ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিলেন উপাচার্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • ২০ বার

তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তারা।

এর আগে, ‘প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লংমার্চ’ কর্মসূচির সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির মধ্যে ভিজেই কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রার শুরুতে গুলিস্তান মাজার গেট এলাকায় পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন তারা। এরপর মৎস্য ভবন এলাকায় দ্বিতীয়বার বাধা পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন। কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে পৌঁছানোর পর পুলিশ অতর্কিতে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং গরম পানি ছোড়ে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংলিশ বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, ঢাকা ট্রিবিউনের জবি প্রতিনিধি সোহানুর রহমান, দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি। আহতদের মধ্যে মেহেদী হাসান, ওমর ফারুক, সাকিব, আরিফ আসলাম, বিন মোহাম্মদ ইমন, রেদোয়ান, আসিফ, রহমান, শফিক, মুজাহিদ, নাহিদ হাসান, রায়হান, জিহাদ, আবু বক্কর, নিউটন ইসলাম,ফারুক হোসেন, রাসেল, মাহিদ, রফিক, জিসানুলসহ ৩০জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’

রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, ‘যমুনার সামনে জাওয়ার কোনো সুজোগ নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে যাওয়া হবে না।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ঐ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিলেন উপাচার্য

আপডেট টাইম : ০৬:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তারা।

এর আগে, ‘প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লংমার্চ’ কর্মসূচির সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির মধ্যে ভিজেই কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রার শুরুতে গুলিস্তান মাজার গেট এলাকায় পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন তারা। এরপর মৎস্য ভবন এলাকায় দ্বিতীয়বার বাধা পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন। কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে পৌঁছানোর পর পুলিশ অতর্কিতে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং গরম পানি ছোড়ে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংলিশ বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, ঢাকা ট্রিবিউনের জবি প্রতিনিধি সোহানুর রহমান, দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি। আহতদের মধ্যে মেহেদী হাসান, ওমর ফারুক, সাকিব, আরিফ আসলাম, বিন মোহাম্মদ ইমন, রেদোয়ান, আসিফ, রহমান, শফিক, মুজাহিদ, নাহিদ হাসান, রায়হান, জিহাদ, আবু বক্কর, নিউটন ইসলাম,ফারুক হোসেন, রাসেল, মাহিদ, রফিক, জিসানুলসহ ৩০জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’

রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, ‘যমুনার সামনে জাওয়ার কোনো সুজোগ নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে যাওয়া হবে না।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ঐ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।