প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে বন্যাকবলিত হাওর অঞ্চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর আরো বেশি প্রচারের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে একজন সিনিয়র মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমও সাংবাদিকদের প্রায় একই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বন্যাকবলিত দেশের বিস্তীর্ণ হাওর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনে সংশ্লিষ্টদের আরো তত্পর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ত্রাণসহ এ সংক্রান্ত অন্য যেসব মন্ত্রণালয় রয়েছে তারা যেন আরো তত্পর হয় সে ব্যাপারেও অনুশাসন দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কোন ধরনের তত্পরতার কথা বলেছেন—জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদসচিব জানান, পুনর্বাসনের জন্য যা প্রয়োজন, জনগণ যাতে সন্তুষ্ট হয় এবং মনে করে তাদের জন্য কিছু করা হচ্ছে, এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি। ত্রাণ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান করেছে, কাজও করছে। তারপর যেটা করছে সেটা যাতে সবাইকে জানানো হয়। অর্থাৎ ত্রাণ তত্পরতাকে প্রচারে নিয়ে আসা, এটা প্রধানমন্ত্রীর মেসেজ।
বাঁধ ভাঙা নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ আছে, এ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, বাঁধ নিয়ে আলোচনা হয়নি। অন্য ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে মানুষ ঠিকভাবে ত্রাণ পাচ্ছে কি না, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষেই হওরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। গতকাল তিনি নেত্রকোনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
হাওরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রচারের জন্যও প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, গত রবিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের কাছে কয়েকজন সচিব হাওরের ক্ষয়ক্ষতির যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। ওই বৈঠক শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান বলেছিলেন, ‘হাওরে বন্যায় এক হাজার ২৭৬ টন মাছ নষ্ট হয়েছে এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ জানিয়েছিলেন, ‘বন্যায় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যেখান থেকে ছয় লাখ টন চাল পাওয়া যেত। ’ এ ছাড়া পানিসম্পদ বিভাগের সচিব ড. জাফর আহমদও বিভিন্ন তথ্য জানান।