ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব আমলে জীবন কল্যাণময় হয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৮:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ২২ বার

দুনিয়ার প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা সব অন্যায় ও গুনাহের মূল। আর দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহ সব সৎকর্মের মূল। দুনিয়া বিমুখতা দেহ ও মনকে প্রশান্ত রাখে। আর দুনিয়ার প্রতি অধিক আগ্রহ দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি বৃদ্ধি করে। অন্তর থেকে দুনিয়ার ভালোবাসাকে বের করে ফেলার নাম জুহুদ বা দুনিয়া বিমুখতা।

জীবনধারণের অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত বস্তু পরিত্যাগ করার নামও জুহুদ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবিরা এ ধরনের জুহুদের মধ্যেই জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাই বিলাসিতা প্রকাশ এবং অতিমাত্রায় দুনিয়া উপভোগ থেকে দূরে থাকা। পরকালের জন্য উত্তম সম্বল গ্রহণ করা। দুনিয়ার অতিরিক্ত মোহ ও ভালোবাসা বর্জন করে শান্তিময় জীবন লাভে অবশ্য করণীয় রয়েছে। সেগুলো তুলে ধরা হলো

এক. দুনিয়ার বাস্তবতা নিয়ে ভাবা: ইমানদারের সামনে দুনিয়ার হাকিকত ও বাস্তবতা পরিষ্কার। দুনিয়ার হাকিকত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জেনে রেখো, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহংকার, ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়। তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও। অতঃপর তা খড়কুটায় পরিণত হয়। আর পরকালে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। দুনিয়ার জীবনটা তো ধোঁকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা হাদিদ ২০)

আলোচ্য আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেও ভরসা করার যোগ্য নয়। দুনিয়ার জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের বিষয়গুলো যথাক্রমে এরকম প্রথমে ক্রীড়া-কৌতুক, এরপর সাজসজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা ও গর্ববোধ।

প্রত্যেক মানুষের জীবনের প্রথম অংশ খেলাধুলার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। এরপর যৌবনে সাজসজ্জা বা দুনিয়ার জীবন গোছানোর কাজে ব্যয় হয়। এরপর শেষ বয়সে সমসাময়িক ও সমবয়সীদের সঙ্গে ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি নিয়ে গর্ববোধ করার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। উল্লিখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে।

আয়াতে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, পার্থিব জীবন ক্ষয় হয়ে যাওয়াকে ফসলের সঙ্গে উপমা দেওয়া হয়েছে। যেভাবে ফসল শ্যামল ও সবুজবর্ণ হয়ে উঠলে দেখতে বড়ই চমৎকার লাগে, কৃষকরা তা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। কিন্তু তা শিগগিরই শুকিয়ে পীতবর্ণ হয়ে খড়কুটায় পরিণত হয়। ঠিক এভাবে দুনিয়ার সাজসজ্জা, সন্তানসন্ততি এবং অন্যান্য সব জিনিস মানুষের অন্তরকে খুশিতে ভরে দেয়। কিন্তু নশ্বর এ জীবন কিছুদিনের জন্য, যার স্থায়িত্ব নেই।

দুই. পরকাল নিয়ে ভাবা: ইমানদার বিশ্বাস করে পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ী। পরকালীন জীবন অসীম ও চিরস্থায়ী। তাই ইমানদার দুনিয়াকে প্রয়োজন মতো ধারণ করে। কিন্তু দুনিয়া অর্জন কখনোই তার জীবনের লক্ষ্য হয় না। সে সবসময় পরকালকে দুনিয়ার ওপর প্রাধান্য দেয়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও, অথচ আখেরাত কত বেশি উৎকৃষ্ট এবং কত বেশি স্থায়ী।’ (সুরা আলা ১৬-১৭)

তিন. মৃত্যুর কথা অধিক স্মরণ করা: মানুষের মৃত্যু হবে। এটা চিরসত্য বিধান। যা ভুলে থাকা যায়। কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া যায় না। প্রতিটি মুসলমানের উচিত হলো, সদা-সর্বদা মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ এবং পরকালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদ-আহ্লাদ নিঃশেষকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি ২৩০৬)

