ঢাকা ০৮:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একদিনের পান্তা ইলিশের খরচে কোন এক দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো যায় কি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩৭৪ বার

বাংলাদেশে থেকে কেউ যদি একদিনের জন্য বাঙালিত্ব দেখায় আপনার সমস্যা কোথায়? ধর্ম মানে বিশ্বাস, বাঙালি সংস্কৃতি একটা আবেগ , যদিও বর্তমানে এটা ব্যবসা আর শো অফ এজ এ বাংলিয়ানা হয়ে গেছে! ধর্মটা ব্যবসা নয়।

সব কিছুর মধ্যে ধর্মকে পুশ করে একটা কন্ট্রাডিকশন দাঁড় করানো কি উচিত? এতে বিদ্বেষ বাড়ে।এই যে ফেস বুকে লিখছেন মনের ভাব ষোল আনা প্রকাশ করছেন এটা কে তৈরী করেছে! অবান্তর প্রশ্ন অবান্তর ভাবনা তাইনা ,অপ্রাসঙ্গিক ও বটে তবে চিন্তার খোরাক !

বৈশাখ এলেই নানা ভাবে কত কোটি বাঙালিকে আপনি ধর্ম থেকে দূরে ঠেলছেন, কত জনের মনে আঘাত করছেন ? ধর্ম কি এতো সস্তা যে, যে কোন ভাবে যে কোন বিষয়ের প্রতিপক্ষ দাঁড় করাচ্ছেন! যদিও ইসলাম ধর্মে মূর্তি পূজাকে হারাম বলা হয়েছে,অারে ভাই এটা তো পূজা না শোভা যাত্রা , অনেকে বলতে পারে মঙ্গলের জন্য তাহলে ঘরের দরজায় হাতি কুকুর মোষ বিড়াল এর মূর্তি রেখে দিন, প্রব্লেম আছে তাই পারবোনা।

বৈশাখের সাথে সাথে জুড়ে দেন একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ, ষোল ডিসেম্বর, সবখানেই খোঁজেন বিদাত, কারণ এটা খুঁজলেই আপনার পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাথেসত্য- মিথ্যার মিশ্রণে দিনের শুরু, তারা কাজের বিনিময়ে অন্নদাতা, অফিসে গুরুদের ছবি, এক পাত্রে আহার করি ,পুরাই জটিল জীবনে আছি মশাই।

আপনি ষোল কোটি না হোক কত কোটির চেতনাকে কটাক্ষ করছেন? দেশ উচ্ছনে গেলো, ধর্ম নষ্ট হলো বলে উস্কানি দিচ্ছেন কাদের? সময়টা এখন কি এবং কেমন, ভাবেন ! বাটে পড়েন নাইতো তাই ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন। আবার বুক ফুলিয়ে কপি শেয়ার করতে বলছেন। বুঝাচ্ছেন, আপনি খাঁটি বাঙালি না হয় কঠিন দেশ প্রেমিক বাংলাদেশী,সাচ্চা মুসলিম। আর সব ধইঞ্চা।

ইসলামে সন্ধি নাম একটা নিয়ম আছে, শান্তির জন্য সন্ধি।গরম তেলে পানির ছিটায় কারো কল্যাণ হয়না। মনে মনে সন্ধি করেন।মনের ভিতরে করি মসজিদ, সেই মসজিদে প্রতিক্ষণে জপি আল্লাহর নাম। হেদায়েত কামনা করি নিজের সবার আগে। আল্লাহ যেন পাঞ্জেগানা ইবাদতের সুযোগ দেন, সামর্থ দেন, ইচ্ছা শক্তি প্রবল করেন।

ভেবে দেখি নিজে যে কাজ করছি তা শিরক হচ্ছে নাতো! আমার বাবা মা আত্বীয় স্বজনের হক আদায় করছিতো। মানবতা সামাজিকতা মনুষত্ব্যবোধ আছে তো। নিজের ঘরের সবার ঈমান আমল ঠিক আছেতো ! আমি কারো হক না হক করছি কি ? কারো আমানতের খিয়ানত করছি কি?নিজে মসজিদে নামাজ আদায় করছি কি ? স্ত্রী সন্তানের

