আবেদনে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক। তিনি ৩৪ বছর সাত মাস চাকরি করে পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান।
এদিকে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুদকে আবেদন করার পর ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের যে অভিযোগ এসেছে, এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে না দেখে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি দুদকে এসেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ গত শনিবার নিজের ফেসবুকে একটি বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি কিছু স্বীকার করেছেন, কিছু অস্বীকার করেছেন। এখন আইজিপির ৩৪ বছরের চাকরিজীবনে বেতন হয় প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক তিনি। বেনজীর আহমদের সম্পদের হিসাব আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানলাম। হিসাবের বাইরে কী আছে—তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও মেয়েদের আয়ের কোনো উপায় ছিল না। এর পরও ছয়টি কম্পানি থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন। গোপালগঞ্জে এক হাজার ৪০০ বিঘা জমি করেছেন। আর কিছুদিন সময় পেলে মনে হয় তিনি গোপালগঞ্জই কিনে ফেলতেন। বৈধ না অবৈধ তা পরের বিষয়। যে হারে তিনি সম্পদ বানিয়েছেন, আর কিছুদিন হলে হয়তো উনার জমির ওপর দিয়েই আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মাজারে যেতে হতো।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘এত সম্পদের রিপোর্ট আসার পর ভেবেছিলাম দুদক নিজেই হয়তো একটা উদ্যোগ নেবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এত বড় দুর্নীতির বিষয়ে কেউ কি কোনো কথা বলবে না! দুদক নিজে কাজ না করলে নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দুদককে একটু নড়েচড়ে বসার কথা বলা। আমরা বলছি না যে বেনজীর আহমেদ দুর্নীতি করেছেন। যে অভিযোগটি এসেছে তা বাংলাদেশের মানুষের সামনে, জাতির সামনে পরিষ্কার হোক। তিনি যেখানেই গেছেন, সেখানেই সম্পদ গড়েছেন। দুদক যদি এই আবেদন আমলে না নেয় তাহলে আমি হাইকোর্টে যাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিশন হচ্ছে—দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়তে হবে। আমি এমপি হিসেবে এই প্রথম দুদকে এসেছি। যেসব জায়গায় দুর্নীতির বিষয়ে অন্যরা কথা বলবে না, আমার সাহস-সামর্থ্য থাকলে আমি কথা বলব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংসদ আইন প্রণয়নের জায়গা। সুযোগ পেলে সংসদে আমি দুদকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘একজন অপরাধী নিজে তার দোষ স্বীকার করে না। দুদক বলুক যে বেনজীরের কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। কোনো দুর্নীতি করেননি। সব সম্পদ সাদা পানির মতো। দুদক চেয়ারম্যান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দুর্নীতিবাজরা এখন বুক ফুলিয়ে রাস্তায় হাঁটে। শুধু এ কথা বললেই উনার দায়িত্ব শেষ হবে না। দুর্নীতিবাজরা যেন বুক ফুলিয়ে হাঁটতে না পারে সে ব্যবস্থা উনাকে করতে হবে। আর যদি একেবারেই কোনো ব্যবস্থা না নেন, তাহলে আমাদের সবার দেশ ছাড়তে হবে।’
জানতে চাইলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। কমিশনের অনুমতি পেলে এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি