ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সম্প্রতি বন্যায় দেশের প্রায় ১১টি জেলা প্লাবিত হওয়ায় কৃষিপণ্য ও পোলট্রিশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে দেশি পেঁয়াজে গত এক মাসে দাম না বাড়লেও গত এক বছরে আগের তুলনায় বেড়েছে ৩১ শতাংশ (দেশি) এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশের বেশি। গত এক মাসে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে দেশে প্রতিবছর ছয়-সাত লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হলেও বিশেষ অনুমতি ছাড়া ডিম ও আলু আমদানি হয় না। তাই পেঁয়াজ আমদানি থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব এলেও ডিম ও আলু থেকে তেমন রাজস্ব আসে না।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পেঁয়াজ থেকে রাজস্ব আয় করেছে ৪৩০ কোটি টাকা এবং আলু থেকে আয় এসেছে ৭৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
নির্দিষ্ট মেয়াদে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ সিডি ও ৫ শতাংশ আরডি এবং ডিম ও আলু আমদানিতে সিডি ২৫ শতাংশ, আরডি ৩ শতাংশ এবং এআইটি ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলে আমদানি উৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও দাম কমবে।
এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। তবে এক মাসে কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। ২৯ আগস্ট প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫২ থেকে ৬০ টাকা। আর ২৯ জুলাই ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর গত বছর জুলাইয়ে ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা।
এদিকে গত জুলাই মাসে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। আর এক বছরে বেড়েছে ৩ শতাংশ। ২৯ আগস্ট প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৩ টাকা। আর ২৯ জুলাই ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আশা করা যায়, শুল্ক প্রত্যাহার করলে স্থানীয় বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর কমে না সেটা চলবে না : বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাজারে জিনিসপত্রের দাম একদম হতাশাব্যাঞ্জক না। লোকজনের জন্য বাজার যেন আরো সুখকর হয় তার জন্য কাজ করছি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে দেশের পোলট্রি খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য উৎপাদন খরচ ছাড়াও অন্যান্য ফ্যাক্টর থাকে। বাংলাদেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সহজে কমতে চায় না, সময় লাগে।
পোলট্রি খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ডিম ও মাংস উৎপাদনকারীদের বিদ্যমান সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উৎপাদক থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত দামের বিরাট ব্যবধান থাকবে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে, আমরা বলেছি সেগুলো দেখব। ট্যাক্স ও ট্যারিফের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনালি মুরগির দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেবে। ভোক্তা অধিকার ও প্রতিযোগিতা কমিশন বাজার মনিটরিং করবে। উৎপাদনকারীরা বলেছেন, তাঁরা উৎপাদন বাড়াবেন। আবার বিপণনেরও কিছু মিস ম্যানেজমেন্ট রয়েছে, সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম এই মধ্যে কমেছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের বলেছি, পরিবহন ব্যয় কমবে, অন্যান্য ব্যয়ও কমবে। সেটা যেন উৎপাদিত পণ্যে প্রতিফলন হয়। বাংলাদেশে পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর কমে না, সেটা চলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন উপদেষ্টা।
ডিম ও পোলট্রি খাতের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে নজর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে আর কোনো সিন্ডিকেট করতে দেওয়া হবে না।