ঢাকা ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাখির কলতানে মুখর জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৬
  • ৩৫৬ বার

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি বছরের মতো এবারো পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটেছে এ ক্যাম্পাসে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে বাড়তে শুরু করেছে পাখির সংখ্যাও। প্রতিদিন এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে।

রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নগরীর ব্যস্ত মানুষ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের দেখতে ভিড় করছে এখন এই সবুজ ক্যাম্পাসে। জলাশয়গুলোতে লাল শাপলার মাঝে পরিযায়ী পাখির খুঁনসুটি। কখনো জলাশয় থেকে ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া খাবারের সন্ধানে। আবার কখনো গাছের ডালে বসে বিশ্রাম নেয়া দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায় দর্শনার্থীদের।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করায় উত্তরের শীত প্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে হাজারো পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে।

বাংলাদেশের যেসব এলাকায় পরিযায়ী পাখি আসে তার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস অন্যতম। আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট বড় প্রায় ১৭টি লেকের মধ্যে পরিবহন চত্বর, রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেকেই অতিথি পাখির সমাগম ঘটে সবচেয়ে বেশি। এবারো এসব লেকে পরযায়ী পাখি ভিড় জমিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি বিশ্রাম নেয় পানিতে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে এই ক্যাম্পাসে। এরা ডানায় ভর করে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চলে আসে।

এদিকে পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিবছর ক্যাম্পাসে আয়োজন করে ‘পাখিমেলার’। এ বছর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ১৫তম পাখি মেলা ২০১৭।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাখির কলতানে মুখর জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস

আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি বছরের মতো এবারো পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটেছে এ ক্যাম্পাসে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে বাড়তে শুরু করেছে পাখির সংখ্যাও। প্রতিদিন এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে।

রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নগরীর ব্যস্ত মানুষ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের দেখতে ভিড় করছে এখন এই সবুজ ক্যাম্পাসে। জলাশয়গুলোতে লাল শাপলার মাঝে পরিযায়ী পাখির খুঁনসুটি। কখনো জলাশয় থেকে ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া খাবারের সন্ধানে। আবার কখনো গাছের ডালে বসে বিশ্রাম নেয়া দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায় দর্শনার্থীদের।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করায় উত্তরের শীত প্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে হাজারো পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে।

বাংলাদেশের যেসব এলাকায় পরিযায়ী পাখি আসে তার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস অন্যতম। আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট বড় প্রায় ১৭টি লেকের মধ্যে পরিবহন চত্বর, রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেকেই অতিথি পাখির সমাগম ঘটে সবচেয়ে বেশি। এবারো এসব লেকে পরযায়ী পাখি ভিড় জমিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি বিশ্রাম নেয় পানিতে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে এই ক্যাম্পাসে। এরা ডানায় ভর করে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চলে আসে।

এদিকে পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিবছর ক্যাম্পাসে আয়োজন করে ‘পাখিমেলার’। এ বছর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ১৫তম পাখি মেলা ২০১৭।