ঢাকা ১২:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৫ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০১৫
  • ৫৩৬ বার

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বেতনের বিষয়ে সচিব কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এতে সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৫ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা অর্থমন্ত্রীর কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সচিবালয়ে ‘পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন’-এর সুপারিশের বিষয়ে গঠিত সচিব কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

কমিটির প্রতিবেদনে বেতনের ধাপ ২০টিই বহাল রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড থাকছে না। নতুন এই বেতনকাঠামো ১ জুলাই থেকে দুই ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০১৫-১৬ জাতীয় বাজেটের পর মন্ত্রিসভায় এটি উত্থাপন করা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা জানান। সচিব কমিটির প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা ও অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই এটা ঘোষণা করা হোক না কেন, ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে। বাজেট নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ৪ জুনের আগে এটা নিয়ে কিছু করা সম্ভব হবে না। সচিব কমিটির প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখব এবং এটা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করব। তারপর এটা মন্ত্রিসভায় যাবে। ফলে পে-স্কেল ঘোষণা করতে জুলাই-আগস্ট মাস লেগে যেতে পারে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে গত বছরের নভেম্বরে পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন গঠন করা হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন শতভাগ বাড়ানোর সুপারিশ করে একই বছরের ২১ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল কমিশন। তাতে ১৬টি গ্রেডে বেতনকাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেখানে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা বেতন স্কেলের খসড়া সুপারিশ করা হয়।

ওই সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন ১ লাখ টাকা এবং সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৮ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়। বেতন বৃদ্ধির হারের সঙ্গে পেনশন বৃদ্ধির সুপারিশও করা হয় প্রস্তাবে।

তবে পাঁচ সদস্যের সচিব কমিটির সুপারিশে আগের মতো ২০টি গ্রেড রাখার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। ফরাসউদ্দিনের বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে গত ১ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের এই কমিটি গঠন করে সরকার।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে ২০টি ধাপই রয়েছে। আমার যেটা মনে হয়, এটাকে আর টাচ করা উচিত হবে না।’ নতুন এই বেতনকাঠামোর বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১৩ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ৮৭ থেকে ১০১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

এতে নিত্যপণ্যের বাজারে কতটা প্রভাব পড়বে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটার কোনো ইমপ্যাক্ট হয় না।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই বেতন বাড়ানো উচিত। প্রতিবছর অটোমেটিক্যালি হওয়া উচিত। প্রতিবেদনে এটি সুপারিশ করা হয়েছে।’

‘নতুন পে-স্কেল পেয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা সবাই খুশি হয়েছে’- সাংবাদিকদের এ কথার জবাবে তিনি বলেন, ‘খুশি করার জন্য এটা দেওয়া হয়নি। আগের বার ৬২ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছিল। এবার কতটা বেড়েছে?’

প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিটির সুপারিশ কমিশনের সুপারিশ থেকে কম হবে, এটাই স্বাভাবিক। অতীতেও তা-ই হয়েছে। কমিশনের রিপোর্ট দাখিলের পর বাজারের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি, তাই এ পর্যায়েও হওয়ার কোনো যুক্তি নাই।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৫ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা

আপডেট টাইম : ০৫:২২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০১৫

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বেতনের বিষয়ে সচিব কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এতে সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৫ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা অর্থমন্ত্রীর কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সচিবালয়ে ‘পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন’-এর সুপারিশের বিষয়ে গঠিত সচিব কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

কমিটির প্রতিবেদনে বেতনের ধাপ ২০টিই বহাল রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড থাকছে না। নতুন এই বেতনকাঠামো ১ জুলাই থেকে দুই ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০১৫-১৬ জাতীয় বাজেটের পর মন্ত্রিসভায় এটি উত্থাপন করা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা জানান। সচিব কমিটির প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা ও অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই এটা ঘোষণা করা হোক না কেন, ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে। বাজেট নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ৪ জুনের আগে এটা নিয়ে কিছু করা সম্ভব হবে না। সচিব কমিটির প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখব এবং এটা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করব। তারপর এটা মন্ত্রিসভায় যাবে। ফলে পে-স্কেল ঘোষণা করতে জুলাই-আগস্ট মাস লেগে যেতে পারে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে গত বছরের নভেম্বরে পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন গঠন করা হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন শতভাগ বাড়ানোর সুপারিশ করে একই বছরের ২১ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল কমিশন। তাতে ১৬টি গ্রেডে বেতনকাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেখানে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা বেতন স্কেলের খসড়া সুপারিশ করা হয়।

ওই সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন ১ লাখ টাকা এবং সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৮ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়। বেতন বৃদ্ধির হারের সঙ্গে পেনশন বৃদ্ধির সুপারিশও করা হয় প্রস্তাবে।

তবে পাঁচ সদস্যের সচিব কমিটির সুপারিশে আগের মতো ২০টি গ্রেড রাখার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। ফরাসউদ্দিনের বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে গত ১ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের এই কমিটি গঠন করে সরকার।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে ২০টি ধাপই রয়েছে। আমার যেটা মনে হয়, এটাকে আর টাচ করা উচিত হবে না।’ নতুন এই বেতনকাঠামোর বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১৩ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ৮৭ থেকে ১০১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

এতে নিত্যপণ্যের বাজারে কতটা প্রভাব পড়বে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটার কোনো ইমপ্যাক্ট হয় না।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই বেতন বাড়ানো উচিত। প্রতিবছর অটোমেটিক্যালি হওয়া উচিত। প্রতিবেদনে এটি সুপারিশ করা হয়েছে।’

‘নতুন পে-স্কেল পেয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা সবাই খুশি হয়েছে’- সাংবাদিকদের এ কথার জবাবে তিনি বলেন, ‘খুশি করার জন্য এটা দেওয়া হয়নি। আগের বার ৬২ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছিল। এবার কতটা বেড়েছে?’

প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিটির সুপারিশ কমিশনের সুপারিশ থেকে কম হবে, এটাই স্বাভাবিক। অতীতেও তা-ই হয়েছে। কমিশনের রিপোর্ট দাখিলের পর বাজারের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি, তাই এ পর্যায়েও হওয়ার কোনো যুক্তি নাই।’