ঢাকা ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে যা বললেন শশী থারুর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
  • ৫২ বার

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার সদস্য শশী থারুর। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাঁকে আশ্রয় দেওয়াই সমীচীন, আশ্রয় না দিলেই বরং ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো।

তবে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) এনডিটিভির এক টকশোতে অংশ নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান প্রবীণ এই ভারতীয় রাজনীতিক।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিনের ‘ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এই সম্পর্কের মৌলিক প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল; দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও এরপর কোনো বাংলাদেশি নেতা। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছি ১৯৭১ সাল থেকেই। নানা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আমরা সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি। অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সেই সম্পর্কের কোনো অবনতি হওয়া উচিত নয়।’

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তাতে ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

শশী থারুর বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন পরিচিত ব্যক্তি। আমি অবশ্যই তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, অন্য ভারতীয় নেতারাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে দেখেছেন। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। জামায়াতে ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই নয়, তিনি কিছুটা ওয়াশিংটনপন্থী।’

তবে এই অঞ্চলে ‘পাকিস্তান ও চীনের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা’ ভারতের উদ্বেগ সবসময়ই ছিল বলে মন্তব্য করে সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘আমি জানি, ভারত সরকার সরাসরি বলতে পারবে না। কিন্তু বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে আমি স্পষ্ট করেই বলি, বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় মারাত্মক সহিংসতার কিছু ঘটনায় পাকিস্তানি আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে। তাছাড়া, চীনও এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বা ইউনূসের প্রাথমিক বিবৃতিতে এমন কিছুর ইঙ্গিত নেই। ইউনূস শান্তির কথা বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তির স্থিতিশীলতা আহ্বান জানিয়েছেন।’

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এটা ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো। আমরা যদি আমাদের বন্ধুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতাম তাহলে কেউ আমাদের বন্ধু হতে চাইতো না। আমি মনে করি, বর্তমান সরকার ও বিরোধী দলের সকল ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক, তিনি ভারতের বন্ধু এবং ভারত তাঁর বন্ধু। যখন কোনো বন্ধু সমস্যায় পড়ে তখন আপনি তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে যেতে দুবার ভাববেন না। আপনি বন্ধুকে উদ্ধার করবেন, নিরাপত্তা দেবেন। ভারত ঠিক এটিই করেছে এবং এটি করার জন্য আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই। আমি মনে করি, ভারতীয় হিসেবে আমাদের অবশ্যই কিছু মূল্যবোধ আছে। ভারত সরকার শেখ হাসিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কাজ করেছে। কিন্তু তিনি কতক্ষণ ভারতে থাকতে চান তা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়াই ভালো। আপনি অতিথিকে ডেকে এনে কখন তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন না।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু মন্দির ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, এ ধরনের দুয়েকটা ঘটনা যে ঘটছে না, তা নয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও দেখতে হবে, দাঙ্গার মধ্যেই বাংলাদেশের মুসলমানেরা হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির রক্ষা করছেন। এমন খবর আমরা পড়ছি।’

এর আগে গত বুধবার (৭ আগস্ট) ভারতের সংসদ ভবন চত্বরে একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শশী থারুর ভারত সরকারকে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক দেশ, বাংলাদেশও। বাংলাদেশের জনগণের এই অধিকার থাকা উচিত যে তাদের ভবিষ্যৎ তাঁরাই নির্ধারণ করবেন। এ জন্য আমাদের উচিত তাদের পাশে থাকা।’

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মনোভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরা দরকার। তারপর ঠিক করা যাবে, ভারতের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে যা বললেন শশী থারুর

আপডেট টাইম : ০৭:২৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার সদস্য শশী থারুর। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাঁকে আশ্রয় দেওয়াই সমীচীন, আশ্রয় না দিলেই বরং ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো।

তবে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) এনডিটিভির এক টকশোতে অংশ নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান প্রবীণ এই ভারতীয় রাজনীতিক।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিনের ‘ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এই সম্পর্কের মৌলিক প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল; দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও এরপর কোনো বাংলাদেশি নেতা। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছি ১৯৭১ সাল থেকেই। নানা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আমরা সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি। অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সেই সম্পর্কের কোনো অবনতি হওয়া উচিত নয়।’

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তাতে ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

শশী থারুর বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন পরিচিত ব্যক্তি। আমি অবশ্যই তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, অন্য ভারতীয় নেতারাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে দেখেছেন। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। জামায়াতে ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই নয়, তিনি কিছুটা ওয়াশিংটনপন্থী।’

তবে এই অঞ্চলে ‘পাকিস্তান ও চীনের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা’ ভারতের উদ্বেগ সবসময়ই ছিল বলে মন্তব্য করে সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘আমি জানি, ভারত সরকার সরাসরি বলতে পারবে না। কিন্তু বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে আমি স্পষ্ট করেই বলি, বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় মারাত্মক সহিংসতার কিছু ঘটনায় পাকিস্তানি আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে। তাছাড়া, চীনও এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বা ইউনূসের প্রাথমিক বিবৃতিতে এমন কিছুর ইঙ্গিত নেই। ইউনূস শান্তির কথা বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তির স্থিতিশীলতা আহ্বান জানিয়েছেন।’

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এটা ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো। আমরা যদি আমাদের বন্ধুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতাম তাহলে কেউ আমাদের বন্ধু হতে চাইতো না। আমি মনে করি, বর্তমান সরকার ও বিরোধী দলের সকল ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক, তিনি ভারতের বন্ধু এবং ভারত তাঁর বন্ধু। যখন কোনো বন্ধু সমস্যায় পড়ে তখন আপনি তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে যেতে দুবার ভাববেন না। আপনি বন্ধুকে উদ্ধার করবেন, নিরাপত্তা দেবেন। ভারত ঠিক এটিই করেছে এবং এটি করার জন্য আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই। আমি মনে করি, ভারতীয় হিসেবে আমাদের অবশ্যই কিছু মূল্যবোধ আছে। ভারত সরকার শেখ হাসিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কাজ করেছে। কিন্তু তিনি কতক্ষণ ভারতে থাকতে চান তা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়াই ভালো। আপনি অতিথিকে ডেকে এনে কখন তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন না।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু মন্দির ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, এ ধরনের দুয়েকটা ঘটনা যে ঘটছে না, তা নয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও দেখতে হবে, দাঙ্গার মধ্যেই বাংলাদেশের মুসলমানেরা হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির রক্ষা করছেন। এমন খবর আমরা পড়ছি।’

এর আগে গত বুধবার (৭ আগস্ট) ভারতের সংসদ ভবন চত্বরে একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শশী থারুর ভারত সরকারকে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক দেশ, বাংলাদেশও। বাংলাদেশের জনগণের এই অধিকার থাকা উচিত যে তাদের ভবিষ্যৎ তাঁরাই নির্ধারণ করবেন। এ জন্য আমাদের উচিত তাদের পাশে থাকা।’

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মনোভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরা দরকার। তারপর ঠিক করা যাবে, ভারতের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত।’