খেয়াল রাখছি কি? আমার বৃদ্ধ বাবা মা এর সাথে আমার সম্পর্ক যেন আল্লাহ ঠিক রাখেন, তাদের যেন বৃদ্ধ কালে কষ্ট না হয়। তার সাথে আমি চাই দেশের শান্তি। চারপাশে যখন এতো নিরপেক্ষতার জয়গান তাদের এক পক্ষে টানার চেষ্টা অঅশান্তির বার্তা নয় শুধু,এ যে মৃত্যুর পয়গাম।

আল্লাহর কাছে পানাহ চাই ,মুক্তি চাই ,সবার জন্য দোয়া করি সবাই যেন সত্যের পথে আসে.রক্তপ্লাবনে কোন দিন শান্তি আসবেনা।টিভি স্যাটেলাইট ফেসবুকে এটা করা যাবে না ওটা করা যাবেনা, ইসলামের নির্দেশ, তখন কি এই সব ছিলো প্রশ্ন করতেই পারে, এর উত্তরে রেফারেন্স আসবে এটা ছিলোনা ঠিক অত নম্বর আয়াতে, অমুক হাদিসে এইভাবে বলা আছে, তাই এটা করা যাবে না। উত্তর গ্রহণ যোগ্য। কিন্তু এইভাবে শান্ত পথে না যেয়ে অশ্লীল বেপর্দা ভাষায় পর্দার জন্য বাধ্য করার চেষ্টা মানুষকে ক্রোধিত করছে।

নিজের স্বভাব চরিত্র কাজ দিয়ে নিজ ধর্মের দিকে আকর্ষিত করুন।কারণ আপনি কি, কোথা থেকে এসেছেন, কি করেছেন অনেকেই জানে। তাই আপনার পরিবর্তন আসলেও আরেকজনের আসতে সময় লাগবে।আর হুজুগে বাঙালি, এত আবেগ বলার বাইরে, ধর্ম থেকে আবেগ এখন সাহিত্য, সংস্কৃতি, গান, বাদ্য, নৃত্য,কলা, পোশাক, আশাক, জলকেলী, হোলি, মান্নত, পূজা, ঐতিহ্যের প্রতি,ছেড়া আর আবেদনময়ী পোশাক আমাদের আকৃষ্ট করে বেশি। আর রাস্তা ঘাটে হিজাব পরে ও লাঞ্চিত ,খোলামেলা পোশাকেই লুন্ঠিত। মানুষ কনফিউজ আসলে মনের পর্দা নাকি চোখের পর্দা নাকি বিবেকের পর্দা জরুরী।

ফিরতে হবে , ফিরাতে হবে তবে এই জন্য ব্যক্তি মগজ যতক্ষণ না কাজ করবে ততক্ষন আপনার আহবান বিরক্তই করবে।এজন্য বেনামাযী সন্তান অর্থ প্রাচুর্য খাবার সুখ দিয়ে পিত মাতাকে ভরিয়ে দিলেও নামাজী ফরহেজগার সন্তান বাবা মায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান।এই বিষয়টা ঘটে বাবা মা যখন নিশিচত হন তারা অল্পকালের মেহমান ইহলোকে।

বৈশাখ, একুশ, স্বাধীনতা,বিজয় দিবস এলেই ধর্মীয় আইন কানুন সামনে আসে, দেশে গন্ডগোল লাগানোর আর কোন বুদ্ধি নাই, শোনেন,এখন অপু আর সাকিবের দখলে মিডিয়া ,তিস্তা গেছে অপু সাকিবের চোখের জলে ভাসিয়া। আদালতের সামনে গ্রিক মূর্তি এই সব নাড়াচাড়া করার সময় অসময় ভাবেন না। এই সব দেখনে না! দেখেন পান্তা ইলিশ! অরে ভাই এক দিনের পান্তা ইলিশের খরচ দিয়া একজনকে ভালো কাপড় ,এক বেলা খাওয়ালেইকি দেশের সমস্যার সমাধান হবে? দারিদ্রতা বিমোচন হবে.যদিও মাথা পিছু আয় ডলারের অংকে পনেরশ প্রায় , না খেয়ে জীবন কাটে অনেকের।

