ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রত্যাহার শুরু সব জেলা প্রশাসক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২২:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৯ বার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনের মুখে গতকাল রোববার তিন দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ছেড়েছেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম রফিকুল ইসলাম। আন্দোলনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়ায় নওগাঁর ডিসি গোলাম মওলার অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শুধু ঝিনাইদহ–নওগাঁ নয়, অধিকাংশ ডিসিদের শেখ হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা ও বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দায়ও নিতে হচ্ছে। এসব নিয়ে অস্বস্তিতে থাকার কথা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জানিয়েছেন ডিসিদের অনেকে।

এমন পরিস্থিতিতে সব জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিল করা হয়েছে।

বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি দু–এক দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হবে। নতুন ডিসি নিয়োগের মানদণ্ড হবে মেধা, দক্ষতা ও সততা। এই মানদণ্ড নির্ধারণে সরকারকে সহযোগিতা দিতে বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত এই তিন ব্যাচের পাঁচ কর্মকর্তাকে সমন্বয়ক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বিসিএস ২৪ ব্যাচের নুরজাহান খানম ও নজরুল ইসলাম, ২৫ ব্যাচের নুরুল করিম ভুইয়া ও ফরিদা খানম এবং ২৭ ব্যাচের সারোয়ার আলম।

ডিসিদের প্রত্যাহার ও নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে আজ সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের কক্ষে পাঁচ সমন্বয়কের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁদের উল্লিখিত সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ এসএসবির একাধিক সদস্য।

বৈঠকে তাঁরা জানান, সরকার বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ২০২২ ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিল করেছে। আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্য সব জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হবে। বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি দু–এক দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হবে। এ কাজে এই পাঁচ সমন্বয়ক সরকারকে সহযোগিতা করবে।

তবে উল্লিখিত বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা।

এর আগে আজ বিকেলে আগের তৈরি করা ডিসি ফিট লিস্ট থেকে কোনো কর্মকর্তাকে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে প্রতিবাদ করেন হাসিনা সরকারের আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা। তাঁরা জনপ্রশাসন সচিব ও এপিডি অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিলের দাবি জানান। এ সময় তিন ব্যাচের পাঁচ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রশাসন সচিব। এরপরই বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেন। সরকারের শীর্ষ মহলের সম্মতি পাওয়ার পরই এই পাঁচ সমন্বয়কের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ডিসিদের ঢাকায় ফেরত আসার সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে ডিসি হতে ইচ্ছুক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদ্য পদোন্নতি পাওয়া উপসচিবসহ বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাল–পরশুর মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন হয় হাসিনা সরকারের। আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরাও সরকারের নির্দেশে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনার পদে ঢাকা ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ১৫ ব্যাচের এবং বাকিগুলোতে ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক পদে বর্তমানে বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। মাঠ প্রশাসনের এসব কর্মকর্তার অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন।

ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই সংস্কারকাজে হাত দিয়েছে। এরই মধ্যে বিগত সরকারের আমলে চুক্তিতে থাকা অনেক কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল হয়েছে। প্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পদায়ন করা হয়েছে। শিগগিরই মাঠ প্রশাসনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) মো. হামিদুল হক নিজ দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিসিদের কেউ কেউ কিছু সমস্যার বিষয়ে আমাদের অবহিত করেছেন। তা নিয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের একাধিক ডিসি বলেন, ‘জুলাই–আগস্টের আন্দোলন ঘিরে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ওপর দিয়ে যে ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে, তা মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা। এখনো পরিবারের অনেকে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে ওঠে। আমরা এখন দিন গুনছি কবে আমাদের ফেরত নেওয়া হবে। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছি।’

রংপুর বিভাগের একজন ডিসি বলেন, ‘আন্দোলনের পর সেবাপ্রার্থীর চেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরাই নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আসছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এমন কিছু অভিযোগ নিয়ে আসছেন, যার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। কিন্তু তাদের কিছু বলাও যাচ্ছে না। কথায় কথায় সরকারের দালাল বলে গালি দিচ্ছেন অনেকে। আমরা চাই সরকার আমাদের ফেরত নিয়ে নতুন ডিসি পদায়ন করুক। দেরি হলে এডিসির কাছেও আমরা দায়িত্ব ছেড়ে ঢাকায় আসতে পারি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রত্যাহার শুরু সব জেলা প্রশাসক

