ঢাকা ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপদে পাশে দাঁড়ানোর সওয়াব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৮ বার

মানুষ সামাজিক জীব। তাই সমাজবদ্ধ জীবনে কোনো মানুষের পক্ষে একাকী বসবাস করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন প্রয়োজনে একে অপরের সাহায্য ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। তাই বিপৎসংকুল পরিস্থিতিতে অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে।

কেননা, কোনো মানুষ যখন কোনো বিপদের সম্মুখীন হয়, সে তখন সবচেয়ে বেশি অসহায়ত্ব অনুভব করে। ওই সময় সে আন্তরিকভাবে অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করে। এমনই এক বিপৎসংকুল পরিস্থিতির নাম বন্দিত্ব। অনেক মানুষ কারণে, অকারণে, অন্যায়ভাবে বন্দী হয়। অন্যায়ভাবে জুলুমের শিকার হয়ে যারা বন্দী হয়, তাদের মুক্ত করা সামর্থ্যবান মানুষের জন্য ফরজে কেফায়া।

কারাবন্দীর মুক্তির ভাবনা এবং তাদের জন্য অর্থ ব্যয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মানবসংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। ইসলামের সৌন্দর্যের অনুপম দিক হলো, ইসলাম সব সময় অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের সাহায্য-সহযোগিতাকে ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাওয়াও, অসুস্থ ব্যক্তির শুশ্রূষা করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো।’ (বুখারি: ৫৬৪৯)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।’ (সুরা হুজরাত: ১০) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারী একে অপরের সহায়ক।’ (সুরা তওবা: ৭১) আরেকটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’

(বুখারি: ১৭৩২) মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অন্যের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’ (মুসলিম: ২৫৬৬)

আরেক হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ তাআলা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অন্য ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’ (মুসলিম: ২৩১৪)

লেখক: শিক্ষক ও মুহাদ্দিস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিপদে পাশে দাঁড়ানোর সওয়াব

আপডেট টাইম : ১১:২৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

মানুষ সামাজিক জীব। তাই সমাজবদ্ধ জীবনে কোনো মানুষের পক্ষে একাকী বসবাস করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন প্রয়োজনে একে অপরের সাহায্য ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। তাই বিপৎসংকুল পরিস্থিতিতে অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে।

কেননা, কোনো মানুষ যখন কোনো বিপদের সম্মুখীন হয়, সে তখন সবচেয়ে বেশি অসহায়ত্ব অনুভব করে। ওই সময় সে আন্তরিকভাবে অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করে। এমনই এক বিপৎসংকুল পরিস্থিতির নাম বন্দিত্ব। অনেক মানুষ কারণে, অকারণে, অন্যায়ভাবে বন্দী হয়। অন্যায়ভাবে জুলুমের শিকার হয়ে যারা বন্দী হয়, তাদের মুক্ত করা সামর্থ্যবান মানুষের জন্য ফরজে কেফায়া।

কারাবন্দীর মুক্তির ভাবনা এবং তাদের জন্য অর্থ ব্যয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মানবসংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। ইসলামের সৌন্দর্যের অনুপম দিক হলো, ইসলাম সব সময় অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের সাহায্য-সহযোগিতাকে ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাওয়াও, অসুস্থ ব্যক্তির শুশ্রূষা করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো।’ (বুখারি: ৫৬৪৯)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।’ (সুরা হুজরাত: ১০) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারী একে অপরের সহায়ক।’ (সুরা তওবা: ৭১) আরেকটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’

(বুখারি: ১৭৩২) মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অন্যের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’ (মুসলিম: ২৫৬৬)

আরেক হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ তাআলা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অন্য ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’ (মুসলিম: ২৩১৪)

লেখক: শিক্ষক ও মুহাদ্দিস