যারা বৈশাখে পান্তা ইলিশ ফুটানি করে খায় ,তারা কি আপনার চেয়ে কম বোঝে ? দেশ কি আপনি চালান? কোন দেশে থাকেন, তা ভুলে গেলে চলবে?এখন চেতনায় চলে দেশ ,কোন ধর্মীয় বিশ্বাসে নয়,এখন নিরপেক্ষর দেশ,অনেকে বলে মদিনা সনদেও চলছে,ব্যাপারটা যদিও গুবলেট ।

দেশ নিয়ে মাথা ঘামিয়ে দুই একটা গদ্য পদ্য স্টাটাস কাব্য কবিতা লেখা ছাড়া কিছুই করা হবে না ,ধর্মকে যত কঠিন ভাবে উপস্থাপন করা হয় তত বেশি অস্থিতিশীল হয় দেশ.জানি ধর্মে নতুনত্ব নেই.সংযোজন নেই.কিন্তু সংযোজন হচ্ছে,করছে।কট্টর হচ্ছে। অশান্তি বাড়ছে।

ফেসবুক এসেই ফ্রি স্টাটাস স্টান্ট বাজ বানিয়ে দিলো। মনে যা এলো লিখে দিলাম ব্যাস হয় বাহবা নয় আইক্কা ওয়ালা বাঁশ। অশ্লীলতা বেলাল্লাপনা শ্লীলতাহানি, খুন রাহাজানি আগে ছিলো কম,এখন বেশি, প্রচার বেশি।ধর্মীয় ভাবে মাঝা মাঝির থাকার ও অবস্থান নেই কিন্তু একটা বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে থাকতে বিশ্বাস, চেতনার কিছুটা সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে মনে হয়. শান্তি চাইলে শান্তির পথেই এগোতে হয়,সময় হয়তো বেশি নেয়.আশির দশকের চেয়ে এখন হিজাবের প্রচলন বেশি।

মানুষ বোঝে বা বিশ্বাস করে এর প্রয়োজন আছে, এখানেও একটা মাঝামাঝি অবস্থায় আছে। হিজাব একটি টাইট ফিট বা ফ্যাশনেবল হয়ে গেছে, ঠিক হয়ে যাবে।শুরুটা বৈশাখীর আগমনে পান্তা ইলিশ দিয়ে সূচনা করেছিলাম, দেখুন না একদিনের পান্তা ইলিশের খরচে কোন এক দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো যায় কিনা? রাজনীতির পিন্ডি চটকাতে না পারি, ক্ষমতার শক্তি দেখতে না পারি, মানবতার প্রশ্নে অনুরুধ করতেই পারি, আর ধর্ম জ্ঞান কম তাই ক্ষমা চাই.বিষয়টা আপনার ব্যক্তিগত, আপনাকে দেখে এগিয়ে আসবে অনেকেই।আপনি যা ভালো মনে করেন, করুন,আপনার পরিবার করুক একের দেখাদেখি অন্যেরা আপনার ভালো গুনেই আপনার ধর্মকে শ্রদ্ধা করবে।তবে হ্যা ধার্মিক হয়ে অধর্মের কাজ অন্তত আপনি নিজে করবেননা। তাহলেই আপনি কিন্তু আপনার ধর্মের সবচেয়ে বড় শত্রু।

শেষে একটা উদাহরণ এক ডিসেম্বরে দেশে ছিলাম গভীরতা ফুল দিতে গেছি ,আমি গেছি শ্রদ্ধা জানাতে, আমার সাথে যে ছিলো সে বলেছিলো বিদাত, আমি না ফেরা পর্যন্ত,সে আমার থেকে দাঁড়িয়ে ছিল দূরে।।আগামীতে আমি যদি যাইও তাকে আর সাথে নেবনা।কারণ আমি তার বিশ্বাসের অমর্যাদা করতে পারিনা।সে পারলে আমাকে বোঝাবে হয়তো তার বাকি সব গুনের সাথে তার মিল খুঁজে একদিন তার সাথেই হাঁটবো।

জাহাঙ্গীর বাবু (সিঙ্গাপুর প্রবাসী)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

