ফরিদপুরে এ বছর লালমির (বাঙ্গি) বাম্পার ফলন হয়েছে। সুস্বাদু এ লালমি দেখতে অনেকটা বাঙ্গির মতো হলেও স্বাদ ও ঘ্রাণে এটি ভিন্ন। পানির পরিমাণ বেশি থাকায় রোজাদারদের কাছে ফলটি বেশ প্রিয়। প্রতিবছরই রমজান মাসকে সামনে রেখে কৃষক এ ফলের চাষাবাদ করে থাকেন। এ বছর চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত লালমি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চলতি বছর ৪৫ কোটি টাকার বাণিজ্যের আশা করছে কৃষি বিভাগ। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে লালমির চাষ। চলতি মৌসুমে একশ লালমি প্রকারভেদে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, প্রতি হাটে প্রায় চার লাখ টাকার লালমি বিক্রি হয়। দিন যত যাচ্ছে, বিক্রিও বাড়ছে।
চাষি খালেক, ছলেমান শেখ ও রিনা বেগম বলেন, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার লালমির ফলন ভালো হয়েছে, বিক্রি করে দামও ভালো পাচ্ছি। চার মাসের মধ্যেই লালমি বিক্রি করা যায়, খরচও কম, লাভ বেশি।
সরেজমিন সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক লালমি উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেত থেকে লালমি তুলে পাশেই ধোয়া হচ্ছে। এরপর গাড়িতে করে পাঠানো হচ্ছে হাটে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এতে শ্রম দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দড়ি কৃষ্ণপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে লালমির হাট। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাইকাররা এ হাট থেকে লালমি কিনে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় এখানকার লালমির চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে।
ফরিদপুর কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লালমি আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ হাজার ২৫০ টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এ বছর লালমির বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষক। চাহিদা থাকায় জেলার লালমি দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।