ঢাকার দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে না এক লিটার ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল। খুচরা বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, মিল মালিকরা দাম বাড়ানোর জন্য বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। এদিকে সরকারের কাছে তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন উৎপাদনকারীরা। বিষয়টি নিয়ে গতকাল রবিবার বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট মোকাবিলায় মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সমস্যা সমাধানে আজ সোমবার আবারও বৈঠকে বসবেন তারা।
কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। অনেক দোকানেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রবিবার বিকালে সচিবালয়ে মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট হওয়ার কারণ সম্পর্কে মিলগুলোর কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান উপদেষ্টা। তারা দাবি করেন যে, মিলগুলো স্বাভাবিকভাবে ভোজ্যতেল সরবরাহ করছেন। তাই বাজারে তেলের সংকট হওয়ার পেছনে তাদের কোনো দায় নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মিল মালিকরা অফিসিয়ালি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব দেননি। তবে তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম অনেক বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারে দাম নির্ধারণের দাবি করেছেন তারা। রবিবারের বৈঠকে দাম বাড়ানো কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ সোমবার সকালে মিল মালিকদের সঙ্গে সভা করবেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারা।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে সরকারকে চাপ দিতে থাকেন মিল মালিকরা। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে দাম বাড়ানোর বদলে শুল্কছাড় দিয়ে মিলগুলোকে খুশি রাখার চেষ্টা করে সরকার। গত অক্টোবরে সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে দুই দফায় শুল্ককর কমানো হয়েছে।
প্রথম দফায় ১৭ অক্টোবর ও দ্বিতীয় দফায় ১৯ নভেম্বর শুল্ককর কমিয়ে তা নামিয়ে আনা হয়েছে ৫ শতাংশে। তাতে প্রতি কেজি অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলে শুল্ককর ১৭-১৮ টাকা থেকে কমে ৭ টাকায় নেমে এসেছে, অর্থাৎ প্রতি কেজিতে শুল্ককর কমেছে ১০-১১ টাকা।