ঢাকা ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গাড়িটি রেখে গেলাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • ৩১৬ বার

মঙ্গলবার গভীর রাত। শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয় সংলগ্ন সড়কের সামনে পরিত্যক্ত পড়ে আছে বিলাসবহুল মার্সিডিজ বেন্‌জ গাড়ি। কর্তৃপক্ষের নজরে আসা মাত্রই সেটি উদ্ধার করা হয়। ভেতরে দেখা যায় গাড়িটির ‘অবৈধ দখলে’ রাখা মালিক এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজের দখলে থাকা গাড়িটি জমা প্রদান করলাম’। এ ঘটনা রাজধানী কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনের।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘এটা একটা অভিনব ঘটনা। গোয়েন্দা অফিসের সামনে এভাবে রাতের অন্ধকারে স্বেচ্ছায় গাড়ি রেখে যাওয়ার ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি।’

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গাড়ি খুলে এর ভেতর একটি খোলা চিঠি

পাওয়া গেছে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমার দখলে থাকা গাড়িটি শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে জমা প্রদান করি’।

চিঠিতে আরো লেখা রয়েছে, ‘আমি এই গাড়িটি জমা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই যে, আমার মতো অন্যরাও যেন অনুরূপভাবে অবৈধ গাড়ি জমা দেন।’ শুল্ক গোয়েন্দাদের চলমান অভিযানকে স্বাগতও জানানো হয়েছে চিঠিতে। চিঠিটি লেখা হয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর। চিঠির শেষে লেখা রয়েছে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সচেতন নাগরিক।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, জমা করা গাড়িটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি দুই দরজার লাল রঙের এসএলকে ২৩০ মডেলের মার্সিডিজ বেন্‌জ। এর চেসিস নং ডব্লিউডিবি-১৭০৪৬৫২এফ৪১৫৬৪২। গাড়িটির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ২৩০০ সিসি এবং ২০০২ সালে তৈরি।

ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি কারনেটের আওতায় দেশে আনা হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী বিদেশে ফেরত নেয়ার কথা থাকলেও শর্ত ভঙ্গ করে কারনেট সুবিধার অপব্যবহার করে দেশে চালানো হয়েছিল। বর্তমানে দেশব্যাপী অবৈধ গাড়ি আটকে অভিযান পরিচালনায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই গাড়ি স্বেচ্ছায় জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক। এর আগে সিলেটের শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরে একজন অবৈধ গাড়ির ব্যবহারকারী স্বেচ্ছায় একটি লেক্সাস গাড়ি জমা দেন।

এ নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দারা মোট ৩২টি অবৈধ গাড়ি আটক করেছে বলেও জানান ওই শুল্ক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আটক করা এই গাড়িটির শুল্কসহ মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। -এমজমিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গাড়িটি রেখে গেলাম

আপডেট টাইম : ১০:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মঙ্গলবার গভীর রাত। শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয় সংলগ্ন সড়কের সামনে পরিত্যক্ত পড়ে আছে বিলাসবহুল মার্সিডিজ বেন্‌জ গাড়ি। কর্তৃপক্ষের নজরে আসা মাত্রই সেটি উদ্ধার করা হয়। ভেতরে দেখা যায় গাড়িটির ‘অবৈধ দখলে’ রাখা মালিক এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজের দখলে থাকা গাড়িটি জমা প্রদান করলাম’। এ ঘটনা রাজধানী কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনের।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘এটা একটা অভিনব ঘটনা। গোয়েন্দা অফিসের সামনে এভাবে রাতের অন্ধকারে স্বেচ্ছায় গাড়ি রেখে যাওয়ার ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি।’

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গাড়ি খুলে এর ভেতর একটি খোলা চিঠি

পাওয়া গেছে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমার দখলে থাকা গাড়িটি শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে জমা প্রদান করি’।

চিঠিতে আরো লেখা রয়েছে, ‘আমি এই গাড়িটি জমা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই যে, আমার মতো অন্যরাও যেন অনুরূপভাবে অবৈধ গাড়ি জমা দেন।’ শুল্ক গোয়েন্দাদের চলমান অভিযানকে স্বাগতও জানানো হয়েছে চিঠিতে। চিঠিটি লেখা হয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর। চিঠির শেষে লেখা রয়েছে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সচেতন নাগরিক।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, জমা করা গাড়িটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি দুই দরজার লাল রঙের এসএলকে ২৩০ মডেলের মার্সিডিজ বেন্‌জ। এর চেসিস নং ডব্লিউডিবি-১৭০৪৬৫২এফ৪১৫৬৪২। গাড়িটির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ২৩০০ সিসি এবং ২০০২ সালে তৈরি।

ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি কারনেটের আওতায় দেশে আনা হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী বিদেশে ফেরত নেয়ার কথা থাকলেও শর্ত ভঙ্গ করে কারনেট সুবিধার অপব্যবহার করে দেশে চালানো হয়েছিল। বর্তমানে দেশব্যাপী অবৈধ গাড়ি আটকে অভিযান পরিচালনায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই গাড়ি স্বেচ্ছায় জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক। এর আগে সিলেটের শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরে একজন অবৈধ গাড়ির ব্যবহারকারী স্বেচ্ছায় একটি লেক্সাস গাড়ি জমা দেন।

এ নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দারা মোট ৩২টি অবৈধ গাড়ি আটক করেছে বলেও জানান ওই শুল্ক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আটক করা এই গাড়িটির শুল্কসহ মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। -এমজমিন