আপডেট টাইম : ১১:২২:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনের মুখে গতকাল রোববার তিন দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ছেড়েছেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম রফিকুল ইসলাম। আন্দোলনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়ায় নওগাঁর ডিসি গোলাম মওলার অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শুধু ঝিনাইদহ–নওগাঁ নয়, অধিকাংশ ডিসিদের শেখ হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা ও বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দায়ও নিতে হচ্ছে। এসব নিয়ে অস্বস্তিতে থাকার কথা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জানিয়েছেন ডিসিদের অনেকে।

এমন পরিস্থিতিতে সব জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিল করা হয়েছে।

বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি দু–এক দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হবে। নতুন ডিসি নিয়োগের মানদণ্ড হবে মেধা, দক্ষতা ও সততা। এই মানদণ্ড নির্ধারণে সরকারকে সহযোগিতা দিতে বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত এই তিন ব্যাচের পাঁচ কর্মকর্তাকে সমন্বয়ক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বিসিএস ২৪ ব্যাচের নুরজাহান খানম ও নজরুল ইসলাম, ২৫ ব্যাচের নুরুল করিম ভুইয়া ও ফরিদা খানম এবং ২৭ ব্যাচের সারোয়ার আলম।

ডিসিদের প্রত্যাহার ও নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে আজ সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের কক্ষে পাঁচ সমন্বয়কের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁদের উল্লিখিত সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ এসএসবির একাধিক সদস্য।

বৈঠকে তাঁরা জানান, সরকার বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ২০২২ ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিল করেছে। আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্য সব জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হবে। বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি দু–এক দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হবে। এ কাজে এই পাঁচ সমন্বয়ক সরকারকে সহযোগিতা করবে।

তবে উল্লিখিত বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা।

এর আগে আজ বিকেলে আগের তৈরি করা ডিসি ফিট লিস্ট থেকে কোনো কর্মকর্তাকে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে প্রতিবাদ করেন হাসিনা সরকারের আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা। তাঁরা জনপ্রশাসন সচিব ও এপিডি অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে বিদ্যমান জেলা প্রশাসক পদায়ন নীতিমালা ও আগের তৈরি ডিসি ফিট লিস্ট বাতিলের দাবি জানান। এ সময় তিন ব্যাচের পাঁচ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রশাসন সচিব। এরপরই বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেন। সরকারের শীর্ষ মহলের সম্মতি পাওয়ার পরই এই পাঁচ সমন্বয়কের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জানান, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ডিসিদের ঢাকায় ফেরত আসার সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে ডিসি হতে ইচ্ছুক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদ্য পদোন্নতি পাওয়া উপসচিবসহ বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাল–পরশুর মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন হয় হাসিনা সরকারের। আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরাও সরকারের নির্দেশে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনার পদে ঢাকা ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ১৫ ব্যাচের এবং বাকিগুলোতে ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক পদে বর্তমানে বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। মাঠ প্রশাসনের এসব কর্মকর্তার অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন।

ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই সংস্কারকাজে হাত দিয়েছে। এরই মধ্যে বিগত সরকারের আমলে চুক্তিতে থাকা অনেক কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল হয়েছে। প্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পদায়ন করা হয়েছে। শিগগিরই মাঠ প্রশাসনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) মো. হামিদুল হক নিজ দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিসিদের কেউ কেউ কিছু সমস্যার বিষয়ে আমাদের অবহিত করেছেন। তা নিয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের একাধিক ডিসি বলেন, ‘জুলাই–আগস্টের আন্দোলন ঘিরে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ওপর দিয়ে যে ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে, তা মনে হলে আতঙ্কে কেঁপে উঠি আমরা। এখনো পরিবারের অনেকে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে ওঠে। আমরা এখন দিন গুনছি কবে আমাদের ফেরত নেওয়া হবে। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছি।’

রংপুর বিভাগের একজন ডিসি বলেন, ‘আন্দোলনের পর সেবাপ্রার্থীর চেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরাই নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আসছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এমন কিছু অভিযোগ নিয়ে আসছেন, যার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। কিন্তু তাদের কিছু বলাও যাচ্ছে না। কথায় কথায় সরকারের দালাল বলে গালি দিচ্ছেন অনেকে। আমরা চাই সরকার আমাদের ফেরত নিয়ে নতুন ডিসি পদায়ন করুক। দেরি হলে এডিসির কাছেও আমরা দায়িত্ব ছেড়ে ঢাকায় আসতে পারি।’