দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মোঃ মহিববুর রহমান এমপি’র বাংলাদেশ সচিবালয়ের দপ্তরে আজ ব্রিটিশ হাইকমিশনার H.E. Sarah Cookeসহ তাঁর সাথে আগত প্রতিনিধিগণ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধিগণের মধ্যে হিউম্যানেটেরিয়ান এডভাইজার জনাব কৃষ্ণান নাইর, ব্রিটিশ হাই কমিশনারের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব মুসাউইর আহমেদ ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে ছিলেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব কামরুল হাসান এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব জনাব কে এম আব্দুল ওয়াদুদ, জনাব হাসান সারওয়ার, জনাব এবিএম শফিকুল হায়দার, জনাব মো. রবিউল ইসলাম মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর পিএস জনাব মো. আবুল কালাম তালুকদার ও এপিএস জনাব মো. আসিফ হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে রোহিংগা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার H.E. Sarah Cooke রোহিংগা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহিত উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ ইস্যু নিয়ে ব্রিটিশ সবসময়ই বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছে। রোহিংগাদের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিংগাদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী জনাব মহিববুর রহমান এমপি ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কথা শুনেন এবং তাদের এ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিংগা ইস্যুতে অত্যন্ত আন্তরিক হয়ে তাদের জন্য ভাসানটেকে ৩ একর খাস জমিতে রোহিংগাদের প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা নিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী জনাব মহিববুর রহমান আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিংগাদের অবস্থা ও মানবিকতার দিক বিবেচনা করেই তাদেরকে ভাসানটেকে প্রতিস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর দায়ভার সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাহ করা এখন একটা চ্যালেঞ্জিং ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিংগা ইস্যুর একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের সরকার অত্যন্ত আন্তরিক রয়েছে। তিনি বলেন, ১ মিলিয়ন রোহিংগা জনগোষ্ঠী দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমাদের ১৭ কোটি মানুষের সাথে তাদের লাইভলিহুড বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান গাজা ও বৈশ্বিক অন্যান্য ইস্যুর সাথে যেন রোহিংগা ইস্যুটি বিলীন হয়ে না যায়। আমি চাই, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিংগা ইস্যু এখন আলোচনার মুখ্য ইস্যু হয়ে দাঁড়াক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রতিরোধে ৫৫ হাজার ভলান্টিয়ার কাজ করছে। রোহিংগাদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে এসব ভলান্টিয়াররা রোহিংগাদের আশ্রয়স্থলগুলোতে স্বেচ্ছা শ্রম দিচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত আন্তরিক ও সাহায্য সহযোগিতা মনমানসিকতা প্রবণ। তিনি বলেন, দুর্যোগকালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ৫৫ হাজার ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি প্রায় ১০ মিলিয়ন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে থাকে।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাই কমিশনার H.E. Sarah Cooke বলেন, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশ সরকারকে আগের মতো সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার মিজ Sarah আরও বলেন, আমরা শুধু বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করতেই চাই না, আমরা চাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিংগা ইস্যু স্পট লাইট হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, গাজা, দঃ আফ্রিকা ও পৃথিবীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মতো রোহিংগা ইস্যুও একটা বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হউক। তিনি বলেন, রোহিংগা ইস্যু যাতে হারিয়ে না যায় এ জন্য এখানে বিশেষ ফোকাস বাড়াতে হবে। বিভিন্ন সভা, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে বাংলাদেশের রোহিংগা ইস্যুটি তুলে ধরতে হবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে বঙ্গবন্ধু স্মারক ক্রেস্ট উপহার দেন।