একদিনের পান্তা ইলিশের খরচে কোন এক দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো যায় কি

আপডেট টাইম : ১১:২১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশে থেকে কেউ যদি একদিনের জন্য বাঙালিত্ব দেখায় আপনার সমস্যা কোথায়? ধর্ম মানে বিশ্বাস, বাঙালি সংস্কৃতি একটা আবেগ , যদিও বর্তমানে এটা ব্যবসা আর শো অফ এজ এ বাংলিয়ানা হয়ে গেছে! ধর্মটা ব্যবসা নয়।

সব কিছুর মধ্যে ধর্মকে পুশ করে একটা কন্ট্রাডিকশন দাঁড় করানো কি উচিত? এতে বিদ্বেষ বাড়ে।এই যে ফেস বুকে লিখছেন মনের ভাব ষোল আনা প্রকাশ করছেন এটা কে তৈরী করেছে! অবান্তর প্রশ্ন অবান্তর ভাবনা তাইনা ,অপ্রাসঙ্গিক ও বটে তবে চিন্তার খোরাক !

বৈশাখ এলেই নানা ভাবে কত কোটি বাঙালিকে আপনি ধর্ম থেকে দূরে ঠেলছেন, কত জনের মনে আঘাত করছেন ? ধর্ম কি এতো সস্তা যে, যে কোন ভাবে যে কোন বিষয়ের প্রতিপক্ষ দাঁড় করাচ্ছেন! যদিও ইসলাম ধর্মে মূর্তি পূজাকে হারাম বলা হয়েছে,অারে ভাই এটা তো পূজা না শোভা যাত্রা , অনেকে বলতে পারে মঙ্গলের জন্য তাহলে ঘরের দরজায় হাতি কুকুর মোষ বিড়াল এর মূর্তি রেখে দিন, প্রব্লেম আছে তাই পারবোনা।

বৈশাখের সাথে সাথে জুড়ে দেন একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ, ষোল ডিসেম্বর, সবখানেই খোঁজেন বিদাত, কারণ এটা খুঁজলেই আপনার পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাথেসত্য- মিথ্যার মিশ্রণে দিনের শুরু, তারা কাজের বিনিময়ে অন্নদাতা, অফিসে গুরুদের ছবি, এক পাত্রে আহার করি ,পুরাই জটিল জীবনে আছি মশাই।

আপনি ষোল কোটি না হোক কত কোটির চেতনাকে কটাক্ষ করছেন? দেশ উচ্ছনে গেলো, ধর্ম নষ্ট হলো বলে উস্কানি দিচ্ছেন কাদের? সময়টা এখন কি এবং কেমন, ভাবেন ! বাটে পড়েন নাইতো তাই ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন। আবার বুক ফুলিয়ে কপি শেয়ার করতে বলছেন। বুঝাচ্ছেন, আপনি খাঁটি বাঙালি না হয় কঠিন দেশ প্রেমিক বাংলাদেশী,সাচ্চা মুসলিম। আর সব ধইঞ্চা।

ইসলামে সন্ধি নাম একটা নিয়ম আছে, শান্তির জন্য সন্ধি।গরম তেলে পানির ছিটায় কারো কল্যাণ হয়না। মনে মনে সন্ধি করেন।মনের ভিতরে করি মসজিদ, সেই মসজিদে প্রতিক্ষণে জপি আল্লাহর নাম। হেদায়েত কামনা করি নিজের সবার আগে। আল্লাহ যেন পাঞ্জেগানা ইবাদতের সুযোগ দেন, সামর্থ দেন, ইচ্ছা শক্তি প্রবল করেন।

ভেবে দেখি নিজে যে কাজ করছি তা শিরক হচ্ছে নাতো! আমার বাবা মা আত্বীয় স্বজনের হক আদায় করছিতো। মানবতা সামাজিকতা মনুষত্ব্যবোধ আছে তো। নিজের ঘরের সবার ঈমান আমল ঠিক আছেতো ! আমি কারো হক না হক করছি কি ? কারো আমানতের খিয়ানত করছি কি?নিজে মসজিদে নামাজ আদায় করছি কি ? স্ত্রী সন্তানের

