করিমগঞ্জ এই ছয় উপজেলাতেই ক্ষতির পরিমাণ ৮০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা জানিয়েছেন।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, এই একটি মাত্র ফসলই তাদের আয়-ব্যয়ের একমাত্র উৎস। বোরো ধানের চালেই চলে তাদের সারাবছরের খোরাকি। এই ধান বিক্রি করেই তারা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, হাট-বাজারসহ জীবনধারণের যাবতীয় খরচ মেটান। এমনকি সন্তানের বিয়েশাদিসহ উৎসব-পার্বণের সব ধরনের খরচও আসে এই বোরো ফসল থেকে। ব্যাংক ঋণ, এনজিও ঋণ আর মহাজনি ঋণের ভার থেকেও তারা মুক্ত হন এই একটি মাত্র ফসল দিয়ে। কিন্তু এবার সব শেষ! ফসল ডুবে যাওয়ার কারণে হাওরে এখন ঘোর দুর্দিন। কৃষকের নজিরবিহীন এই বিপর্যয়ে সৃষ্টি হয়েছে গোখাদ্যের সংকট। খাদ্যের অভাবে গবাদি পশুগুলোকে পানির দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। কিন্তু পঞ্চাশ হাজার টাকার গরু বিশ-পঁচিশ হাজার টাকা দরে বিক্রি করতে গিয়েও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে মাথায় হাত পড়েছে হাঁসের খামারিদেরও। মড়কের আশঙ্কায় পানির দরে তারা বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক পরিশ্রমে লালন করা হাঁসের পাল।