কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজবাড়ী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কালুখালী উপজেলায় ২০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণের মডেল ঘর নির্মাণ করা হয়। চলতি অর্থবছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের করমচাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক লুত্ফর রহমানের বাড়ির উঠানের একপাশে তৈরি করা হয়েছে মডেল ঘর। ঘরটিতে তিন স্তরে পেঁয়াজ রাখা হয়েছে।
কৃষক লুত্ফর রহমান বলেন, ‘আমি এ বছর ৬০০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছি। সব একসঙ্গে বিক্রি করা সম্ভব না। এ জন্য নিজের সাধ্যমতো সংরক্ষণ করি। কিন্তু এক-দেড় মাস পরই পেঁয়াজ পচে নষ্ট হতে থাকে। আমরা টিনের ঘরে মাচা করে রাখি। তাই গরমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এই মডেল ঘরও টিনের হলেও বিশেষভাবে তৈরি। ঘরটিতে আলো-বাতাস প্রবেশ করে। আবার ফ্যানের ব্যবস্থাও আছে। এ থেকে এখনই বোঝা যাচ্ছে এখানে পেঁয়াজ রাখলে পচবে না।’
একই গ্রামের কৃষক আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখতে লুত্ফর রহমানের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের প্রধান অর্থকরী ফসলই পেঁয়াজ। কিন্তু তা সংরক্ষণ করা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি। নিজেদের মতো করে রাখি। দেখা যায় কয়েক মাস পর ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে গেছে।’
আলিমুজ্জামান মডেল ঘর দেখে খুশি। জানালেন, আগামী বছর নিজেই এ রকম পেঁয়াজ সংরক্ষণের ঘর তৈরি করার কথা ভাবছেন তিনি। কালুখালী উপজেলায় খবর নিয়ে জেনেছেন, যাঁরা গত বছর এ রকম ঘরে পেঁয়াজ রেখেছিলেন তাঁদের কারোরটাই নষ্ট হয়নি। সাত থেকে আট মাস পেঁয়াজ ভালো ছিল।’ লুত্ফর রহমান ও আলিমুজ্জামানসহ গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, সরকার এই মডেল ঘর গ্রামে গ্রামে বেশি করে তৈরি করে দিলে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।
রাজবাড়ী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মো. রাজীব খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য এই ঘরগুলো দেখে চাষিরা নিজেরা এমন মডেল ঘর তৈরি করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করবে। বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি ঘরের মধ্যে ১৫টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেখানে কৃষকরা পেঁয়াজ তুলে রেখেছেন। বাকি ১৫টি ঘরের কাজ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হবে। আগামী অর্থবছরে আমরা পাংশা উপজেলায় ৩০টি ঘর নির্মাণ করব।’