প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভ্যান যাচ্ছে জাদুঘরে, ভ্যানচালক বিমান বাহিনীতে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভ্যানে বহনকারী টুঙ্গিপাড়ার সেই ভ্যানচালক ইমাম শেখের মনের আশা পূরণ হয়েছে। নিজেকে এখন সবচেয়ে সুখী ও ভাগ্যবান ব্যক্তি বলে দাবি করেছে সে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অব্যক্ত মনের আশা পূরণ করায় ইমাম শেখ প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকার কথাও জানিয়েছে ইমাম শেখ।

ইমাম শেখ জানায়, আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিমান বাহিনীর যশোর ক্যান্টনমেন্টের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির স্কোয়াড্রন লিডার হারুন-উর- রশিদ টুঙ্গিপাড়া সরদারপাড়া গ্রামে ইমাম শেখের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। এরপর তিনি ইমাম শেখের অসুস্থ পিতার চিকিৎসা ও ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে ৪০ হাজার টাকা তুলে দেন ইমামের মা শাহানূর বেগমের হাতে। এ সময় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির স্কোয়াড্রন অ্যাসিস্ট্যান্ট লিডার দেলোয়ার হোসাইনসহ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ইমামের ভ্যান

জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানায় সে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, টুঙ্গিপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম গোলাম কাদের সাক্ষী হিসেবে ইমাম শেখের নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন। তবে তাকে কী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এ সব প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ১২টার দিকে ইমাম শেখ ব্যাগ গুছিয়ে ও ভ্যান নিয়ে বিমান বাহিনীর গাড়িতে করে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

বিমান বাহিনীর যশোর ক্যান্টনমেন্টের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির স্কোয়ার্ডন লিডার হারুন-উর- রশিদ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইমামকে বিমান বাহিনীতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তার নিয়োগপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভ্যান আমরা যশোর নিয়ে যাচ্ছি। পরে এ ভ্যান জাদুঘরে পাঠানো হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘পরম মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী ইমামের মনের ইচ্ছা জানতে পরে তা পূরণ করেছেন। দরিদ্র এ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দিয়েছেন ইমামের পিতার চিকিৎসা ও বাড়িঘর মেরামতের সহায়তা।’

ইমামের মা শাহানূর বেগম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ছেলের চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের জন্য সব কিছু করবেন এমন প্রত্যাশা করিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যা করেছেন, তার জন্য আমরা সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তিনি আমাদের মতো গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যই নিরলস কাজ করছেন। আল্লাহ তাকে দীর্ঘদিন এ মহৎ কাজে নিয়োজিত রাখুন এ দোয়া করি।’

ইমামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইউনুস আলী মোল্লা বলেন, ‘ইমামের বাবা মানসিক রোগী। সংসারের অভাব অনটনের কারণেই ইমাম পড়াশোনা ছেড়ে ভ্যান চালাতো। প্রধানমন্ত্রী তার ভ্যানে চড়ার পর তার ভাগ্য বদলে গেছে। অত্যন্ত দয়ালু প্রধানমন্ত্রী তাকে চাকরি দিয়েছেন। তাদের পরিবারে দায়িত্ব নিয়েছেন। এতে গ্রামবাসী খুবই আনন্দিত। এ মহানুভবতায় সবাই বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য দোয়া করছেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাতি-নাতনি নিয়ে ইমামের ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ঘুরতে বের হন।-বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর