ঢাকা ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাটিয়ান হাওরেও ভাসছে মরা মাছ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০১৭
  • ২৪৯ বার

তাহিরপুরে হাওরের পানিতে মরে ভেসে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। এ সমস্ত মরা মাছ না খাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। অপরদিকে হাওরপাড়ের মানুষজনকে পঁচা ধানের দুর্গন্ধে নাক চেপে ধরে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, অকাল বন্যায় হাওরের কাঁচা ধান পঁচে পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়া এবং সেই সাথে এ্যামোনিয়া বেড়ে যাওয়ায় মাছের এ ধরনের মড়ক দেখা দিয়েছে। এভাবে মাছ মরতে থাকলে মাছের প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য হাওরে মৎস্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে হাওরবাসী। হাওর তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা মাছের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখন মাছ মরে যাওয়ায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে বলে কৃষকরা মনে করেন।
বৃহস্পতিবার সরজমিন বোর ফসল ডুবে যাওয়া মাটিয়ান হাওরে প্রচুর পরিমাণে মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখা যায়। ভেসে উঠা মরা মাছের মধ্যে ছিলো পুঁটি, টেংরা, মেনি, কাইলা, ঘনিয়া, বোয়াল, আইর সহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। তলিয়ে যাওয়া ধান ও পঁচা মাছের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে হাওরজুড়ে।
জানা যায়, গত ২৯ মার্চ থেকে পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে এবং পরবতী সময়ে বাঁধ উপচে এক এক করে তলিয়ে যায় উপজেলার ২২ টি হাওরের কাঁচা-পাকা বোরো ধান। ডুবে যাওয়ার পর ১৫ দিনের ব্যবধানে ধান পঁচে এখন হাওরে ‘অ্যামোনিয়া গ্যাস’ জন্ম দিয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাটিয়ান হাওরপার রতনশ্রী গ্রামের কৃষক মহিবুর রহমান জানান, ১৫ দিন আগে তাদের হাওরে কাঁচা ধান তলিয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার থেকে দেখছেন হাওরের পাড়ে নানা ধরনের মাছ মরে ভেসে উঠছে। সেই সাথে মরা মাছ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
আমরা হাওরবাসী সংগঠন তাহিরপুর সমন্বয়ক রুহুল আমীন বলেন, ফসল ডুবে যাওয়ার পর কৃষক স্বপ্ন দেখেছিল হাওরের মাছ আহরণ করে হাজার হাজার কৃষক জীবিকা নির্বাহ করবে। ফসলের পর মাছও যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে কৃষক জীবন চালাবে কি করে।
তাহিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন বলেন, কাঁচা ধান তলিয়ে যাওয়ায় ‘অ্যামোনিয়া’ নামের এক ধরনের গ্যাস সৃষ্টি হয়েছে। এ গ্যাসে এখন মাছ আক্রান্ত হচ্ছে এতে মাছ মারা যাচ্ছে। মরা মাছ না খাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করিয়েছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মাটিয়ান হাওরেও ভাসছে মরা মাছ

আপডেট টাইম : ০৫:৪১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০১৭

তাহিরপুরে হাওরের পানিতে মরে ভেসে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। এ সমস্ত মরা মাছ না খাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। অপরদিকে হাওরপাড়ের মানুষজনকে পঁচা ধানের দুর্গন্ধে নাক চেপে ধরে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, অকাল বন্যায় হাওরের কাঁচা ধান পঁচে পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়া এবং সেই সাথে এ্যামোনিয়া বেড়ে যাওয়ায় মাছের এ ধরনের মড়ক দেখা দিয়েছে। এভাবে মাছ মরতে থাকলে মাছের প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য হাওরে মৎস্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে হাওরবাসী। হাওর তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা মাছের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখন মাছ মরে যাওয়ায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে বলে কৃষকরা মনে করেন।
বৃহস্পতিবার সরজমিন বোর ফসল ডুবে যাওয়া মাটিয়ান হাওরে প্রচুর পরিমাণে মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখা যায়। ভেসে উঠা মরা মাছের মধ্যে ছিলো পুঁটি, টেংরা, মেনি, কাইলা, ঘনিয়া, বোয়াল, আইর সহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। তলিয়ে যাওয়া ধান ও পঁচা মাছের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে হাওরজুড়ে।
জানা যায়, গত ২৯ মার্চ থেকে পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে এবং পরবতী সময়ে বাঁধ উপচে এক এক করে তলিয়ে যায় উপজেলার ২২ টি হাওরের কাঁচা-পাকা বোরো ধান। ডুবে যাওয়ার পর ১৫ দিনের ব্যবধানে ধান পঁচে এখন হাওরে ‘অ্যামোনিয়া গ্যাস’ জন্ম দিয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাটিয়ান হাওরপার রতনশ্রী গ্রামের কৃষক মহিবুর রহমান জানান, ১৫ দিন আগে তাদের হাওরে কাঁচা ধান তলিয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার থেকে দেখছেন হাওরের পাড়ে নানা ধরনের মাছ মরে ভেসে উঠছে। সেই সাথে মরা মাছ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
আমরা হাওরবাসী সংগঠন তাহিরপুর সমন্বয়ক রুহুল আমীন বলেন, ফসল ডুবে যাওয়ার পর কৃষক স্বপ্ন দেখেছিল হাওরের মাছ আহরণ করে হাজার হাজার কৃষক জীবিকা নির্বাহ করবে। ফসলের পর মাছও যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে কৃষক জীবন চালাবে কি করে।
তাহিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন বলেন, কাঁচা ধান তলিয়ে যাওয়ায় ‘অ্যামোনিয়া’ নামের এক ধরনের গ্যাস সৃষ্টি হয়েছে। এ গ্যাসে এখন মাছ আক্রান্ত হচ্ছে এতে মাছ মারা যাচ্ছে। মরা মাছ না খাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করিয়েছি।