চার. অধিক পরিমাণে জিকির করা: জিকির মানে মহান আল্লাহর স্মরণ। আর আল্লাহর স্মরণ বা জিকির হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের রুহ।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব এবং কৃতজ্ঞতা আদায় করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা ১৫২)

সুতরাং বান্দা যখন আল্লাহর জিকিরে মশগুল হয়, তখন এ কথা স্মরণ করা কর্তব্য যে, স্বয়ং আল্লাহতায়ালা তাদের স্মরণ করছেন। এতে জিকিরের স্বাদ ও তৃপ্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। জিকিরের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পারো।’ (সুরা আনফাল ৪৫)

পাঁচ. দ্বীনকে দুনিয়ার ওপর প্রাধান্য দেওয়া: দুনিয়ামুখী মানুষের সব স্বপ্ন ও আয়োজন থাকে দুনিয়া ঘিরে। অথচ এই দুনিয়া নিমেষে ধ্বংস হয়ে যাবে। যে ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার মোহে পড়ে মানুষ চিরস্থায়ী আখেরাতকে ভুলে যায়, সে দুনিয়াকে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে খেল-তামাশা ও ধোঁকার উপকরণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই হবে সফল। বস্তুত পার্থিব জীবন ধোঁকার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান ১৮৫)

আরেকটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘দুনিয়ার জীবন প্রকৃতপক্ষে সাময়িক সুখ ও ভোগের উপকরণ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। আর নিঃসন্দেহে আল্লাহভীরুদের জন্য পরকালীন জীবনই উত্তম। এর পরও কি তোমরা বুঝবে না।’ (সুরা আনআম ৩২)

মহান আল্লাহ আমাদের উল্লিখিত আমলগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার তওফিক দান করুন। যাতে সেসব আমলের বাস্তবতা আমাদের বুঝে আসে এবং আমলগুলো আমাদের জীবনে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি। তাহলে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী আমাদের এই জীবন হবে সুখময়। অন্তরে থাকবে প্রশান্তি। আর পরকালের জন্য থাকবে মহাসফলতা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

যেসব আমলে জীবন কল্যাণময় হয়

আপডেট টাইম : ০৬:১৮:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

দুনিয়ার প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা সব অন্যায় ও গুনাহের মূল। আর দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহ সব সৎকর্মের মূল। দুনিয়া বিমুখতা দেহ ও মনকে প্রশান্ত রাখে। আর দুনিয়ার প্রতি অধিক আগ্রহ দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি বৃদ্ধি করে। অন্তর থেকে দুনিয়ার ভালোবাসাকে বের করে ফেলার নাম জুহুদ বা দুনিয়া বিমুখতা।

জীবনধারণের অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত বস্তু পরিত্যাগ করার নামও জুহুদ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবিরা এ ধরনের জুহুদের মধ্যেই জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাই বিলাসিতা প্রকাশ এবং অতিমাত্রায় দুনিয়া উপভোগ থেকে দূরে থাকা। পরকালের জন্য উত্তম সম্বল গ্রহণ করা। দুনিয়ার অতিরিক্ত মোহ ও ভালোবাসা বর্জন করে শান্তিময় জীবন লাভে অবশ্য করণীয় রয়েছে। সেগুলো তুলে ধরা হলো

এক. দুনিয়ার বাস্তবতা নিয়ে ভাবা: ইমানদারের সামনে দুনিয়ার হাকিকত ও বাস্তবতা পরিষ্কার। দুনিয়ার হাকিকত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জেনে রেখো, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহংকার, ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়। তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও। অতঃপর তা খড়কুটায় পরিণত হয়। আর পরকালে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। দুনিয়ার জীবনটা তো ধোঁকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা হাদিদ ২০)

আলোচ্য আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেও ভরসা করার যোগ্য নয়। দুনিয়ার জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের বিষয়গুলো যথাক্রমে এরকম প্রথমে ক্রীড়া-কৌতুক, এরপর সাজসজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা ও গর্ববোধ।

