ঢাকা ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিভাবে বাংলাদেশকে বদলে দিলেন ড. ইউনূস? তার সাফল্য কি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ১২ বার

ড. মোহাম্মদ ইউনূস যেনো ওয়ান ম্যান আর্মি। যেভাবে অর্থনীতিতে বিধ্বস্ত একটি দেশকে টেনে তুললেন তা পুরো বিশ্বের বুকেই বিরল নজির গড়লো। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর ভেঙ্গে পড়ে দেশের ব্যাংকিং সিস্টেম, ডাউন হয়ে যায় দেশের রিজার্ভের পরিমাণ। সেখান থেকে একাই যেনো দেশকে টেনে তুলেছেন তিনি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারের সাফল্য দেখে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।

গত মাসে বিদেশ থেকে কি পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে তা শুনলে চোখ রীতিমত কপালে উঠবে আপনার। মার্চ এর ২৬ তারিখ পর্যন্ত এসেছে ২৯৪ কোটি মার্কিন ডলার যা ছাড়িয়ে গেছে পূর্বের সকল রেকর্ড। এর আগে কোন একক মাসে এত পরিমাণ প্রাবাসী আয় দেশে আসেনি কখনোই। রেমিটেন্স বেড়ে যাওয়ায় দেশের রিজার্ভও বেড়ে গেছে বহুগুনে, দেশের বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি।

শুধু কি অর্থনৈতিক দিক? ড. ইউনূসের সাফল্যের স্বাক্ষর রয়েছে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই, এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাত অন্যতম। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় যেখানে গরমকাল এলেই দেশজুড়ে হতো লোডশেডিং, সেখানে এবার যেনো ভিন্ন রূপ দেখলো দেশের মানুষ। শহরাঞ্চল তো দূরের কথা প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলেও লোডশেডিং এর দেখা তেমন একটা নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানীর প্রতিষ্ঠান আদানী পাওয়ার তাদের বকেয়া বুঝে পাওয়ায় আবারও দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে।

প্রতিবছর রমজান মাস এলেই বাজারে যেনো দ্রব্যমূল্যের দামে আগুন জ্বলে। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্নতা, ১২০ টাকার পেঁয়াজ ৪০ টাকা আর ৪০ টাকার আলু ২০ টাকা ছিলো না কোন সিন্ডিকেটও। নিয়মিত বাজার তদারকির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য পুড়ো মাস জুড়েই ছিলো হাতের নাগালে।

এদিকে ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর রোহিঙ্গা সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছিলো, জাতিসংঘ তাদের খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায়। কিন্তু এই মাস্টারমাইন্ড সেই সময়ই জাতিসংঘ মহাসচিবকে দেশে আনলেন আর স্বচক্ষে দেখালেন রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতি। বেস এরপরই ঘোষণা এলো রোহিঙ্গাদের খাদ্যের জন্য প্রতিমাসে জনপ্রতি বরাদ্দ কমছে না বরং ১২ ডলারই থাকছে। এর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র ৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।

ইউরোপিয় দেশগুলোতে যেতে হলে ভিসা কার্যক্রম করতে হতো ভারত থেকে। কিন্তু ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দুরদর্শিতায় ই্উরোপিয় দেশগুলো বাংলাদেশেই তাদের ভিসা সেন্টার খোলার উদ্যোগ নিয়েছে, ইতিমধ্যে অষ্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো ঘোষণাই দিয়েছেন ভিসা সেন্টার খোলার। অন্যদিকে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে দেখা যায় এক ভিন্ন বাংলাদেশ যেখানে ছিলো না কোন শিডিউল বিপর্যয় ছিলো না কোন যানজট। সাভাবিকভাবে ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেশ বিরাম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের কিন্তু এবার রেলষ্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়েছে একদম রাইট টাইমে। ছিলো না কোন ভোগান্তি অতিরিক্ত ভিড় বা ছাদে যাত্রী ওঠার মত ঘটনাও। সড়ক পথেও এবার ভোগান্তি ছিলো না বললেই চলে, ট্রাফিক পুলিশ ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে দেখা যায়নি কোন প্রকার যানজটের চিত্র।

তবে এ সকল কিছু কে ছাপিয়ে যেনো প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর। এই সফরে দেশের জন্য তিনি এনেছেন দু হাত ভরে। ২০২৮ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত রপ্তানী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ এর পাশাপাশি বাংলাদেশে হাসপাতালে নিমার্ণ থেকে শুরু করে আরো বেশ কিছু প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এই অল্প সময়ে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস যা করে দেখিয়েছেন তা করতে পারে নি এর আগের কোন অন্তবর্তী সরকার কিংবা নির্বচিত সরকারও। বিশ্বের বুকে আমাদের গর্ব প্রফেসর ইউনূস।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিভাবে বাংলাদেশকে বদলে দিলেন ড. ইউনূস? তার সাফল্য কি

