২৬ জুন- যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বসতঘর। পরিবারে হাল ধরার মতো নেই কেউ। কারো বাবা নেই, কারো স্বামী নেই। আবার কারো ঘরবাড়ি নেই। তাই বলে জীবনতো আর থেমে থাকবে না। পেটের দায়ে তাই তরুণীরাও সিএনজি অটোরিকশার স্টিয়ারিং ধরতে বাধ্য হয়েছেন। বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে এমন দৃশ্য চোখে পড়বে। যেখানে তরুণীরাও সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। এদের কেউ কেউ আবার অটোরিকশা চালিয়ে পড়াশোনার খরচও চালাচ্ছেন। অটোরিকশা চালিয়ে তারা এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
ভাঙন কবলিত যমুনা তীর ও চরগ্রামের নারীরা এখন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে। তারা অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও মোটর গাড়ি মেরামতের কাজ শিখছেন। তারা এ প্রশিক্ষণ নিয়েছে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলা সদর থেকে। সারিয়াকান্দির মা ফাতেমা (রা.) নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরকারিভাবে এ প্রশিক্ষণ দিতে নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রথম ব্যাচের আটজন নারী চাকরিও পেয়েছেন। আর অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা কিনে চালাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী ভাঙন কবলিত এই অঞ্চলে কর্মহীন লোকের সংখ্যা কমাতে সরকারিভাবে ২০০০ সালে সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর পাশে মা ফাতেমা (রা.) নারী প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়। প্রথম দিকে বিনা অর্থে সেলাই, হাতের কাজ, কুটির শিল্প ইত্যাদির প্রশিক্ষণ প্রদান করা হতো। পরে যুক্ত হয় টেইলারিং ও অ্যাম্ব্রয়ডারির কাজ। বিগত ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মান্নানের উদ্যোগে তা পুনরায় চালু করা হয়।
এরপর ২০১৪ সাল থেকে সেখানে মেয়েদের শেখানো হচ্ছে ড্রাইভিং ও মোটরসাইকেল মেরামত কাজ। এই কেন্দ্র থেকে গত ১০ মাসে ৩ ব্যাচে ৪৭ জন প্রশিক্ষিত নারী বের হয়ে মাঠে নেমেছে। তিন মাস মেয়াদী এই কোর্সের চতুর্থ ব্যাচে আরো ২০ নারী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তারাও মাঠ পর্যায়ে মোটরযান চালিয়ে সফলতা দেখিয়েছে। প্রশিক্ষণে সহযোগিতা দিচ্ছে বেসরকারি সংস্থা ইউসেপ।