প্রত্যেক মানুষের জীবনের প্রথম অংশ খেলাধুলার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। এরপর যৌবনে সাজসজ্জা বা দুনিয়ার জীবন গোছানোর কাজে ব্যয় হয়। এরপর শেষ বয়সে সমসাময়িক ও সমবয়সীদের সঙ্গে ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি নিয়ে গর্ববোধ করার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। উল্লিখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে।

আয়াতে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, পার্থিব জীবন ক্ষয় হয়ে যাওয়াকে ফসলের সঙ্গে উপমা দেওয়া হয়েছে। যেভাবে ফসল শ্যামল ও সবুজবর্ণ হয়ে উঠলে দেখতে বড়ই চমৎকার লাগে, কৃষকরা তা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। কিন্তু তা শিগগিরই শুকিয়ে পীতবর্ণ হয়ে খড়কুটায় পরিণত হয়। ঠিক এভাবে দুনিয়ার সাজসজ্জা, সন্তানসন্ততি এবং অন্যান্য সব জিনিস মানুষের অন্তরকে খুশিতে ভরে দেয়। কিন্তু নশ্বর এ জীবন কিছুদিনের জন্য, যার স্থায়িত্ব নেই।

দুই. পরকাল নিয়ে ভাবা: ইমানদার বিশ্বাস করে পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ী। পরকালীন জীবন অসীম ও চিরস্থায়ী। তাই ইমানদার দুনিয়াকে প্রয়োজন মতো ধারণ করে। কিন্তু দুনিয়া অর্জন কখনোই তার জীবনের লক্ষ্য হয় না। সে সবসময় পরকালকে দুনিয়ার ওপর প্রাধান্য দেয়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও, অথচ আখেরাত কত বেশি উৎকৃষ্ট এবং কত বেশি স্থায়ী।’ (সুরা আলা ১৬-১৭)

তিন. মৃত্যুর কথা অধিক স্মরণ করা: মানুষের মৃত্যু হবে। এটা চিরসত্য বিধান। যা ভুলে থাকা যায়। কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া যায় না। প্রতিটি মুসলমানের উচিত হলো, সদা-সর্বদা মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ এবং পরকালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদ-আহ্লাদ নিঃশেষকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি ২৩০৬)

চার. অধিক পরিমাণে জিকির করা: জিকির মানে মহান আল্লাহর স্মরণ। আর আল্লাহর স্মরণ বা জিকির হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের রুহ।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব এবং কৃতজ্ঞতা আদায় করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা ১৫২)

সুতরাং বান্দা যখন আল্লাহর জিকিরে মশগুল হয়, তখন এ কথা স্মরণ করা কর্তব্য যে, স্বয়ং আল্লাহতায়ালা তাদের স্মরণ করছেন। এতে জিকিরের স্বাদ ও তৃপ্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। জিকিরের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পারো।’ (সুরা আনফাল ৪৫)

পাঁচ. দ্বীনকে দুনিয়ার ওপর প্রাধান্য দেওয়া: দুনিয়ামুখী মানুষের সব স্বপ্ন ও আয়োজন থাকে দুনিয়া ঘিরে। অথচ এই দুনিয়া নিমেষে ধ্বংস হয়ে যাবে। যে ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার মোহে পড়ে মানুষ চিরস্থায়ী আখেরাতকে ভুলে যায়, সে দুনিয়াকে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে খেল-তামাশা ও ধোঁকার উপকরণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই হবে সফল। বস্তুত পার্থিব জীবন ধোঁকার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান ১৮৫)

আরেকটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘দুনিয়ার জীবন প্রকৃতপক্ষে সাময়িক সুখ ও ভোগের উপকরণ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। আর নিঃসন্দেহে আল্লাহভীরুদের জন্য পরকালীন জীবনই উত্তম। এর পরও কি তোমরা বুঝবে না।’ (সুরা আনআম ৩২)

মহান আল্লাহ আমাদের উল্লিখিত আমলগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার তওফিক দান করুন। যাতে সেসব আমলের বাস্তবতা আমাদের বুঝে আসে এবং আমলগুলো আমাদের জীবনে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি। তাহলে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী আমাদের এই জীবন হবে সুখময়। অন্তরে থাকবে প্রশান্তি। আর পরকালের জন্য থাকবে মহাসফলতা।