খেয়াল রাখছি কি? আমার বৃদ্ধ বাবা মা এর সাথে আমার সম্পর্ক যেন আল্লাহ ঠিক রাখেন, তাদের যেন বৃদ্ধ কালে কষ্ট না হয়। তার সাথে আমি চাই দেশের শান্তি। চারপাশে যখন এতো নিরপেক্ষতার জয়গান তাদের এক পক্ষে টানার চেষ্টা অঅশান্তির বার্তা নয় শুধু,এ যে মৃত্যুর পয়গাম।

আল্লাহর কাছে পানাহ চাই ,মুক্তি চাই ,সবার জন্য দোয়া করি সবাই যেন সত্যের পথে আসে.রক্তপ্লাবনে কোন দিন শান্তি আসবেনা।টিভি স্যাটেলাইট ফেসবুকে এটা করা যাবে না ওটা করা যাবেনা, ইসলামের নির্দেশ, তখন কি এই সব ছিলো প্রশ্ন করতেই পারে, এর উত্তরে রেফারেন্স আসবে এটা ছিলোনা ঠিক অত নম্বর আয়াতে, অমুক হাদিসে এইভাবে বলা আছে, তাই এটা করা যাবে না। উত্তর গ্রহণ যোগ্য। কিন্তু এইভাবে শান্ত পথে না যেয়ে অশ্লীল বেপর্দা ভাষায় পর্দার জন্য বাধ্য করার চেষ্টা মানুষকে ক্রোধিত করছে।

নিজের স্বভাব চরিত্র কাজ দিয়ে নিজ ধর্মের দিকে আকর্ষিত করুন।কারণ আপনি কি, কোথা থেকে এসেছেন, কি করেছেন অনেকেই জানে। তাই আপনার পরিবর্তন আসলেও আরেকজনের আসতে সময় লাগবে।আর হুজুগে বাঙালি, এত আবেগ বলার বাইরে, ধর্ম থেকে আবেগ এখন সাহিত্য, সংস্কৃতি, গান, বাদ্য, নৃত্য,কলা, পোশাক, আশাক, জলকেলী, হোলি, মান্নত, পূজা, ঐতিহ্যের প্রতি,ছেড়া আর আবেদনময়ী পোশাক আমাদের আকৃষ্ট করে বেশি। আর রাস্তা ঘাটে হিজাব পরে ও লাঞ্চিত ,খোলামেলা পোশাকেই লুন্ঠিত। মানুষ কনফিউজ আসলে মনের পর্দা নাকি চোখের পর্দা নাকি বিবেকের পর্দা জরুরী।

ফিরতে হবে , ফিরাতে হবে তবে এই জন্য ব্যক্তি মগজ যতক্ষণ না কাজ করবে ততক্ষন আপনার আহবান বিরক্তই করবে।এজন্য বেনামাযী সন্তান অর্থ প্রাচুর্য খাবার সুখ দিয়ে পিত মাতাকে ভরিয়ে দিলেও নামাজী ফরহেজগার সন্তান বাবা মায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান।এই বিষয়টা ঘটে বাবা মা যখন নিশিচত হন তারা অল্পকালের মেহমান ইহলোকে।

বৈশাখ, একুশ, স্বাধীনতা,বিজয় দিবস এলেই ধর্মীয় আইন কানুন সামনে আসে, দেশে গন্ডগোল লাগানোর আর কোন বুদ্ধি নাই, শোনেন,এখন অপু আর সাকিবের দখলে মিডিয়া ,তিস্তা গেছে অপু সাকিবের চোখের জলে ভাসিয়া। আদালতের সামনে গ্রিক মূর্তি এই সব নাড়াচাড়া করার সময় অসময় ভাবেন না। এই সব দেখনে না! দেখেন পান্তা ইলিশ! অরে ভাই এক দিনের পান্তা ইলিশের খরচ দিয়া একজনকে ভালো কাপড় ,এক বেলা খাওয়ালেইকি দেশের সমস্যার সমাধান হবে? দারিদ্রতা বিমোচন হবে.যদিও মাথা পিছু আয় ডলারের অংকে পনেরশ প্রায় , না খেয়ে জীবন কাটে অনেকের।

