ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেও মনে করতাম না ওমরাহ শেষে গ্রামে ফিরে খেজুর-জমজমের পানি বিতরণ করল শিশু রিফাত বিদেশে প্রশিক্ষণে ঘুরে-ফিরে একই ব্যক্তি নয়, জুনিয়রদের অগ্রাধিকার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার মতামত জরিপ জানুয়ারিতে বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ আসামি রিমান্ডে বিয়ের আগে পরস্পরকে যে প্রশ্নগুলো করা জরুরি

দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি : সালাহ উদ্দিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০১৫
  • ৪০৫ বার
সোমবার ভোরে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ পুলিশের কাছে বলেছেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’
ইস্ট খাসি হিলসের পুলিশ সুপার এম খারক্রাং স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে বলেন, ওই ভদ্রলোক থানায় গিয়েই বলতে শুরু করেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’ এদিকে ভদ্রলোকের পকেটে একটা কাগজ পর্যন্ত নেই। কোনও টাকাপয়সা দূরে থাক, পকেটে একটা মানিব্যাগও নেই, ফলে যথারীতি শিলংয়ের পুলিশ প্রথমে তার কথা একেবারেই বিশ্বাস করেনি, পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দিয়েছিল।
সোমবার ভোরে যখন গলফ ক্লাবের সামনে অচেনা লোককে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন, তখন সেখান দিয়েই যাচ্ছিল পুলিশ পেট্রলের একটি জিপ। টহলদার বাহিনী লোকটিকে ধরে নিয়ে কাছেই শিলংয়েন প্যাসটিওর বিটহাউস থানাতে নিয়ে যাওয়ার পরেই সালাহউদ্দিন এসব কথা বলেন।
পুলিশ তার পরিচয় জানতে চাওয়ায় তিনি ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, মুখে কোনও কথা জোগায় না। ওনার অবস্থা দেখে থানাতেই সিদ্ধান্ত হয় ইনি নিশ্চয় মানসিক ভারসাম্যহীন, আর তারপরই পুলিশ তাকে শিলংয়ের মিমহ্যানসে (মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্স) ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। মিমহ্যানস শিলংয়ে মানসিক প্রতিবন্ধীর হাসপাতাল বলেই পরিচিত। সালাহ উদ্দিন আহমেদের গতি হয় সেখানেই।
মিমহ্যানসে ডাক্তারদের চিকিৎসায় গতকাল রাত থেকেই অল্প অল্প করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষণ দেখাতে শুরু করেন তিনি। তারপর আজ সকালে তিনি মিমহ্যানসের ডাক্তারদের জানান, ঢাকায় তার স্ত্রীর টেলিফোন নম্বর তার মনে পড়েছে– সেখানে তিনি ফোন করে কথা বলতে চান। এরপরই তিনি ঢাকায় স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন করে জানান, তিনি ভাল আছেন, মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ যখন শিলং গলফ ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে, তখন তিনি কপর্দকশূন্য অবস্থায় থাকলেও তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মিমহ্যানসে চিকিৎসকরা এদিন তাকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তার হৃদযন্ত্রে কিছু দুর্বলতার লক্ষণ আছে। ফলে মানসিক হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে এদিন বিকেলে তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর মেঘালয় পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারলেও হাসপাতাল স্থানান্তরের সময় সালাহ উদ্দিন নিজেই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন। আমাকে উত্তরা থেকে অচেনা লোকজন তুলে নিয়েছিল। আমি জানি না, কিভাবে এখানে এলাম।’
ধারণা করা হচ্ছে, শিলংয়ের সবচেয়ে কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের ডাউকি– সেটাও প্রায় চল্লিশ-বিয়াল্লিশ মাইল দূরে। প্রাথমিকভাবে মেঘালয় পুলিশ অনুমান করছে রবিবার রাতে সেই ডাউকির কাছে সীমান্ত পেরিয়েই ভারতে ঢোকেন সালাউদ্দিন আহমেদ– কিংবা তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়! তারপর সেখান থেকে কোনও বাস বা ভাড়ার টেম্পোয় চেপে তিনি সোমবার ভোরে শিলংয়ে পৌঁছান এবং কিছুক্ষণ পর পুলিশের কাছে ধরা পড়েন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল

দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি : সালাহ উদ্দিন

আপডেট টাইম : ০৬:১৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০১৫
সোমবার ভোরে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ পুলিশের কাছে বলেছেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’
ইস্ট খাসি হিলসের পুলিশ সুপার এম খারক্রাং স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে বলেন, ওই ভদ্রলোক থানায় গিয়েই বলতে শুরু করেন, ‘দেখুন আমি কিন্তু বাংলাদেশের একজন ভিআইপি। আমি সে দেশে ক্যাবিনেট মিনিস্টারও ছিলাম!’ এদিকে ভদ্রলোকের পকেটে একটা কাগজ পর্যন্ত নেই। কোনও টাকাপয়সা দূরে থাক, পকেটে একটা মানিব্যাগও নেই, ফলে যথারীতি শিলংয়ের পুলিশ প্রথমে তার কথা একেবারেই বিশ্বাস করেনি, পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দিয়েছিল।
সোমবার ভোরে যখন গলফ ক্লাবের সামনে অচেনা লোককে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন, তখন সেখান দিয়েই যাচ্ছিল পুলিশ পেট্রলের একটি জিপ। টহলদার বাহিনী লোকটিকে ধরে নিয়ে কাছেই শিলংয়েন প্যাসটিওর বিটহাউস থানাতে নিয়ে যাওয়ার পরেই সালাহউদ্দিন এসব কথা বলেন।
পুলিশ তার পরিচয় জানতে চাওয়ায় তিনি ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, মুখে কোনও কথা জোগায় না। ওনার অবস্থা দেখে থানাতেই সিদ্ধান্ত হয় ইনি নিশ্চয় মানসিক ভারসাম্যহীন, আর তারপরই পুলিশ তাকে শিলংয়ের মিমহ্যানসে (মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল অ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সায়েন্স) ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। মিমহ্যানস শিলংয়ে মানসিক প্রতিবন্ধীর হাসপাতাল বলেই পরিচিত। সালাহ উদ্দিন আহমেদের গতি হয় সেখানেই।
মিমহ্যানসে ডাক্তারদের চিকিৎসায় গতকাল রাত থেকেই অল্প অল্প করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষণ দেখাতে শুরু করেন তিনি। তারপর আজ সকালে তিনি মিমহ্যানসের ডাক্তারদের জানান, ঢাকায় তার স্ত্রীর টেলিফোন নম্বর তার মনে পড়েছে– সেখানে তিনি ফোন করে কথা বলতে চান। এরপরই তিনি ঢাকায় স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন করে জানান, তিনি ভাল আছেন, মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ যখন শিলং গলফ ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে, তখন তিনি কপর্দকশূন্য অবস্থায় থাকলেও তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মিমহ্যানসে চিকিৎসকরা এদিন তাকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তার হৃদযন্ত্রে কিছু দুর্বলতার লক্ষণ আছে। ফলে মানসিক হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে এদিন বিকেলে তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর মেঘালয় পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারলেও হাসপাতাল স্থানান্তরের সময় সালাহ উদ্দিন নিজেই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন। আমাকে উত্তরা থেকে অচেনা লোকজন তুলে নিয়েছিল। আমি জানি না, কিভাবে এখানে এলাম।’
ধারণা করা হচ্ছে, শিলংয়ের সবচেয়ে কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের ডাউকি– সেটাও প্রায় চল্লিশ-বিয়াল্লিশ মাইল দূরে। প্রাথমিকভাবে মেঘালয় পুলিশ অনুমান করছে রবিবার রাতে সেই ডাউকির কাছে সীমান্ত পেরিয়েই ভারতে ঢোকেন সালাউদ্দিন আহমেদ– কিংবা তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়! তারপর সেখান থেকে কোনও বাস বা ভাড়ার টেম্পোয় চেপে তিনি সোমবার ভোরে শিলংয়ে পৌঁছান এবং কিছুক্ষণ পর পুলিশের কাছে ধরা পড়েন।