ঢাকা ০৩:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৩ বার

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার পাওয়া গেছে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনা শেষে জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ টাকার পরিমাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নগদ টাকা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি মূদ্রা ও সোনা-রূপার অলঙ্কারও পাওয়া গেছে সিন্দুকে।

কিশোরগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। দানবাক্সগুলোতে এবার রেকর্ড ২৮
বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। পরে মসজিদ কমপ্লেক্সের দুই তলায় নিয়ে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়। মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন।

সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। ২২০ জনের একটি দল দীর্ঘ সাড়ে ১৮ ঘণ্টায় এ টাকা গণনা কাজে অংশ নিয়েছিলেন। দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ

এর আগে, ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স। তখন রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়।

২০২৩ সালে মোট চারবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। সেবার মোট ২১
কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণে।

স্থানীয়রা বলেন, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে অর্থ দান করেন। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়-এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে।

 

মসজিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার লভ্যাংশ থেকে গরিব ও অসহায় লোকদের সহযোগিতা করা হয়। ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছে।

 

মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‌‘দানের টাকায়  মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। যেখানে ৩০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। থাকবে সমৃদ্ধ
লাইব্রেরিসহ আরো নানা আয়োজন। কমপ্লেক্সের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা

আপডেট টাইম : ১১:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার পাওয়া গেছে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনা শেষে জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ টাকার পরিমাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নগদ টাকা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি মূদ্রা ও সোনা-রূপার অলঙ্কারও পাওয়া গেছে সিন্দুকে।

কিশোরগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। দানবাক্সগুলোতে এবার রেকর্ড ২৮
বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। পরে মসজিদ কমপ্লেক্সের দুই তলায় নিয়ে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়। মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন।

সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। ২২০ জনের একটি দল দীর্ঘ সাড়ে ১৮ ঘণ্টায় এ টাকা গণনা কাজে অংশ নিয়েছিলেন। দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ

এর আগে, ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স। তখন রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়।

২০২৩ সালে মোট চারবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। সেবার মোট ২১
কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণে।

স্থানীয়রা বলেন, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে অর্থ দান করেন। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়-এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে।

 

মসজিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার লভ্যাংশ থেকে গরিব ও অসহায় লোকদের সহযোগিতা করা হয়। ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছে।

 

মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‌‘দানের টাকায়  মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। যেখানে ৩০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। থাকবে সমৃদ্ধ
লাইব্রেরিসহ আরো নানা আয়োজন। কমপ্লেক্সের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।’