ভূমিসেবা সার্ভারে সমস্যার কারণে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে জমির নামজারি, খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) আদায় বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে জমি সংক্রান্ত সকল সেবা ও পর্চা (খতিয়ান) সেবার কার্যক্রম।
গত ২৬ নভেম্বর থেকে অনলাইনে ভূমিসেবা সার্ভারটি বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে নামজারি ও খাজনা বন্ধ থাকায় জমি রেজিষ্ট্রি করতে পারছেন না এলাকার লোকজন। এতে করে চরম জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। সার্ভার বন্ধ থাকায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
এছাড়া খাজনা প্রদান ও নামজারি না হওয়ায় সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল রেজিষ্ট্রি হচ্ছে না বললেই চলে। এতে জনভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। জমি কেনাবেচা না করতে পেরে এই উপজেলার মানুষ নানাবিধ সংকটে পড়েছে।
তবে খুব দ্রুত কার্যক্রম চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ভূমি অফিস। এ প্রসঙ্গে উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘সার্ভারের সমস্যার কারণে প্রায় দেড় মাস ধরে আমাদের জমির খাজনা দিতে পারছি না। খাজনা দিতে না পারায় জমি রেজিষ্ট্রি করাও সম্ভব হচ্ছে না। খুবই সমস্যায় আছি।’
উপজেলার ফরাজীকান্দি এলাকার আ. বাতেন বলেন, ‘আমাদের কিছু জমি জরুরি বিক্রি করা দরকার। এর জন্য নামজারি করা প্রয়োজন। সার্ভারে সমস্যার কারণে নামজারি করতে পারছি না, তাই জমিও বিক্রি করতে পারছি না।’
টরকী গ্রামের স্বপন বলেন, ‘এখন ভূমির সকল সেবা অনলাইন ভিত্তিক। অনলাইন সার্ভার বন্ধ থাকায় নামজারি করতে পারছি না।’
এদিকে মতলব উত্তর উপজেলার সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক তোফায়েল আহমেদ (রিপন মুক্তার) বলেন, ‘হালনাগাদ খাজনার রশিদ ছাড়া দলিল রেজিষ্ট্রি না হওয়ার কারণে জমির রেজিষ্ট্রি অনেক কমে গেছে। আগে প্রতি সপ্তাহে যেখানে ৩০-৪৫টি দলিল রেজিষ্ট্রি হতো। সেখানে এখন সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০-১৫টি দলিল রেজিষ্ট্রি হচ্ছে।’
উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার মাহবুবের রহমান ওয়াজেদ বলেন, ‘অন্যান্য মাসের তুলনায় ডিসেম্বর মাসে দলিল রেজিষ্ট্রি তুলনামূলক বেশি হয়। কিন্তু লোকজন জমির খাজনা দিতে না পারায় দলিল রেজিষ্ট্রির পরিমাণ কমেছে। কারণ, দলিল রেজিষ্ট্রির ক্ষেত্রে জমির হালনাগাদ খাজনার রশিদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
মতলব উত্তর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিল্লোল চাকমা বলেন, ‘সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের জন্য ভূমিসেবা সার্ভারে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।’