আপডেট টাইম : ০৩:১০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

ড. মোহাম্মদ ইউনূস যেনো ওয়ান ম্যান আর্মি। যেভাবে অর্থনীতিতে বিধ্বস্ত একটি দেশকে টেনে তুললেন তা পুরো বিশ্বের বুকেই বিরল নজির গড়লো। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর ভেঙ্গে পড়ে দেশের ব্যাংকিং সিস্টেম, ডাউন হয়ে যায় দেশের রিজার্ভের পরিমাণ। সেখান থেকে একাই যেনো দেশকে টেনে তুলেছেন তিনি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারের সাফল্য দেখে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।

গত মাসে বিদেশ থেকে কি পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে তা শুনলে চোখ রীতিমত কপালে উঠবে আপনার। মার্চ এর ২৬ তারিখ পর্যন্ত এসেছে ২৯৪ কোটি মার্কিন ডলার যা ছাড়িয়ে গেছে পূর্বের সকল রেকর্ড। এর আগে কোন একক মাসে এত পরিমাণ প্রাবাসী আয় দেশে আসেনি কখনোই। রেমিটেন্স বেড়ে যাওয়ায় দেশের রিজার্ভও বেড়ে গেছে বহুগুনে, দেশের বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি।

শুধু কি অর্থনৈতিক দিক? ড. ইউনূসের সাফল্যের স্বাক্ষর রয়েছে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই, এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাত অন্যতম। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় যেখানে গরমকাল এলেই দেশজুড়ে হতো লোডশেডিং, সেখানে এবার যেনো ভিন্ন রূপ দেখলো দেশের মানুষ। শহরাঞ্চল তো দূরের কথা প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলেও লোডশেডিং এর দেখা তেমন একটা নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানীর প্রতিষ্ঠান আদানী পাওয়ার তাদের বকেয়া বুঝে পাওয়ায় আবারও দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে।

প্রতিবছর রমজান মাস এলেই বাজারে যেনো দ্রব্যমূল্যের দামে আগুন জ্বলে। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্নতা, ১২০ টাকার পেঁয়াজ ৪০ টাকা আর ৪০ টাকার আলু ২০ টাকা ছিলো না কোন সিন্ডিকেটও। নিয়মিত বাজার তদারকির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য পুড়ো মাস জুড়েই ছিলো হাতের নাগালে।

এদিকে ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর রোহিঙ্গা সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছিলো, জাতিসংঘ তাদের খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায়। কিন্তু এই মাস্টারমাইন্ড সেই সময়ই জাতিসংঘ মহাসচিবকে দেশে আনলেন আর স্বচক্ষে দেখালেন রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতি। বেস এরপরই ঘোষণা এলো রোহিঙ্গাদের খাদ্যের জন্য প্রতিমাসে জনপ্রতি বরাদ্দ কমছে না বরং ১২ ডলারই থাকছে। এর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র ৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।

ইউরোপিয় দেশগুলোতে যেতে হলে ভিসা কার্যক্রম করতে হতো ভারত থেকে। কিন্তু ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দুরদর্শিতায় ই্উরোপিয় দেশগুলো বাংলাদেশেই তাদের ভিসা সেন্টার খোলার উদ্যোগ নিয়েছে, ইতিমধ্যে অষ্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো ঘোষণাই দিয়েছেন ভিসা সেন্টার খোলার। অন্যদিকে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে দেখা যায় এক ভিন্ন বাংলাদেশ যেখানে ছিলো না কোন শিডিউল বিপর্যয় ছিলো না কোন যানজট। সাভাবিকভাবে ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেশ বিরাম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের কিন্তু এবার রেলষ্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়েছে একদম রাইট টাইমে। ছিলো না কোন ভোগান্তি অতিরিক্ত ভিড় বা ছাদে যাত্রী ওঠার মত ঘটনাও। সড়ক পথেও এবার ভোগান্তি ছিলো না বললেই চলে, ট্রাফিক পুলিশ ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে দেখা যায়নি কোন প্রকার যানজটের চিত্র।

তবে এ সকল কিছু কে ছাপিয়ে যেনো প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর। এই সফরে দেশের জন্য তিনি এনেছেন দু হাত ভরে। ২০২৮ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত রপ্তানী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ এর পাশাপাশি বাংলাদেশে হাসপাতালে নিমার্ণ থেকে শুরু করে আরো বেশ কিছু প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এই অল্প সময়ে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস যা করে দেখিয়েছেন তা করতে পারে নি এর আগের কোন অন্তবর্তী সরকার কিংবা নির্বচিত সরকারও। বিশ্বের বুকে আমাদের গর্ব প্রফেসর ইউনূস।