যারা বৈশাখে পান্তা ইলিশ ফুটানি করে খায় ,তারা কি আপনার চেয়ে কম বোঝে ? দেশ কি আপনি চালান? কোন দেশে থাকেন, তা ভুলে গেলে চলবে?এখন চেতনায় চলে দেশ ,কোন ধর্মীয় বিশ্বাসে নয়,এখন নিরপেক্ষর দেশ,অনেকে বলে মদিনা সনদেও চলছে,ব্যাপারটা যদিও গুবলেট ।

দেশ নিয়ে মাথা ঘামিয়ে দুই একটা গদ্য পদ্য স্টাটাস কাব্য কবিতা লেখা ছাড়া কিছুই করা হবে না ,ধর্মকে যত কঠিন ভাবে উপস্থাপন করা হয় তত বেশি অস্থিতিশীল হয় দেশ.জানি ধর্মে নতুনত্ব নেই.সংযোজন নেই.কিন্তু সংযোজন হচ্ছে,করছে।কট্টর হচ্ছে। অশান্তি বাড়ছে।

ফেসবুক এসেই ফ্রি স্টাটাস স্টান্ট বাজ বানিয়ে দিলো। মনে যা এলো লিখে দিলাম ব্যাস হয় বাহবা নয় আইক্কা ওয়ালা বাঁশ। অশ্লীলতা বেলাল্লাপনা শ্লীলতাহানি, খুন রাহাজানি আগে ছিলো কম,এখন বেশি, প্রচার বেশি।ধর্মীয় ভাবে মাঝা মাঝির থাকার ও অবস্থান নেই কিন্তু একটা বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে থাকতে বিশ্বাস, চেতনার কিছুটা সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে মনে হয়. শান্তি চাইলে শান্তির পথেই এগোতে হয়,সময় হয়তো বেশি নেয়.আশির দশকের চেয়ে এখন হিজাবের প্রচলন বেশি।

মানুষ বোঝে বা বিশ্বাস করে এর প্রয়োজন আছে, এখানেও একটা মাঝামাঝি অবস্থায় আছে। হিজাব একটি টাইট ফিট বা ফ্যাশনেবল হয়ে গেছে, ঠিক হয়ে যাবে।শুরুটা বৈশাখীর আগমনে পান্তা ইলিশ দিয়ে সূচনা করেছিলাম, দেখুন না একদিনের পান্তা ইলিশের খরচে কোন এক দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো যায় কিনা? রাজনীতির পিন্ডি চটকাতে না পারি, ক্ষমতার শক্তি দেখতে না পারি, মানবতার প্রশ্নে অনুরুধ করতেই পারি, আর ধর্ম জ্ঞান কম তাই ক্ষমা চাই.বিষয়টা আপনার ব্যক্তিগত, আপনাকে দেখে এগিয়ে আসবে অনেকেই।আপনি যা ভালো মনে করেন, করুন,আপনার পরিবার করুক একের দেখাদেখি অন্যেরা আপনার ভালো গুনেই আপনার ধর্মকে শ্রদ্ধা করবে।তবে হ্যা ধার্মিক হয়ে অধর্মের কাজ অন্তত আপনি নিজে করবেননা। তাহলেই আপনি কিন্তু আপনার ধর্মের সবচেয়ে বড় শত্রু।

শেষে একটা উদাহরণ এক ডিসেম্বরে দেশে ছিলাম গভীরতা ফুল দিতে গেছি ,আমি গেছি শ্রদ্ধা জানাতে, আমার সাথে যে ছিলো সে বলেছিলো বিদাত, আমি না ফেরা পর্যন্ত,সে আমার থেকে দাঁড়িয়ে ছিল দূরে।।আগামীতে আমি যদি যাইও তাকে আর সাথে নেবনা।কারণ আমি তার বিশ্বাসের অমর্যাদা করতে পারিনা।সে পারলে আমাকে বোঝাবে হয়তো তার বাকি সব গুনের সাথে তার মিল খুঁজে একদিন তার সাথেই হাঁটবো।

জাহাঙ্গীর বাবু (সিঙ্গাপুর প্রবাসী)