সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মাঠের পাকা-আধা পাকা আমন ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। আর অল্প কিছুদিন পরেই এসব ধান কেটে ঘরে তোলার কথা। কিন্তু ঘরে তোলার সময় ধান গাছ নুয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে বুধাবার (৩০ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্যের। বাতাসে নষ্ট হয়েছে মাঠের পাকা রোপা আমন ধানের। এদিকে এমন ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। ফলে অনেকটাই ক্ষতিসাধন হয়েছে বলেও জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলা ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের মাঠের আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল হাইব্রিড ৫৪৫ হেক্টর, উফশী ৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর ও স্থানীয় ৩৬ হেক্টর অর্থাৎ মোট ৬ হাজার ৫৩১ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ছিল হাইব্রিড ৭৬০ হেক্টর, উফশী ৫ হাজার ৭৪০ হেক্টর ও স্থানীয় ২০ হেক্টর অর্থাৎ মোট ৬ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমন মৌসুমে কৃষককে সরকারি প্রনোদনা (বীজ ও সার) দেওয়া হয়েছে।
জগশ্বর গ্রামের কৃষক আলী মন্ডল বলেন, আমার জমিতে ধান ভালো হলেও ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ঝড়ে ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে। আমার দুই বিঘার ধান হেলে পড়েছে। ধানের শিষে যে দানা রয়েছে। তা এখনও শক্ত হয়নি। অনেক ধান চিটা হয়ে যাবে। আর যে ফলন হওয়ার কথা ছিল তাও কমে যাবে।
পাটুয়াকান্দি গ্রামের কৃষক শান্ত বলেন, আমার জমিতে লাগানো অধিকাংশ আমন ঝড়ো হাওয়ায় ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার অনেক ভালো ফলন হয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাঙ্খিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদা সুলতানা বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে আমন ধানের তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি খুব শিগগিরই এই দুর্যোগ কেটে যাবে।
এছাড়া ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। কৃষকরা বলছেন, পাকা আমন ধান ঘরে তোলার এখনই মোক্ষম সময়। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।