ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার অগ্রগতি জানানোর সময় বাড়লো

পদ্মা সেতুর ‘দুর্নীতি নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প’ সৃষ্টির নেপথ্যের ষড়যন্ত্রে যুক্ত প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করতে এখনো কমিশন গঠন করা হয়নি। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ আগামী ৭ মে মধ্যে আদেশ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দেন।

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিশন গঠন করে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না—এই মর্মে রুল জারি করে হাইকোর্ট। আজ সোমবার ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এডভোকেট তাপস কুমার বিশ্বাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত সময় মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য চুক্তি করে। পরে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তা স্থগিত এবং বাতিল করে। এই সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মামলা হয়েছিল কানাডার আদালতে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে কানাডার আদালত ওই মামলার তিন আসামিকে খালাস দেয়। রায়ে বিচারক বলেন, এই মামলায় প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’। এই রায় প্রকাশের পরই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. ইউনূসের বিচারের দাবি জানান। এ নিয়ে ‘ইউনূসের বিচার দাবি’ শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মাসেতু নির্মাণে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিশ্বব্যাংক। এ ঘটনা তখন গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। সাড়ে তিন বছর আগের ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তিত্বের দৌড়ঝাপ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়াকর্ম ও মিডিয়ার অতি উত্সাহ পদ্মা সেতু ইস্যুতে সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়। যা ছিল সরকারের জন্য চরম অবমাননাকর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। পদ্মাসেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার কারণ পর্দার আড়ালে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কলকাঠি নাড়ছেন বলে মনে করে সরকার। কানাডার আদালত পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলা খারিজ করে দেয়ার পর সবর হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলগুলো। তারা এখন মনে করছেন ওই সময় পদ্মা সেতু ইস্যুতে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট করায় ড. ইউনূসকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। দলটি জাতীয় সংসদে ও সংসদের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ড. ইউনূস ও জার্মানির অর্থে পরিচালিত দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইবি’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় যে অধিক অর্থ ব্যয় হচ্ছে সে ক্ষতিপূরণ বিশ্বব্যাংককে দিতে হবে। পরে এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর