রিমন মাহফুজ, টোকিও জাপান থেকে: জাপানের তরুণ সংসদ সদ্যস্য তানুমা তাকাশি। বয়স প্রায় ৩৫। প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠেন। ৬টায় চলে যান স্থানীয় চিবা শহরের যে কোন একটি রেলস্টেশনে। সেখানে অফিসগামী জনগনের উদ্যেশে তার ও সরকারের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে প্রায় ১ ঘন্টা হ্যান্ড মাইকে বক্তব্য রাখেন।
জাপানীজ এই তরুণ সংসদ সদ্যস্যের টোকিও অফিসে জাপান-বাংলাদেশ সর্ম্পক নিয়ে এই প্রতিবেদককে এক সাক্ষাৎকারে দেন।
সাক্ষাৎকারে তানুমা তাকাশি বলেন- জাপান-বাংলাদেশের সর্ম্পক আরো জোরদার করা দরকার। অতিতে এই সর্ম্পক যেমন ঐতিহাসিক ছিল বর্তমানে তা পূনরোদ্দারে দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। কারণ ঢাকার গুলশান ঘটনার পর জাপানি জনগন এখনও সেটা মেনে নিতে পারে নাই।
তাকাশি আরো বলেন, সেদিনের ঘটনায় পর বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ প্রসংসনীয়, তবে এখনও জাপানীদের যে ভয় ভিতি রয়েছে তা দূর করতে হবে বাংলাদেশ সরকারেরকে। এখনই উদ্যোগ নিতে হবে যেন সর্ম্পকের অবনতি আর যেন না হয়।
তাকাশি এ সময় আরো বলেন, জাপান বাংলাদেশের খুবই পরিক্ষিত বন্ধু।
বঙ্গবন্ধুকে জাপানী জনগন পূর্বে যে ভাবে জানতো এবং বিশ্বাস করতো. অন্যদিকে জাপানের পতাকা সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা যেমন মিল তেমনী দুই দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনীতিতে উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। এই কথাগুলো বর্তমান জাপানী জনগনকে আমি বুঝিয়ে যাচ্ছি। আমার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে জাপানী জনগনকে কাছে এই কথাগুলো বলছি, তবে বাংলাদেশ সরকার এবং তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে এই কাজটি আরো এগিয়ে নিতে হবে। তখনিই জাপানী ব্যবসায়ী ও জাইকার বিভিন্ন প্রজেক্টের কর্মকর্তারা আশ্বত হবে এবং তাদের পূর্বের কাজে যোগ দিবে বলে আমার বিশ্বাস।
অন্য এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, জাপান সরকার বিষয়টি নিয়ে মর্মহত। তাই বলে বাংলাদেশ সরকার উপর ক্ষুব্দ নয়। কারণ সরকারতো এটা করে নাই। সারা পূথিবেতেই জঙ্গিরা এই ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আক্রমনের শিকার হয়েছে। আর এতে আমরাসহ অনে্ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এখানে একটি বিষয় লক্ষনীয় বাংলাদেশ খুবই দ্রুত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নির্মূল করে যাচ্ছে, এটা অবশ্যই প্রসংসনীয়।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে চিনের বিশাল ইনভেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা চিন-বাংলাদেশে বিষয়। এখানে দুই দেশের সার্থ জড়িত। তবে চিন দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি করতে চায় এতে এটা বুঝা যায়। এখানে জাপানের অবস্থান খুবই পরিস্কার। আমরা সবার সাথে ভালো সর্ম্পক বজায় রেখে অর্থনীতির উন্নয়ন সর্ম্পক জোড়দার করতে চাই।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়- বাংলাদেশ-জাপানের সর্ম্পক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঐ সময় আমরা সর্মথন দিয়ে ছিলাম, এখনও বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন যুদ্ধে সর্মথন এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তা আরো শক্তিশালীভাবে এগিয়ে যাক সেটা আমি চাই।
অন্য এক প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর অনেক গবেষণা করেছি। তাকে জানার এবং তার কর্মকাণ্ডকে ফলো করি। জাপানে বঙ্গবন্ধু পারিষদের আয়োজিত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবসে নিয়মিত অংশগ্রহণ করি।